বিক্ষোভ: সুপারকে (চশমা পরা) ঘিরে রোগীর পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
গর্ভের শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বুধবার উত্তেজনা ছড়াল কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে। দুর্ব্যবহার, গাফিলতির অভিযোগ উঠল প্রসূতি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। তাঁকে অবিলম্বে সরানোর দাবিতে দুপুর থেকে হাসপাতাল সুপার ঘেরাও হয়েছিলেন। বিকেলে মহিলার স্বামী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
বসন্তকুমার (বিকে) রায় নামে যে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও নানা কারণে ক্ষোভ ছড়িয়েছে রোগী ও তাঁদের পরিজনের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত স্বাস্থ্যকর্তারাও। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘এর আগেও ওই চিকিৎসক-সহ কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। এটা বার বার সহ্য করা যায় না। অভিযোগ পেয়েছি। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, বি কে রায়কে দ্রুত কাকদ্বীপ হাসপাতাল থেকে সরানোর সুপারিশ আসে বুধবারই। দু’একদিনে তা কার্যকর হওয়ার কথা।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন হরিপুরের মাছ ব্যবসায়ী রমেন হালদারের স্ত্রী মৌমিতা। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ পেটে ব্যথা শুরু হয়। রমেনবাবুর দাবি, ‘‘রাতে ডাক্তারকে ডাকতে গেলে রোগীকে তিনতলা থেকে দোতলায় নিয়ে আসতে বলা হয়। ডাক্তারের কথা মতো তা-ও করি। তখন ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে বলেন। বুধবার দুপুরে তা করার পরেই ধরা পড়ে বাচ্চা পেটের মধ্যে মারা গিয়েছে।’’
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় অশান্তি। শ’খানেক লোক সুপারের ঘরে ঢুকে পড়ে। পুলিশ আসে। ভয়ে ওয়ার্ড ছেড়ে সাময়িক ভাবে সরে পড়েন অন্য চিকিৎসকেরা।
রমেনবাবু অভিযোগ, ‘‘শুধুমাত্র চিকিৎসকের গাফিলতির জন্যই বাচ্চাটা মারা গেল। বলতে গেলেই তিনি আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘রোগীর রক্তচাপ খুব বেশি ছিল। সেই অবস্থায় দু’টি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছিল। রক্তচাপ কমার অপেক্ষা করছিলাম আমরা। এই পরিস্থিতিতে অঘটন ঘটতেই পারে। কিন্তু তা রোগীপক্ষ বুঝতে চাইছিলেন না।’’
হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রসূতি বিভাগে ৯২টি শয্যা। কিন্তু গড়ে প্রায় ১৭০টি রোগী ভর্তি থাকে। ডাক্তারের সংখ্যা কম। ফলে অনেককে টানা ডিউটি করতে হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতেই বার বার দুর্ব্যবহার আর গাফিলতির অভিযোগ ঘিরে ঝামেলা চলছে কাকদ্বীপ হাসপাতালে।
হাসপাতাল সুপার রাজর্ষি দাস অবশ্য এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy