Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sundarban Life

জঙ্গলের ভাগাভাগি নয়, সর্বত্রই দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে প্রায়ই। কিন্তু অভিযোগ, নিয়ম থাকলেও অনেককেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না।

গভীর জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়ার খোঁজে মৎস্যজীবীরা।

গভীর জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়ার খোঁজে মৎস্যজীবীরা। —নিজস্ব চিত্র।

সমীরণ দাস 
কুলতলি  শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪৩
Share: Save:

বাঘের হামলায় মৃত কৈখালির লখিন্দর নস্করের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বছর দু’য়েক আগে সুন্দরবনের সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল লখিন্দরের। জঙ্গলে বাঘ বা অন্য কোনও জন্তুর হামলায় মৃত্যুর হলে মৃতের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বন দফতরে আবেদন করেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি বলে অভিযোগ। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন লখিন্দরের স্ত্রী শান্তিবালা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি একটি রায়ে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, “আদালতের নির্দেশ মতোই কাজ করা হবে।’’

সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে প্রায়ই। কিন্তু অভিযোগ, নিয়ম থাকলেও অনেককেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবনের জঙ্গলে দু’টি ভাগ করা রয়েছে। একটি বাফার এরিয়া। সেখানে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে যেতে পারেন। অন্যটি কোর এরিয়া। সেখানে মৎস্যজীবীদের যাওয়ার অনুমতি নেই। বেআইনি ভাবে কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়ে মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না বলেই দাবি বন দফতরের।

এ দিনের রায়ে এই নিয়ম নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। কোর বা বাফার, যে কোনও জায়গায় মৃত্যু হলেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শান্তিবালার আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত বলেন, “দু’টি এরিয়ার মধ্যে কোনও বেড়া নেই। ফলে মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে ধরতে কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রেই বাফার এরিয়ায় আক্রমণ হয়। কিন্তু পরে দেহ টেনে কোর এলাকায় নিয়ে চলে যেতে পারে পশুরা। এ সব ক্ষেত্রে বন দফতর ক্ষতিপূরণ দেয় না। এ দিনের নির্দেশের পরে সেই সমস্যা মিটবে।”

বাঘের হানায় মৃতদের ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। সংগঠনের তরফে মিঠুন মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই কোর এরিয়ার দোহাই দিয়ে মৃতদের ক্ষতিপূরণ দিতে নানা টালবাহানা করে বন দফতর। সে দিক থেকে এই রায় যুগান্তকারী। বহু পরিবারের সুরাহা হবে।”

কিন্তু কোর এরিয়া ও বাফার এরিয়ার তফাত ঘুচে গেলে সমস্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন জঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। তাঁদের মতে, এই নির্দেশের পরে কোর এলাকায় মৎস্যজীবীরা বেশি যেতে শুরু করলে দুর্ঘটনাও বেশি হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, “আগামী দিনে এর (বিচারকের রায়) কী সমস্যা হতে পারে, তা আমরা আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করব। পাশাপাশি, এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকায় কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। তা-ও পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy