Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

অ্যাম্বুল্যান্সে ধর্ষণের চেষ্টা

রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সঙ্গে একজনের থেকে যাওয়ার দরকার ছিল। মহিলার দাদা থেকে যাবেন বলে ঠিক হয়।

ধৃত: চালক। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: চালক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মিনাখাঁ শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০১:২৮
Share: Save:

সুনসান রাস্তায় অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি। মাথার উপরে ঘুরছিল বাতি।

সচরাচর অ্যাম্বুল্যান্স একটু জোর গতিতেই চলে। এ ভাবে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কেন, প্রশ্ন জাগায় উঁকি মারেন টহলদার পুলিশ কর্মীরা।

ভিতরের দৃশ্য দেখে তাঁরা থ। দেখা যায়, অ্যাম্বুল্যান্সের পিছনে, যেখানে রোগীকে শোওয়ানো থাকে, সেখানেই বছর তিরিশের এক তরুণীর সঙ্গে জবরদস্তি করার চেষ্টা করছে এক যুবক। প্রবল ভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তরুণী। বাধা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় যুবককে। জানা গিয়েছে, বাবন হাজরা নামে ওই যুবকটি টাকি পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সটি চালান। রোগীকে নামিয়ে তাঁর এক আত্মীয়াকে নিয়ে সে ফিরছিল আরজিকর থেকে।

রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মিনাখাঁ থানার ভগিরুল্লা গ্রামে বাসন্তী হাইওয়েতে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ-পারহাসনাবাদ রাস্তায় অটো উল্টে জখম হয়েছিলেন টাকির থুবার বাসিন্দা এক অটো চালক। নিকট আত্মীয় এক মহিলা ও তাঁর দাদা টাকি পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে তাঁকে আরজিকরে নিয়ে যান। গাড়ি চালাচ্ছিল বছর চল্লিশের বাবন। তার বাড়ি টাকির বাগপাড়ায়।

রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সঙ্গে একজনের থেকে যাওয়ার দরকার ছিল। মহিলার দাদা থেকে যাবেন বলে ঠিক হয়। বাবনকে তিনি অনুরোধ করেন, ফেরার পথে বোনকে যেন বাড়িতে পৌঁছে দেন।

রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মহিলাকে নিয়ে টাকির দিকে রওনা দেয় বাবন। বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে ফেরার সময়ে মিনাখাঁ থানার আগে বগিরুল্লা গ্রামের কাছে বাথরুম করবে বলে গাড়ি থামায়। নির্জন এলাকায় আচমকাই পিছনের দরজা খুলে সে ওই মহিলার উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মহিলা জানিয়েছেন, ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে অনেক বার চিৎকার করেন তিনি। পাশ দিয়ে হুশ হুশ করে কিছু গাড়ি বেরিয়ে গেলেও কেউ দাঁড়ায়নি। দরজা-জানলা আঁটা অ্যাম্বুল্যান্সের বাইরে থেকে সম্ভবত কেউ টেরও পায়নি।

ইতিমধ্যে এলাকায় পৌঁছয় মিনাখাঁ থানার টহলদারি গাড়ি। রাত তখন প্রায় সাড়ে ১০টা হবে। এত রাতে ফাঁকা রাস্তার পাশে অ্যাম্বুল্যান্স কেন দাঁড়িয়ে, সন্দেহ হওয়ায় এগিয়ে যায় পুলিশ। তখনই চোখে পড়ে ঘটনা।

এ দিন আদালতের পথে বাবন অবশ্য দাবি করেছে, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মহিলা জানান, তাদের পাশের পাড়ায় থাকে বাবন। পরিচিত ছেলের বাবনের ভরসাতেই দাদা বাড়িতে ফেরত পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বিশ্বাস রাখেননি ওই যুবক।

টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবক পুরসভার স্থায়ী কর্মী। দোষ প্রমাণিত হলে আইন মেনে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অ্যাম্বুল্যান্সটি আটক করেছে পুলিশ। পুরপ্রধান জানান, এলাকায় অনেক মানুষের প্রয়োজনে আসে অ্যাম্বুল্যান্সটি। সেটি তাড়াতা়ড়ি পুলিশের হেফাজত থেকে ছাড়ানো যা কিনা, সেই চেষ্টা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Attempt to rape Ambulance Ambulance Driver
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE