Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Dipak Halder

বিজেপিতে যোগ দিতেই দীপকের নামে ‘গদ্দার বিধায়ক’ লেখা পোস্টার ডায়মন্ড হারবারে

সোমবার তৃণমূলে পদত্যাগপত্র পাঠান দীপক। তার পরই মঙ্গলবার বারুইপুরের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি।

দীপক হালদার। নিজস্ব চিত্র।

দীপক হালদার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৩৭
Share: Save:

‘গদ্দার বিধায়ক’। ডায়মন্ড হারবার জুড়ে ছেয়ে গিয়েছে এই পোস্টারে। যাঁর নামে এই পোস্টার পড়েছে, তিনি আর কেউ নন, সম্প্রতি বিজেপি-তে যোগ দেওয়া তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে ওই পোস্টারে।

সোমবার তৃণমূলে পদত্যাগপত্র পাঠান দীপক। তার পরই মঙ্গলবার বারুইপুরের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। বারুইপুরে বিজেপি-র যোগদান মেলার মঞ্চে দীপকের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মুকুল-শুভেন্দু-রাজীব। নতুন দলে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দীপকের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবার শহরে ‘গদ্দার বিধায়ক’ লেখা পোস্টারে ছেয়ে যায়। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের লোকজনই এই পোস্টার লাগিয়েছে। এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, আসল সত্যটা বুঝে এলাকার মানুষই পোস্টার লাগিয়েছেন। এর সঙ্গে দলের কোন যোগ নেই।

বিধায়ক দীপকের বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার জল্পনা তৈরি হতেই সমাজমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ করতে দেখা যায় যুব তৃণমূল কর্মীদের। গদ্দার, মীরজাফর, প্রতারক বলেও দীপককে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দীপক পদত্যাগপত্র পাঠানো পর সেই আক্রমণের ধার আরও বেড়েছে। তাঁকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ’, ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলেও কটাক্ষ করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

দীপক বিজেপি-তে যোগদানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডায়মন্ড হারবার শহরের স্টেশনবাজার থেকে জেটিঘাট পর্যন্ত জাতীয় সড়কের দু’ধারে 'গদ্দার বিধায়ক' লেখা প্রচুর পোস্টার পড়ে। খবরটি চাউর হতেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার নাগরিকবৃন্দের পক্ষ থেকে দেওয়া এই পোস্টারে দীপকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। জাহাজ ইউনিয়ন থেকে টাকা নেওয়া, টাকার বিনিময়ে কাজ পাইয়ে দেওয়া এবং স্বজনপোষণ-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে ওই পোস্টারে। পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘ডায়মন্ড হারবারের গণদেবতাকে আড়াল করে কত টাকার বিনিময়ে বিক্রি হলে? গদ্দার বিধায়ক জবাব দাও।’ এ ছাড়াও লেখা রয়েছে, ‘পাঁচ বছর গণদেবতার কাজ না করে, জাহাজ ইউনিয়নের থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করে ডায়মন্ড হারবারের মানুষের সঙ্গে কেন বেইমানি করলে? গদ্দার বিধায়ক জবাব দাও’।

তাঁর বিরুদ্ধে লেখা পোস্টার প্রসঙ্গে দীপক বলেন, “কে বা কারা এই কাজ করতে পারে তা আমার অজানা নয়। ডায়মন্ড হারবারের মানুষ সবটা দেখেছেন। কুৎসা করে লাভ নেই। গণদেবতারাই এর জবাব দেবেন। কে সৎ আর কে অসৎ মানুষই তার উত্তর দেবেন।”

অন্য দিকে, শহর জুড়ে এ ধরনের পোস্টার পড়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বিজেপি নেতারা। বিজেপি-র ডায়মন্ড হারবার টাউন মন্ডলের সভাপতি সুরজিৎ হালদার বলেন, “নাগরিকদের নাম করে তৃণমূলই এই পোস্টার লাগিয়েছে। দলে থাকার সময় দীপক বাবু ভাল ছিলেন আর দল ছাড়তেই তিনি খারাপ হয়ে গেলেন! যাঁরা মানুষের সঙ্গে প্রকৃত গদ্দারি করছে তাঁরাই বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দীপকদাকে নিয়েই আমরা বিজেপির পক্ষ থেকে এলাকার দুর্নীতিপরায়ণ এবং দুর্বৃত্ত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।”

তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডায়মন্ড হারবার-১ ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম অধিকারী। তিনি বলেন, “ওঁর (দীপক) মুখে প্রায়শই গণদেবতার কথা শোনা যেত। তাঁর কার্যকলাপে গণদেবতারাই প্রশ্ন তুলেছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোন যোগ নেই। পাঁচ বছর তিনি দলের সঙ্গে কোন যোগযোগ রাখেননি, বরং গদ্দারি করার ফন্দি আঁটছিলেন। সেটাই সফল করেছেন তিনি। এখন মানুষ প্রশ্ন করছে, উত্তর না দিতে পেরে ভয়ে তৃণমূলের নামে দোষারোপ করছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Diamond Harbour Dipak Halder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy