Advertisement
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু মা-ছেলের, সন্দেহ আত্মহত্যা

ময়না-তদন্তের পরে শুক্রবার দেহ দু’টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা।

মর্মান্তিক: মা ও ছেলের মৃত্যুর খবরে তাঁদের বাড়ির সামনে ভিড় স্থানীয় মানুষের। শুক্রবার, বিশরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

মর্মান্তিক: মা ও ছেলের মৃত্যুর খবরে তাঁদের বাড়ির সামনে ভিড় স্থানীয় মানুষের। শুক্রবার, বিশরপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০২:২০
Share: Save:

স্টেশনে ঢুকছিল ট্রেন। বছর চারেকের ছেলের হাত ধরে রেললাইনের উপরে ছিলেন এক মহিলা। ট্রেন থামানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন চালক। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন দু’জনেই। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় মা-ছেলের। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বিশরপাড়া-কোদালিয়া স্টেশনে।

ময়না-তদন্তের পরে শুক্রবার দেহ দু’টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এমন ঘটনা বলে অভিযোগ তুলেছেন মৃতার পরিজনেরা।

রেলপুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম বর্ষা বিশ্বাস (৩৬) এবং অরণ্য বিশ্বাস। গুরুদাস কলেজে অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন বর্ষা। তাঁদের বাড়ি এয়ারপোর্ট থানার বিশরপাড়ার মধ্য নীলাচলে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুরুতর জখম হলেও বর্ষা ও অরণ্য দু’জনেই বেঁচে ছিলেন। কিন্তু বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান বর্ষা। অন্য দিকে, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পথে মৃত্যু হয় অরণ্যের। এ দিন ওই দুই হাসপাতালে দেহ দু’টির ময়না-তদন্ত হয়।

বিশরপাড়া-কোদালিয়া স্টেশনের এক দোকানি এ দিন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে প্ল্যাটফর্মে ওই মহিলার সঙ্গে শিশুটিকে কিছু ক্ষণ ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখেছিলেন তাঁরা। সে সময়ে স্টেশনে লোকজনের ভিড় থাকায় তাঁদের তেমন সন্দেহ হয়নি। এর পরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে যায় ওই ঘটনা।

বর্ষা ও তাঁর একমাত্র ছেলের এমন মৃত্যুতে এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। এ দিন বিকেলে প্রথমে বিশরপাড়ার বাড়িতে অরণ্য, তার কিছু ক্ষণ পরেই বারাসত হাসপাতাল থেকে পৌঁছয় বর্ষার দেহ। তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, ভিড় করেছেন আত্মীয়-প্রতিবেশীরা। বর্ষার দেহ আঁকড়ে পড়ে আছেন মা কল্যাণীদেবী। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটা সকাল আটটায় বাড়ি থেকে বেরোল। ভেবেছিলাম নাতিকে নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছে। এমনটা ঘটবে কখনও ভাবিনি।’’ দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে মৃতদেহ ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা।

বর্ষার স্বামী ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। এ দিন বর্ষার বাবা মানবেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্বামীর সঙ্গে অশান্তির কারণে নাতিকে নিয়ে আমাদের কাছেই ছিল মেয়ে। পি এইচডি-র পড়াশোনা চালাচ্ছিল। মাঝেমধ্যে শুনতাম, শ্বশুরবাড়িতে অশান্তি হচ্ছে। সেই অশান্তি সহ্য করতে না পেরে মেয়ে এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে।’’ তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষার পরিজনেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Woman Police Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy