ফিরে যাচ্ছেন বাংলাদেশিরা - পেট্রোপোলে।
দেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। এই খবর পেয়ে এ দেশে থাকা বাংলাদেশিদের অনেকেই দ্রুত পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ফিরতে শুরু করেছেন। উদ্বেগ তাঁদের চোখে-মুখে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে সীমান্ত-বাণিজ্য ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে উত্তর ২৪ পরগনার দুই স্থলবন্দরের (পেট্রাপোল ও ঘোজাডাঙা) সংশ্লিষ্ট মহল।
ঢাকার শরিয়তপুরের বাসিন্দা অনিমেষ দাস গত শনিবার এ দেশে টুরিস্ট ভিসায় বেড়াতে এসেছিলেন। দেশের পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে শুক্তবার দেশে ফিরে যান। পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম ঢাকায় যানবাহন চলছে না। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। উদ্বেগ নিয়ে ফিরছি। জানি না বেনাপোল থেকে ঢাকায় যাওয়ার কোনও যানবাহন পাব কি না।’’
অনিমেষ সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, ‘‘মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যেরা সরকারি ভাতা পান। বাড়ি পাচ্ছেন। এরপরও কেন তাঁদের সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ থাকবে? আমি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আছি।’’ একই বক্তব্য ওই সীমান্ত হয়ে ফিরে যাওয়া বেশ কয়েক জন বাংলাদেশিরও।
বাংলাদেশে অশান্তির আঁচ পড়েছে পেট্রাপোলের পরিবহণ ব্যবস্থায়। পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে কলকাতা পর্যন্ত বেসরকারি বাস পরিষেবা আছে। মূলত বাংলাদেশিরাই এই সব বাসে যাতায়াত করেন। বাংলাদেশ থেকে লোকজনের আসা কমে যাওয়ায় বাসগুলির বেশিরভাগই সীমান্তে দাঁড়িয়ে ছিল শুক্রবার। যদিও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করা সরকারি একটি বাস এ দিন সকালে বাংলাদেশে গিয়েছে বলে পেট্রাপোল বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।
পেট্রাপোল দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এখান থেকেই স্থলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে বেশির ভাগ বাণিজ্য চলে। শুক্রবার অবশ্য সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানির স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন ল্যান্ড পোর্ট অব ইন্ডিয়া-র পেট্রাপোলের ম্যানেজার কমলেশ সাইনি। তবে, বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে।
পণ্য রফতানি -আমদানি কাজে যুক্ত সংগঠন ‘পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার পণ্য রফতানি হয়েছে ৩৩৯ ট্রাকে। আমদানি হয়েছে ২২৯ ট্রাকে। যা স্বাভাবিক অশান্তির কারণে বেনাপোল বন্দর থেকে রাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য যাচ্ছে এখন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে।’’
বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত হয়ে এ দিন বাংলাদেশ থেকে তেমন লোকজন আসেননি। তবে, এখানকার বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কান্তি দত্ত বলেন, ‘‘শুক্রবার আমাদের বাণিজ্য বন্ধ থাকে। তবে, যে ভাবে বাংলাদেশে গোলমাল হচ্ছে, তাতে আমদানি-রফতানি বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাণিজ্য বন্ধ হলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হবে দু’দিকেই ব্যবসায়ীদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy