Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ির ধাক্কা বাইকে, মৃত চার

পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলের যে-দুই আরোহী মারা গিয়েছেন, তাঁদের নাম মাধব দাস (৩৫) এবং চন্দ্রনাথ ঘোষ (৪৯)।

মৃত্যু হয়েছে দুই মোটরবাইক আরোহীর। নিজস্ব চিত্র।

মৃত্যু হয়েছে দুই মোটরবাইক আরোহীর। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৪
Share: Save:

ভাইফোঁটার দিনে বাসন্তী হাইওয়েতে আবার প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। চাকা ফেটে যাওয়ায় একটি পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা মারায় বাইকের দুই আরোহী এবং গাড়ির দুই আরোহীর মৃত্যু হয়। আহত হন মোট আট জন। তাঁদের মধ্যে গাড়ির চার জন আরোহীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ বাসন্তী হাইওয়েতে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে বানতলার কাছে।

পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলের যে-দুই আরোহী মারা গিয়েছেন, তাঁদের নাম মাধব দাস (৩৫) এবং চন্দ্রনাথ ঘোষ (৪৯)। তাঁরা ভাঙড়ের কাশীপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। গাড়ির যে-দুই আরোহী প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের নাম বাকিবুল্লা শেখ (২৭) এবং নাসিরুদ্দিন গাজি (৩১)। মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দু’লক্ষ এবং আহতদের মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, হাসনাবাদ থেকে আসা কাপড়ের গাঁটরিবোঝাই পণ্যবাহী গাড়িটির একটি চাকা ফেটে গিয়েছিল। চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে কলকাতার দিক থেকে ভাঙড়মুখী ওই মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। তার পরে রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা মেরে আটকে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী মফিজুল ঘরামি বলেন, ‘‘আমি আমার দোকানের দিকে যাচ্ছিলাম। দেখলাম, গাড়িটির ধাক্কায় মোটরসাইকেলটি প্রায় ১০ ফুট দূরে ছিটকে পড়ল। মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আরও কিছুটা দূরে ছিটকে পড়েই নিথর হয়ে যান। গাড়ির কয়েক জন যাত্রীও রাস্তায় পড়ে যান।’’

দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারাই গাড়ির সামনের আসন থেকে তিন জনকে বার করেন। পরে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে মাধব, চন্দ্রনাথ এবং বাকিবুল্লাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কিছু ক্ষণ পরে মারা যান নাসিরুদ্দিন। বাকি আট জনের চিকিৎসা চলছে ওই হাসপাতালেই। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি ও মোটরবাইকটিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আহত আট জনের অন্যতম সৈফুদ্দিন মোল্লা হাসপাতালে বলেন, ‘‘গাড়িতে বসে ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’’ তিনি জানান, তাঁরা সকাল ৬টায় হাসনাবাদের ভবানীপুর থেকে রওনা দিয়েছিলেন। তাঁদের সকলেরই বাড়ি ভবানীপুরের আশেপাশে। চালক আজিজুল শেখের পাশেই বসে ছিলেন গাড়ির মালিক মুস্তাফা শেখ। দুর্ঘটনায় আজিজুল গুরুতর আহত হয়েছেন। মুস্তাফার কোনও রকম চোট লাগেনি। তিনি বলেন, ‘‘গাড়ির পিছনের চাকায় কিছুটা একটা পড়েছিল। সেই জন্যই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়।’’

পুলিশ জানতে পেরেছে, হাসনাবাদ থেকে গাড়িটি মেটিয়াবুরুজ যাচ্ছিল। সেটিতে চালক-সহ অন্তত ১০ জন আরোহী ছিলেন। মূলত মেটিয়াবুরুজ থেকে জিন্সের কাপড় যায় ভবানীপুরে। গ্রামে নিজেদের কারখানায় প্যান্ট তৈরির পরে তা ফের মেটিয়াবুরুজে পাঠানো হয়। মুস্তাফা ও আজিজুল ছাড়া বাকি সকলেই কাপড়ের ব্যবসায় যুক্ত। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন তাঁরা এ ভাবে হাসনাবাদ ও মেটিয়াবুরুজের মধ্যে গাড়িতে যাতায়াত করেন। এ দিন গাড়ির গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারের বেশি ছিল না বলে তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা। তবে নিয়মমাফিক পরীক্ষার পরেই জানা যাবে, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটির গতিবেগ ঠিক কত ছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Street accident Motor Bike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy