বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ।নিজস্ব চিত্র।
ত্রাণ-দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভের আঁচ এখনও নেভেনি আমপান বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে। সেই বিক্ষোভ নিয়ে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার বাধল ডায়মন্ড হারবারের নুরপর পঞ্চায়েতের রায়চক গ্রামে। বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। প্রতিরোধের মুখে পড়ে পিছু হটে পুলিশ। ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ দিন গ্রামের বাসিন্দারা পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছিল। গোলমালের সূত্রপাত তাতেই। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ, দলের নেতারা নিজের লোকদের নামে অনৈতিক ভাবে ক্ষতিপূরণ নেওয়ায় বিপদে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের নুরপুর পঞ্চায়েতের রায়চক ও চকরঘুনাথ দুই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য রিনা শিকারি। ওই এলাকার মল্লিকপাড়ার বাসিন্দারা মঙ্গলবার আমপানের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্তেরা রিনার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কেন তাঁরা টাকা পাননি, তা নিয়ে আলোচনা বচসার চেহারা নেয়। অভিযোগ, সে দিন শাসক দলের ওই সদস্যকে জুতোপেটা করার চেষ্টা করে কয়েকজন। পরে তৃণমূলের এক কর্মীর মধ্যস্থতায় ঠিক হয়েছিল, বৃহস্পতিবার দুই গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে আলোচনা সভায় সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে।
এ দিন দুপুরে গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা হাজির হন ওই মহিলা সদস্যের বাড়ির সামনে। কিন্ত ওই দুই গ্রামের তৃণমূলের বুথ সভাপতিরা হাজির না হওয়ায় সভা বাতিল হয়। এতেই গ্রামের বাসিন্দারা খেপে ওঠেন। বেলা ১২টা থেকে রিনার বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। দুই বুথ সভাপতিকে ঘটনাস্থলে হাজির করার দাবি ওঠে। তা নিয়েই শুরু হয় বচসা।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, আরও পুলিশ এসে লাঠি চালানোর চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারী মহিলারা পুলিশের উপরে চড়াও হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাতেই পিছু হটে পুলিশ। পরে বিক্ষোভকারীরাও চলে যায়। লাঠি চালানোর কথা মানেনি পুলিশ।
রিনা বলেন, “আমার কথায় দলের কেউ গুরুত্ব দেয় না। যা করেন বুথ সভাপতিরাই। আমাকে কিছু না জানিয়েই ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি করেছেন ওঁরা। গ্রামের বাসিন্দারা তো রাগবেনই। দলের নেতারা তিন-চারজনের নামে ক্ষতিপুরণের টাকা তুলেছেন। অথচ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা টাকা পাননি। মঙ্গলবার লোকজন আমাকে জুতো খুলে মারতে এসেছিল। এ দিনের আলোচনায় দুই বুথ সভাপতি না আসায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল।”
ওই নুরপুর পঞ্চায়েতে প্রধান ইয়াসিন গাজি জানান, বিরোধীরা চক্রান্ত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর বেশি কিছু না বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অরুময় গায়েন বলেন, “এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যের সমস্যার বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, তেমন পদক্ষেপ হবে।”
ডায়মন্ড হারবার ২ বিডিও নাজিরউদ্দিন সরকার বলেন, “নুরপুর পঞ্চায়েতে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মানুষ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। যে সব ক্ষতিগ্রস্তেরা টাকা পাননি, তাঁরা পঞ্চায়েত, থানা বা ব্লক অফিসে আবেদন করলেই ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy