প্রতীকী ছবি।
মোটরবাইকের একটি শোরুম থেকে এক ক্রেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে নৈহাটিতে। পুলিশ সূত্রের খবর, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে অবস্থিত ওই শোরুমটি। বুধবার সেখানকার শৌচাগার থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় শেখ সাদ্দাম হোসেন (৩২) নামে ওই যুবকের দেহ। সাদ্দামের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দেখাতে চাইছেন শোরুম কর্তৃপক্ষ। তদন্তে নেমে পুলিশ শোরুমের মালিক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম রোহন সিংহ, কৃষ্ণেন্দু ঘোষ ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। সিল করে দেওয়া হয়েছে শোরুমটি। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দত্তপুকুরের ছোটজাগুলিয়ার বাসিন্দা সাদ্দাম একটি ঋণ দানকারী সংস্থায় কাজ করতেন। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় এই শোরুম কর্তৃপক্ষের। সাদ্দামের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্চ মাসে তিনি ওই শোরুমে একটি বাইক কেনার জন্য আসেন। লক্ষাধিক টাকা দামের যে বাইকটি পছন্দ হয়, সেটি কিস্তিতে কিনেও ফেলেন। কিস্তির টাকা বাবদ ৪৫ হাজার টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন সাদ্দাম। গত মঙ্গলবার শোরুম থেকে ফোন করে সাদ্দামকে জানানো হয়, চেকটি বাউন্স করেছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ফোন পেয়ে ওই দিন দুপুরে সাদ্দাম শোরুমে গিয়ে কিছুটা সময় চান টাকা জোগাড় করার জন্য। কিন্তু অভিযোগ, তাঁকে অতিরিক্ত সময় দিতে রাজি হননি শোরুম কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দু’পক্ষে তর্কাতর্কিও হয়। ওই যুবকের বাবা মহম্মদ গোলাম রসুল বলেন, ‘‘ছেলে মঙ্গলবার কথা বলার জন্য শোরুমে গিয়েছিল। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত ওর খোঁজ না পেয়ে ঘাবড়ে যাই। ওই দিন বিকেলে ছেলের মোবাইল থেকেই শোরুমের লোক ফোন করে বলল, বকেয়া ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা তখনই মেটাতে হবে। আমি এক মাস সময় চেয়েছিলাম। ওরা বলল, এক সেকেন্ডও সময় দেওয়া হবে না। তখনই কানে এল, ফোনের ও পারে ছেলে চিৎকার করে বলছে, ‘বাবা, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’। আমরা শোরুমে এসে শুনলাম, ছেলেকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। গিয়ে দেখি, সব শেষ।’’
যদিও মোটরবাইকের শোরুমটির মালিক, খড়দহের বাসিন্দা রোহন সিংহের দাবি, ‘‘কিস্তির অনেক টাকা বকেয়া থাকায় তা নিয়ে কথা বলতেই সাদ্দাম এসেছিলেন। তাঁকে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। বুধবার শৌচাগারের দরজা বহুক্ষণ বন্ধ দেখে কর্মীদের সন্দেহ হয়। তাঁরাই দরজা ভেঙে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করেন।’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত সাদ্দাম কোথায় ছিলেন? প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, ওই যুবক ছিলেন শোরুমেই। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন, রাতে তো শোরুম বন্ধ থাকে। সে ক্ষেত্রে সাদ্দাম কী ভাবে সেখানে থাকলেন? পুলিশ জানিয়েছে, শোরুমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (উত্তর) শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। সেই উত্তরগুলি মিললেই বলা যাবে, কী ঘটেছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy