Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
শিক্ষাঙ্গন/১
Hasnabad

Hasnabad: একটি ঘরেই চালাতে হয় তিনটি শ্রেণির পড়াশোনা

স্কুলের কিছুটা দূরের ডাসা নদীর বাঁধ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় বার বার ভেঙে যায়।

এই ঘরেই চলে তিনটি শ্রেণির ক্লাস।

এই ঘরেই চলে তিনটি শ্রেণির ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

নবেন্দু ঘোষ
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৫৫
Share: Save:

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মূল্যায়ণে প্রাথমিক শিক্ষায় বড় রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সেরার শিরোপা পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, পরিকাঠামো থেকে শিক্ষকের অভাব-সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রাথমিক স্কুলগুলি।

গোটা স্কুল ভবনে চারটি কক্ষ। তার মধ্যে দুটির হাল এমনই, তা ব্যবহারযোগ্য নয়। বাকি দুটি ঘরেই চলে পাঁচটি ক্লাস। অপেক্ষাকৃত ভাল ঘরটিতে ক্লাস চলার পাশপাশি শিক্ষকদের বসার ঘর, আলমারি, কাজপত্র রাখার কাজেও ব্যবহার হয়। এমনই হাল হাসনাবাদ ব্লকের পাটলি খানপুর পঞ্চায়েতের খলিসাখালি আদিবাসী এফপি স্কুলের।

এদিন স্কুলে গিয়ে দেখা গেল চারটি ক্লাস ঘরের মধ্যে দুটির ছাদ শোচনীয়, যে কোনও মূহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে। ঘরের দেওয়ালও বেহাল। জানলা, দরজা নেই। ঘরের মেঝে কাদায় ভরা। স্কুল সূত্রে জানা গেল, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৮০ সালে এই দুটি পাকা ঘর তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সংস্কারের অভাবে বহু বছর ধরেই ঘর দুটি ব্যবহার করা যায় না। বাকি দুটি ঘরের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বড় ঘরটি তুলনায় নতুন। সম্প্রতি সংস্কারও হয়েছে। এই একটি ঘরেই চলে তিনটি ক্লাস। শুধু তাই নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বসার জন্যও এই ঘরই ব্যবহার করা হয়। পাঠাগার ও খাতাপত্রের আলমারি রাখা-সহ বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রেও ভরসা এটিই। আর একটি ছোট ঘরে একসঙ্গে দুটি শ্রেণির ক্লাস চলে। তবে সেটিরও সংস্কার প্রয়োজন বলে জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুলের কিছুটা দূরের ডাসা নদীর বাঁধ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় বার বার ভেঙে যায়। ফলে স্কুল প্রায়ই জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এদিন দেখা গেল স্কুলের আলমারি ও খাতাপত্র নদীর নোনা জলে ডুবে থেকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দেওয়ালের নোনা লেগে গিয়েছে। প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে।

২০১৯ সালে এই বিদ্যালয়ে একটি খাওয়ার ঘর তৈরি করা হয়েছিল। তার টিনের চাল আমপানে উড়ে গিয়েছে। বর্তমানে ঘরটিতে চালের কোনও চিহ্ন নেই। রান্নাঘরের অবস্থাও বেহাল। জানলা দরজা ভেঙে গিয়েছে। দেওয়াল ও ছাদেরও সংস্কার প্রয়োজন। শুধু ভবন নয়, স্কুলে পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। স্কুলে যে জল মেলে তা লালচে। পানের যোগ্য নয়। এমনকী, চোখেমুখে দিলেও ত্বকে জ্বালা ধরায়। তাই পড়ুয়ারা বাড়ি থেকেই জল নিয়ে আসে। শৌচাগার থাকলেও জলের ব্যবস্থা নেই।

বর্তমানে স্কুলে দু’জন স্থায়ী শিক্ষিকা ও একজন পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছেন। পড়ুয়ার সংখ্যা ৭৫। স্কুল সূত্রে খবর, শিক্ষক, পড়ুয়া অনুপাত ঠিক থাকলেও পাঁচটা ক্লাসের জন্য পাঁচজন শিক্ষক না থাকায় ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা চৈতালি মজুমদার বলেন, ‘‘স্কুলের ঘরের যা অবস্থা তাতে সংস্কার নয়, নতুন ঘর করা প্রয়োজন। পানীয় জলের ব্যবস্থা দরকার।’’

খলিসাখালি গ্রামটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। এই স্কুলের তিন কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনও প্রাথমিক স্কুল নেই বলে জানালেন অভিভাবকেরা। হাসনাবাদ দক্ষিণ চক্রের স্কুল পরিদর্শক আহমেদ আলি আকঞ্জি বলেন, ‘‘এই স্কুলের দুটি ঘর নতুন করে করার কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে। এ ছাড়া পানীয় জলের সমস্যা ও অন্যান্য পরিকাঠামোগত সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hasnabad Primary School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy