জুলফিকারের (ইনসেটে) পরিবার। মণ্ডল। ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক।
বিদেশে মোটা বেতনের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মালয়েশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক যুবককে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পরিচিত দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই যুবককে শারীরিক ভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, ঠিক মতো খেতে দেওয়া হচ্ছে না, চিকিৎসাও করা হচ্ছে না বলে বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
বাগদা থানার মধুপুরের বাসিন্দা জুলফিকার আলি মণ্ডল কাজের সন্ধানে ছিলেন। গোপালনগরের পরিচিত দুই ব্যক্তি তাঁকে মালয়েশিয়ায় চাকরি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। পরিবারের দাবি, জমিজমা বন্ধক রেখে ৯ সেপ্টেম্বর তাঁরা ওই দুই ব্যক্তিকে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। গোপালনগর বাজারে ওই দু’জনের অফিস। সেখানে গিয়েই টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা।
কিছু দিন বাদে জুলফিকারকে মালেশিয়ায় পাঠানোও হয়। পরিবারের লোকজন তখন ছেলের চাকরির আনন্দে বিভোর। কিন্তু সেই পরিস্থিতি অচিরেই বদলে যায় উদ্বেগে।
জুলফিকার টেলিফোনে বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছেন, ‘ভাল চাকরি’ তো দূরের কথ, একটি সংস্থার কাছে তাঁকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভারী রড বহনের কাজ করতে হচ্ছে। ঠিক মতো খেতে দেওয়া হচ্ছে না। মাসে ৪০ হাজার টাকা বেতন পাওয়ার কথা থাকলেও হাতে কোনও টাকা-পয়সাই দেওয়া হচ্ছে না।
কিছু দিন আগে কাজ করতে গিয়ে জুলফিকার ছাদ থেকে পড়ে চোট পান। তাঁর মা জাহানারা বলেন, ‘‘ছেলে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বলেছে, ওকে আটকে রাখা হয়েছে। খেতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, হাতে-পায়ে চোট লাগলেও চিকিৎসা করানো হয়নি। ছেলে বলছে, যে ভাবে হোক ওকে যেন বাড়িতে ফিরিয়ে আনি।’’
জাহানারা জানান, তাঁরা গোপালনগর বাজারে ওই দুই ব্যক্তির অফিসে গিয়েছিলেন। সেখানে একজনের দেখা পান। ছেলেকে বাড়ি ফেরানোর অনুরোধ করলে জানানো হয়, সে জন্য আরও ৬২ হাজার টাকা লাগবে। সময় লাগবে মাস ছ’য়েক। জাহানারারা হাতে-পায়ে ধরতে বাকি রেখেছিলেন। থানা-পুলিশের কথাও তোলেন। তখন হুমকি শুনতে হয়েছে, ‘‘পুলিশ কিচ্ছু করতে পারবে না, চুপচাপ থাক।’’
রবিবার বাগদা থানায় দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জুলফিকারের মা। বাগদা থানা থেকে মামলাটি গোপালনগর থানায় পাঠিয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ছেলেটিকে ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy