Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
North 24 Parganas

ভিন্রাজ্যে যুবকের মৃত্যু, খুনের অভিযোগ মায়ের

দিন কয়েক আগে মাকে ফোন করে ছেলে বলেছিল, কাজের জায়গায় মারধর করা হচ্ছে। বাড়ি ফিরতে চায়। কিছু টাকাও পাঠাতে বলেছিল। বৃদ্ধা দরিদ্র মায়ের পক্ষে সেই টাকা পাঠানোর ক্ষমতা ছিল না। চিন্তায় ছিলেন।

 ক্ষোভ: অ্যাম্বুল্যান্স ঘিরে গ্রামবাসী।

ক্ষোভ: অ্যাম্বুল্যান্স ঘিরে গ্রামবাসী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা 
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২১ ০৭:৫৩
Share: Save:

দিন কয়েক আগে মাকে ফোন করে ছেলে বলেছিল, কাজের জায়গায় মারধর করা হচ্ছে। বাড়ি ফিরতে চায়। কিছু টাকাও পাঠাতে বলেছিল। বৃদ্ধা দরিদ্র মায়ের পক্ষে সেই টাকা পাঠানোর ক্ষমতা ছিল না। চিন্তায় ছিলেন।

রবিবার সকালে অ্যাম্বুল্যান্সে ভিন্‌রাজ্য থেকে সেই ছেলের দেহ পৌঁছল বাড়িতে। মায়ের দাবি, খুন করা হয়েছে ছেলেকে। বনগাঁর জিয়ালা গ্রামের এই ঘটনায় মৃত কেনারাম ভট্টাচার্যের (২০) দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে কেনারাম হায়দরাবাদে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে যান। তাঁর মা দুলালি বলেন, ‘‘আমি ছেলেকে অত দূরে যেতে দিতে চাইনি। কিন্তু এলাকারই এক লোক ছেলেকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিল। ছেলেকে ওখানে মারধর করা হচ্ছিল। আমাকে বলেছিল, বাড়ি ফিরে আসবে। কিন্তু এ ভাবে আসবে, বুঝতে পারিনি। ওকে গামছার ফাঁস দিয়ে মারা হয়েছে।’’ দুলালির দাবি, এলাকার যে ব্যক্তি ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিল, সে বলেছিল ২০ হাজার টাকা পাঠালে তবেই ওরা ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে দেবে।

রবিবার সকালে হায়দরাবাদ থেকে কেনারামের দেহ নিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স বাড়িতে আসে। গ্রামবাসীরা অ্যাম্বুল্যান্স আটকে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। হায়দরাবাদ থেকে আসা অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও তাঁর সহকারীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেনারামের মৃত্যুর পরে ঠিকাদার পুলিশকে জানাননি। ময়নাতদন্তও ওখানে হয়নি। দুলালি সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। দেহ অত দূর থেকে দু’দিন ধরে অ্যাম্বুল্যান্সে এসেছে। তাতে সামান্য পচন ধরেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রামের বাসিন্দা গণেশ দাসও দিন কয়েক আগে হায়দরাবাদে একই এলাকায় কাজে গিয়েছিলেন। তিনিও এসেছেন মৃতদেহের সঙ্গে সঙ্গে একই অ্যাম্বুল্যান্সে। গণেশের দাবি, তাঁকে ভয় দেখিয়ে তুলে দেওয়া হয় ওই গাড়িতে। গণেশের কথায়, ‘‘ওখানে গিয়ে জানতে পারি, ঠিকাদার ও যে ব্যক্তি কেনারামকে নিয়ে গিয়েছিল, তারা ওর উপরে নির্যাতন করে। ভারী মালপত্র বহন করানো হত। আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। কেনারাম বাড়ি ফিরে আসতে চেয়েছিল।’’

দুলালি ছেলের সঙ্গে শেষ কথা বলেছিলেন বৃহস্পতিবার। গণেশ বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে কেনারামকে ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখি। ঠিকাদার এবং ওই ব্যক্তি আমাকে ভয় দেখিয়ে দেহ অ্যাম্বুল্যান্সে করে পাঠিয়ে দেয় বাড়িতে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

North 24 Parganas Gaighata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy