ঘোড়ামারায় ক্ষোভ জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েত এলাকায় ঘুরল কেন্দ্রীয় দল।
এ দিন সকাল ১০টায় গঙ্গাসাগর থেকে বেরিয়ে কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে লঞ্চে কেন্দ্রীয় দল ঘোড়ামারায় পৌঁছয়। সেখানে পঞ্চায়েত প্রধান-সহ জেলা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে দু’টি দলে ভাগ হয়ে কাজ শুরু হয়। একটি দল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তথ্য যাচাই করে। অন্য দলটি একশো দিনের কাজ, নদীবাঁধ ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখে।
ঘোড়ামারা বাজারের কাছে কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদের পথ আটকে আবাস-তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার কিছু মানুষ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত এলাকায় একাধিক ব্যক্তি আগে আবাস যোজনার টাকা পেয়ে বাড়ি তৈরি করেননি। অনেকের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম আছে। অথচ, যোগ্য অনেকের নাম তালিকায় জায়গা পায়নি।
চুনপুরি গ্রামেও আধিকারিকদের পথ আটকে বিভিন্ন অভিযোগ জানান এলাকার মানুষ। কেন্দ্রীয় দলের আধিকারিকেরা গ্রামবাসীদের অভিযোগ লিখিত আকারে দিতে বলেন। অনেকেই সমস্যার কথা লিখিত আকারে জমা দেন।
গ্রামবাসীদের কাছে একশো দিনের কাজ প্রকল্প নিয়ে জানতে চান দলের প্রতিনিধিরা। নিয়মিত কাজ মেলে কি না, মজুরি কত মেলে— এ সব বিষয়ে খোঁজ নেন। বৃক্ষরোপণের কাজ খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় দল। এক জায়গায় রাস্তার দু’দিকে যে পরিমাণ গাছ থাকার কথা, তা চোখে না পড়ায় প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। ব্লক ও পঞ্চায়েত আধিকারিকেরা জানান, কিছু গাছ নোনা জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ছাগলেও খেয়ে নিয়েছে কিছু গাছ।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ নূর ইসলাম বলেন, “চুনপুরি গ্রামে কেন্দ্রীয় দলকে আমাদের সমস্যার কথা জানাতে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের এক আধিকারিক বাধা দেন। রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। আমরা জোর করে আধিকারিকদের সমস্যার কথা লিখিত ও মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।”
পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জীব সাগর বলেন, “এলাকার কয়েক জন কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের বিভিন্ন অভিযোগ লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। কয়েক জন টাকা পেয়েও বাড়ি তৈরি করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। আমরা তাঁদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা বন্ধ করে দিয়েছি। সুপারি গাছ কম থাকা নিয়ে প্রশ্ন করেন আধিকারিকেরা। এ ছাড়া তেমন কোনও সমস্যা ওঁরা খুঁজে পাননি।”
বিরোধীদের অবশ্য দাবি, পঞ্চায়েতের লোকজন নিজেদের পছন্দমতো জায়গা ঘুরে দেখিয়েছেন কেন্দ্রীয় দলকে। যেখানে সমস্যা, সেখানে নিয়েই যাওয়া হয়নি। ফলে প্রকৃত তদন্ত হয়নি। এই অভিযোগ মানছে না শাসকদল।
এ দিন দুপুরে কাকদ্বীপের বাপুজি পঞ্চায়েতের বৈরাগীরচক গ্রামে দলের কর্মী বিশ্বনাথ হালদার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। এলাকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা আবাস যোজনার ঘর-সহ নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। বিশ্বনাথও রাহুলকে জানান, আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বাড়ি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুযোগ-সুবিধা পাননি। আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর নাম নেই।
সংবাদমাধ্যমকে রাহুল পরে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে যতই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ঘুরে বেড়াক, সত্যি রিপোর্ট জমা পড়বে কেন্দ্রে। আর এই বঞ্চিতদেরও তালিকা তৈরি হচ্ছে। কেউ বাদ যাবে না।’’
কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘যদি কেউ আবাস যোজনার ঘর না পেয়ে থাকেন, তা হলে তাঁরা পঞ্চায়েত বা আমাকে বলুন। তাঁরা যদি যোগ্য হয়ে থাকেন, তা হলে সকলেই বাড়ি তৈরির টাকা পাবেন। আমি পঞ্চায়েতে খোঁজ নিয়ে দেখছি, কী সমস্যা আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy