চলছে আলোচনা। ছবি তুলেছেন সুজিত দুয়ারি।
অশোকনগরে তেল প্রকল্পের কাজে যাতে কোনও বাধা না আসে, সে জন্য কিছু দিন ধরেই নানা কর্মসূচি নিয়েছে বামেরা। কৃষকদের প্রকল্পের গুরুত্ব বোঝাতে তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছেন সিপিএম নেতারা। বৃহস্পতিবারও এমন কর্মসূচি নেন পুরসভার প্রাক্তন কয়েকজন সিপিএম কাউন্সিলর। ‘অশোকনগরকে দ্বিতীয় সিঙ্গুর হতে দেব না’— এই ধরনের পোস্টার ছিল তাঁদের সঙ্গে।
বাম জমানার শেষ ভাগে এসে সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের একলাখি গাড়ি তৈরির প্রকল্প ভেস্তে গিয়েছিল জমি আন্দোলনের জেরে। সে সময়ে আন্দোলনের রাশ ছিল বিরোধী দল তৃণমূলের হাতে। এখন রাজ্যে ক্ষমতায় নেই বামেরা। কিন্তু রাজ্যে উন্নয়নের স্বার্থে ‘শিল্প-বান্ধব’ অবস্থান থেকে তাঁরা সরেননি বলেই বার্তা দিতে চাইছেন সিপিএম নেতারা।
অশোকনগরের বাইগাছি মৌজায় তেল ও গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে ওএনজিসি। বাণিজ্যিক ভাবে তা উত্তোলনের তোড়জোড় চলছে। গত ছ’বছর ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে ৪ একর জমিতে কাজ চলার পরে এ বার প্রয়োজন আরও ১২ একর জমি। বেশিরভাগই সরকারি খাসজমি। কিছু চাষবাস হয়। চাষিরা জানিয়েছেন, বাইগাছি মৌজা ছাড়াও ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ সংলগ্ন হিজলিয়া মৌজাতেও জমির মাপজোক ও চিহ্নিতকরণের কাজ করছেন।
দিন কয়েক আগে চাষিরা আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও কর্মসংস্থানের দাবি তুলে এলাকায় মিছিল করেন। পথ অবরোধ হয়। স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতাকে সেখানে দেখা গিয়েছিল। এরপরেই সিপিএম নেতৃত্ব চাষিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। বোঝানো হয়, পথ অবরোধ বা মিছিল করে নয়, ওএনজিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের দাবি আদায় করতে হবে। প্রকল্পের কাজে কোনও ভাবেই বাধা দেওয়া চলবে না।
পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিপিএমের প্রাক্তন কয়েকজন কাউন্সিলর এ দিন অশোকনগরের বাইগাছি এলাকায় যান। চাষি ও জমির ভোগদখলকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। বোঝান, আন্দোলন নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। ছাত্র-যুবকদের সঙ্গে নিয়ে এ দিন ওএনজিসির প্রকল্পের সামনে জমায়েত করেন সিপিএম নেতারা। চাষিদের বোঝানো হয়, এই প্রকল্প চালু হলে এলাকার উন্নয়ন হবে, কর্মসংস্থান হবে। তবে চাষিদের ক্ষতিপূরণ ও যোগ্যতা অনুযায়ী পরিবার-পিছু একজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে— এই দাবিও তোলা হয় প্রাক্তন কাউন্সিলরদের তরফে।
ওএনজিসির এই প্রোজেক্টের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন সিপিএম নেতারা। পরে সিপিএমের ওই প্রতিনিধি দলের তরফে জানানো হয়, ওএনজিসি কৃষকদের স্বার্থ এবং দাবি-দাওয়া নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসবে। দাবি-দাওয়ার বিষয়টিও কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। চাষিরা জানিয়েছেন, তাঁরাও চান এলাকায় প্রকল্প হোক। কিন্তু আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিয়ে ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করছেন না। এর ফলে তাঁরা বিভ্রান্ত। চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘‘আমরা চাই না অশোকনগর কোনও ভাবে দ্বিতীয় সিঙ্গুর হোক। চাষিরা ক্ষতিপূরণ পান এবং পরিবার-পিছু একজন কাজ পান সেটাও আমরা চাই। তবে তা আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy