সাহায্য: খাবার-দাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে পরিবারটির হাতে। নিজস্ব চিত্র
এক যক্ষ্মা রোগীর পাশে দাঁড়ালেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা। রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই রোগীকে নিয়ম করে ওষুধ কিনে দেওয়া থেকে সমস্ত রকম সাহায্য করছেন তাঁরাই।
রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ প্রণবেশ হালদার বলেন, ‘‘ওই রোগীকে ওষুধ থেকে ভিটামিন খাবার তুলে দিচ্ছেন চালকেরাই। তবে হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরাও যথেষ্ট সাহায্য দিয়েছেন। দিনের পর দিন না খেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ওই মহিলা। অবস্থা একদমই ভাল নয়। তাঁর দু’টি সন্তান আছে। যেহেতু বাড়িতে আর কেউ নেই, তাঁর কিছু হয়ে গেলে দু'টো শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে সকলকেই ভাবতে হবে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় দুঃখেরপোল গ্রামে থাকেন বছর পঁয়ত্রিশের সরমা ভান্ডারি। তাঁর স্বামী বছর কয়েক আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকতেন। পাড়া প্রতিবেশীদের দেওয়া খাবার খেয়ে কোনও রকমে দিন কাটত। দিন কয়েক আগে ওই এলাকার এক আশাকর্মীর নজরে আসেন তিনি। ওই আশাকর্মী তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সঙ্গে চলে আসে বছর দশেকের ছেলে পাঁচুগোপাল ও মেয়ে পুজা। হাসপাতালে ভর্তি থাকা সরমাকে খাবার দিলেও ওই দুই শিশুকে খাবার দেওয়া হত না। হাসপাতাল থেকে দেওয়া একজনের খাবার তিনজনে মিলেই ভাগ করে খেতেন।
পাঁচু ও তার বোন পুজা মায়ের সঙ্গে থাকলেও প্রায়ই বাইরে বেরিয়ে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে। সেটাই নজরে আসে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের। দুই ভাই বোনের কাছে থেকেই তাদের মায়ের খোঁজ পান চালকেরা। পরে অ্যাম্বুল্যান্স চালকরাই অসুস্থ ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্ত বিষয় জানতে পারেন।
হাসপাতালে চিকিৎসদের সঙ্গে কথা বলে চালকেরা জানতে পারেন, দিনের পর দিন অভুক্ত থেকে ও অপুষ্টির কারণে ওই মহিলা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন দরকার ভাল ভিটামিনযুক্ত খাবার। জনা পঁচিশ অ্যাম্বুল্যান্স চালক মিলে ঠিক করেন, ওই মহিলা ও তাঁর দুই সন্তানকে খাবার দেবেন তাঁরা। প্রতিদিন নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে খাবার জোগান দিচ্ছেন তাঁরা। ওই মহিলাকে ফলও কিনে দেন।
এমনিতেই এখন অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বাজার ভাল নয়। রোগী অনেক কমে যাওয়ায় সারা দিন খালি হাতে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে। সংসার সামলাতেও হিমসিম অবস্থা। তার মধ্যেও সিদ্ধান্ত নেন, দু'জন শিশু ও মায়ের খাবার ও ওষুধের জোগানের দায়িত্ব নেবেন।
অ্যাম্বুল্যান্স চালক খোকন হালদার, বর্ণশিস হালদার বলেন, "ওই মহিলার অসময়ে পাশে দাড়াঁতে পেরে ভাল লাগছে। অসুবিধা হচ্ছে আমাদেরও। কারণ এখন আগের মত রোগীরা অ্যাম্বুল্যান্স এ যেতে চান না। ওই মহিলা ও তাঁর শিশু দু’টির খাবারের ব্যবস্থার জন্য সকলের কাছে আবেদনও করছি।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy