Advertisement
E-Paper

এক মাস সময় চাইলেন সৌরভ

 আইন অনুযায়ী এত সময় পাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে প্রশাসন এবং আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ শুরু করেছে তৃণমূল।

সৌরভ সিংহ।

সৌরভ সিংহ।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৩
Share
Save

আইন অনুযায়ী তাঁর হাতে সময় ছিল ১৫ দিন। ঠিক ১৫ দিনের মাথায়, শুক্রবারই পুরপ্রধান অপসারণের বৈঠক ডাকলেন ভাটপাড়ার পুরপ্রধান সৌরভ সিংহ। সেই বৈঠকে তিনি এক মাস সময় চাইলেন। কিন্তু তাঁর এই ‘সময় কেনা’ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

আইন অনুযায়ী এত সময় পাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে প্রশাসন এবং আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ শুরু করেছে তৃণমূল। তবে বিজেপি শিবিরের একটি অংশের বক্তব্য, বিষয়টিকে তাঁরা আদালতে নিয়ে যেতে চায় বলেই এমন চিঠি কাউন্সিলরদের পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আদালতে গেলে, তাঁরা আরও সময় পাবে বলেই মনে করছে বিজেপি।

এই ঘটনায় ভাটপাড়া পুরসভা দখল যদিও কিছুটা ধাক্কা খেল, তবুও সৌরভের এই চিঠিকে নিজেদের নৈতিক জয় বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলছেন, “বিজেপির হাতে যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কাউন্সিলর নেই, তা তাঁদের সময় কেনাতেই পরিষ্কার। এমনকী, ওরা ঘোড়া কেনাবেচা করতে নেমেও যে সফল হয়নি তা ভাটপাড়ার মানুষ এ বার বুঝতে পারবে।”

তাঁকে অপসারণের নোটিস ধরানোর দিন সৌরভ অবশ্য বলেছিলেন ভোটাভুটির দিন ‘ম্যাজিক’ হবে। তাঁর কাকা, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ সব কিছু সামলে নেবেন। এমনকী, তৃণমূল শিবিরে তাঁদের ছ’জন কাউন্সিলর রয়েছেন। তাঁরাই খেলা ঘুরিয়ে দেবেন বলে দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি সৌরভ। অর্জুন অবশ্য এখন বলছেন, “ভোটাভুটিতে জয় আমাদেরই হবে।” তাই যদি হবে, তা হলে ভোটাভুটি না করে অযথা সময় কেনার চেষ্টা কেন করছেন তাঁরা, সেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

বিধায়ক পদের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ভাটপাড়ার পুরপ্রধানও ছিলেন অর্জুন। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির প্রার্থী হয়ে যান তিনি। তারপরেই বৈঠক ডেকে পুরপ্রধানের পদ থেকে অর্জুনকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। যদিও পুরপ্রধান নির্বাচন তখন করেনি তাঁরা। লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুরে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একের পর পুরসভা দখল করে বিজেপি। পুরপ্রধান নির্বাচনে ভোটাভুটিতে জিতে যান অর্জুনের ভাইপো সৌরভ।

এদিকে ধীরে ধীরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে পায়ের তলায় জমি ফিরে পায় তৃণমূল। হাতছাড়া চারটি পুরসভা ফের দখল করে নেয় তারা। ভাটপাড়াতেও বিজেপির ১২ জন কাউন্সিলর তৃণমূলে ফেরেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী একবার পুরপ্রধান নির্বাচন হয়ে গেলে ছ’মাস তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায় না। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সৌরভের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য তাঁদের প্রায় মাসখানেক অপেক্ষা করতে হয়। ডিসেম্বরের ৬ তারিখ সৌরভের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল।

নিয়ম অনুযায়ী, অনাস্থার নোটিস জমা পড়ার ১৫ দিনের মধ্যে ভোটাভুটির বৈঠক ডাকতে হয় পুরপ্রধানকে। তিনি বৈঠক না ডাকলে তার সাত দিনের মধ্যে উপ-পুরপ্রধান বৈঠক ডাকতে পারেন। শুক্রবারই অনাস্থার ১৫ দিন পূর্ণ হল। এ দিনই কাউন্সিলরদের কাছে বৈঠকের চিঠি পৌঁছয়। জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখ শ্যামনগরে পুরসভার শাখা অফিসে সেই ভোটাভুটি হওয়ার কথা।

প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ১৫ দিনের মাথায় বৈঠক ডাকলে ‘বিশেষ বৈঠকের’ ক্ষেত্রে তিন দিন সময় পাওয়া যায়। তার বেশি সময় নেওয়া হলে, কী করা হবে তার জন্য ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে তৃণমূল শিবিরে। উপ-পুরপ্রধান বৈঠক না ডাকলে যে কোনও পুরপ্রধান পারিষদ বা তাঁরা না ডাকলে যে কোনও তিন কাউন্সিলর আইন অনুযায়ী ওই বৈঠক ডাকতে পারেন। কিন্তু, তেমন কোনও পদক্ষেপ হলে বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। ফলে ভাটপাড়ার পুরসভার ভবিষ্যৎ কী হবে তা সময়ই বলবে।

Bhatapara TMC BJP Bhatpara Municipality

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}