চিনে কোভিড সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মাঝে সতর্ক ভারত সরকার। ফাইল ছবি।
বর্ষশেষে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশবাসীর উদ্দেশে কোভিড নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বড় শহরের হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের যে সঙ্কট নজরে পড়েছিল, তা এড়াতে আগে থেকেই রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর, বাইপ্যাপ-সহ নানা সরঞ্জাম মজুত রাখতে বলেছে কেন্দ্র। আজ, ২৭ ডিসেম্বর দেশের সব বড় হাসপাতালগুলিকে ‘মক ড্রিল’-এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরকারি হাসপাতালগুলিও প্রস্তুতি নিয়েছে।
বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ, ভেন্টিলেটর ও লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম ঠিকঠাক আছে কি না তা দেখা হবে। করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁর চিকিৎসার যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০টি শয্যা তৈরি আছে। প্রায় ছ’মাস আগে সেখানে করোনা রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। রোগী না থাকায় শয্যাগুলিতে অন্য রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে করোনা রোগীদের জন্য ৫০টি শয্যা ফের চালু করা হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার এমআর বাঙ্গুর, বিদ্যাসাগর ও বিজয়গড় হাসপাতালে ‘মক ড্রিল’ হবে। অক্সিজেন প্লান্ট, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, অক্সিজেন সরবরাহকারী যন্ত্রাংশ, ভেন্টিলেটর-সহ বিভিন্ন যন্ত্র খতিয়ে দেখা হবে। আপাতত বিজয়গড় হাসপাতালে ১১০ ও বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ৪০টি শয্যা কোভিডের জন্য প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। এ ছাড়াও, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মাস্ক পরা, জমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ নিচ্ছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তিসাধন মাইতি বলেন, ‘‘আমরা করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আগামী তিনদিন মক ড্রিল চলবে। যদিও এখনও আমাদের স্বাস্থ্য জেলায় নতুন ভ্যারিয়্যান্ট আক্রান্ত কোনও রোগী নেই।’’
করোনাকালে কোভিড রোগীর চিকিৎসার জন্য ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে একটি ভবনে একশো শয্যার চিকিৎসাকেন্দ্র চালু হয়েছিল। ডায়মন্ড হারবার মহকুমাশাসকের মাঠে স্টেডিয়ামে রোগীদের থাকার ব্যবস্থাও হয়েছিল। ফের করোনার দাপট বাড়লে হাসপাতালগুলির শয্যা ও যন্ত্র ঠিকঠাক আছে কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, তাদের কোভিড হাসপাতালে মাল্টিচ্যানেল ভেন্টিলেটর, মনিটর-সহ কিছু যন্ত্র রয়েছে। মঙ্গলবার সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হবে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে করোনা আক্রান্তদের জন্য ফের শয্যা প্রস্তুত রাখা নিয়ে আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। নতুন করে কোভিড ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। সেই ওয়ার্ডে আপাতত ২৮টি শয্যা চালু করা হয়েছে। এখন হাসপাতালে নিযুক্ত সমস্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, গ্রুপ ডি কর্মী সকলেরই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রত্যেকদিন কোভিড পরীক্ষা চলছে।
কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সহকারী সুপার অপর্ণা মিত্র বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ২৮ শয্যার ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া, আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলায় স্বাস্থ্য পরিস্থিতির জন্য আলাদা করে ২৪টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’’
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের আওতায় ক্যানিং স্টেডিয়ামে তৈরি হয়েছিল অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল। এখন তা বন্ধ। মঙ্গলবার মক ড্রিল নিয়ে এখানে তেমন তৎপরতা চোখে পড়ল না। ক্যানিংয়ের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুরজিৎ ভড় বলেন, ‘‘অস্থায়ী হাসপাতালের পরিকাঠামো সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে রোগী ভর্তি করার কোনও ব্যবস্থাই নেই। নতুন করে এখনও সেই পরিকাঠামো তৈরির নির্দেশ আসেনি সরকারি ভাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy