প্রতীকী ছবি।
নেশামুক্তি কেন্দ্রে তিনি আর থাকতে পারছেন না বলে জানিয়ে ছিলেন পরিজনেদের। সেই মতো প্রৌঢ়কে তাঁর ভাই বলেছিলেন, ‘বৃহস্পতিবার ছুটি হয়ে গেলে বাড়ি নিয়ে আসব।’ কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার বিকেলে ওই কেন্দ্র থেকে খবর আসে, পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছেন প্রৌঢ়। পরিজনেরা হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে নিমতায়। এর পরেই ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রৌঢ়কে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে তাঁর পরিবার। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অজয় প্রসাদ বলেন, “লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’ পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল ওই কেন্দ্রের দুই কর্মী শুভঙ্কর মণ্ডল ও শুভাশিস চক্রবর্তী। তবে ঘটনার পর থেকে পলাতক কেন্দ্রের মালিক অপু বাগল।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিরাটির কলাবাগানের বাসিন্দা পার্থ রাহা (৪৯) মদের নেশায় আসক্ত ছিলেন। এক বছর আগে পরিজনেরা তাঁকে নিমতার পাইকপাড়ায় ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি করেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে পার্থবাবু লুকিয়ে তাঁর ভাই প্রণবকে ফোন করে জানান, তিনি আর ওই কেন্দ্রে থাকতে পারছেন না। তাঁকে যেন নিয়ে আসা হয়। তখন ভাইয়ের থেকে বৃহস্পতিবার ছুটির কথা শুনে পার্থবাবু বলেছিলেন, তা হলে এক বার অন্তত মঙ্গলবার বাড়ির লোকেরা এসে দেখা করে যাক।
ওই দিনই বিকেলে নেশামুক্তি কেন্দ্রের মালিক অপু ফোন করে প্রণবকে জানান, পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পাওয়ায় পার্থবাবুকে ঘোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে প্রণবেরা জানতে পারেন, তাঁর দাদার মৃত্যু হয়েছে। প্রণব বলেন, “দাদাকে সুস্থ করতে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম। ওরা তিন জন মিলে ওঁকে পিটিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করল। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।”
প্রৌঢ়ের পরিজনেরা আরও জানাচ্ছেন, ওই কেন্দ্রের অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, পার্থবাবুকে হাত-পা বেঁধে পেটানো হয়েছিল। কয়েক দিন ধরে খেতেও দেওয়া হয়নি। ওই ব্যক্তির মামা অশোক দত্ত বলেন, “পার্থ প্রায়ই ফোনে বলত, বাড়ি ফিরে অনেক কিছু জানাবে। তখন বুঝতে পারতাম না, ও কী বলতে চায়। হাসপাতালে গিয়ে দেখি, সারা শরীরে মারধরের চিহ্ন। চিকিৎসাধীন কাউকে এ ভাবে পিটিয়ে কেউ মেরে ফেলবে, ভাবতেও পারছি না।’’ প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, বাড়ি ফিরে পার্থবাবু অনেক কিছু বলে দিতে পারেন তা আশঙ্কা করেই তাঁর মুখ বন্ধ করতে অত্যাচার করেছিল ওই তিন অভিযুক্ত। সেই সময়ে মাথায় আঘাত পান প্রৌঢ়। তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy