Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Anupam Dutta Murder

Anupam Dutta Murder: জামিন খারিজের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যেতে চান অনুপমের স্ত্রী

এখনও রাজ্য প্রশাসনের উপরেই ভরসা রেখে ঘটনার শেষ দেখতে চাইছেন অনুপম দত্তের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত।

বাড়িতে মীনাক্ষী দত্ত। মঙ্গলবার।

বাড়িতে মীনাক্ষী দত্ত। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পানিহাটি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ০৮:২৭
Share: Save:

খুনের সাড়ে পাঁচ মাসের মাথাতেই জামিন পেল মূল অভিযুক্ত। পুলিশের তদন্তে গাফিলতি ও প্রশাসনের অসহযোগিতার জন্য এমন ঘটেছে বলে অভিযোগ পানিহাটির কাউন্সিলর, মৃত অনুপম দত্তের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্তের। যদিও এখনও রাজ্য প্রশাসনের উপরেই ভরসা রেখে ঘটনার শেষ দেখতে চাইছেন তিনি।

সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছে অনুপমকে খুনে মূল অভিযুক্ত বাপি ওরফে সঞ্জীব পণ্ডিত। সেই খবর শুনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মীনাক্ষী। মঙ্গলবার সাগর দত্ত হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে তিনি বলেন, ‘‘জামিন যখন হয়েছে তখন বুঝতে হবে, যে ধারাগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি আদালতে টেকেনি। যে অভিযুক্ত কাঠগড়াতেই উঠল না, পাঁচ মাসের মধ্যে তার জামিন হয় কী ভাবে?’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘অভিযুক্ত হাই কোর্টে যে জামিনের আবেদন করছে, সেটা পুলিশ বা প্রশাসন আমাদের জানায়নি! এটা প্রশাসনের গাফিলতি।’’ এ দিন হাই কোর্টে গিয়ে খোঁজ নেন অনুপমের দাদা নিরুপম। তিনি ও মীনাক্ষী জানান, জামিন খারিজের জন্য তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের চিন্তাভাবনা করছেন।

অন্য দিকে, ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর এ দিন বলেন, ‘‘জামিনের নির্দেশের কপি পাইনি। সেটি পেলে জামিন খারিজের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে।’’ কিন্তু পুলিশের যে তদন্ত-রিপোর্ট বা কেস ডায়েরিতে খামতির অভিযোগ উঠেছে, সেটি সর্বোচ্চ আদালতে কতটা কার্যকর হবে, সেই সংশয়ে অনুপমের অনুগামীরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশকর্তাদের দাবি, তদন্তে যা পাওয়া গিয়েছে, রিপোর্টে তা-ই উল্লেখ করা হয়েছে।

আতঙ্কিত মীনাক্ষীর কথায়, ‘‘এই কয়েক দিনের মধ্যে যদি খুনের মূল অভিযুক্ত জামিন পায়, তা হলে সাধারণ মানুষও নিরাপদ নন।’’ ছেলের মৃত্যুর পর থেকে শয্যাশায়ী মা মাধবীদেবী। ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় আগরপাড়া নর্থ স্টেশন রোডে খুন হন অনুপম। রাতেই গ্রেফতার হয় দুষ্কৃতী অমিত পণ্ডিত। পরদিন গ্রেফতার হয় বাপি। বিহার থেকে গ্রেফতার হয় আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহকারী ধনঞ্জয় কুমার। খুনের জন্য আগে যে দুষ্কৃতী জিয়ারুল মণ্ডলকে সুপারি দেওয়া হয়েছিল, তাকেও গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয় দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র।

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা পড়ে ব্যারাকপুর আদালতে। তারও পরে কেস ডায়েরি জমা পড়ে। সূত্রের খবর, ৪৫২ পাতার কেস ডায়েরিতে আগ্নেয়াস্ত্র বিশেষজ্ঞের মতামত রয়েছে। ধনঞ্জয় ও জিয়ারুলের সঙ্গে বাপির প্রত্যক্ষ যোগ ও খুনের দিন ঘটনাস্থলের কাছাকাছি তার উপস্থিতির প্রমাণও কেস ডায়েরিতে রয়েছে। ব্যারাকপুর আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সত্যব্রত দাস জানাচ্ছেন, ১৭ অগস্ট বিচার শুরুর দিন ছিল। বিচারক অনুপস্থিত থাকায় পরবর্তী দিন স্থির হয় ২৬ সেপ্টেম্বর। তিনি বলেন, ‘‘২২ অগস্ট আদালতে আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করলে আটকাই। এর পরে ওদের আইনজীবী হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন। আদালতের উচিত ছিল সামাজিক দিকটি ভেবে দেখা।’’

কী ভাবে শাসকদলের কাউন্সিলরকে খুনের মূল অভিযুক্ত জামিন পায়, প্রশ্ন এলাকাবাসীর। এ দিন চেয়ারম্যান পারিষদ তীর্থঙ্কর-ঘোষ সহ আরও দুই কাউন্সিলর হাসপাতালে মীনাক্ষীর সঙ্গে দেখা করেন। স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে দাবি, দ্রুত বিচার শুরু করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’’ অনুপমের মৃত্যুর পরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে জিতে কাউন্সিলর হন মীনাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পারিনি। আমি চাই, তাঁর এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করতে। অনুপম শুধু আমার স্বামীই নন, তাঁদের দলের কর্মীও ছিলেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anupam Dutta Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy