ফুটফুটে: পৃর্থীজিৎ পাত্র। —নিজস্ব চিত্র।
বয়স সবে পাঁচ পেরিয়েছে। ছোট্ট পৃর্থীজিৎ লড়াই করছে জীবনের জন্য। অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ায় ভুগছে সে। চিকিৎসক চলছে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ‘অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) জরুরি। এ জন্য চাই ডোনার। তা এখনও জোগাড় হয়নি বলে জানালেন পৃর্থীজিতের মা গৌরী পাত্র। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার সীমান্ত-লাগায়ো রনঘাট পঞ্চায়েতের কুলিয়া এলাকায় বাড়ি গৌরীদের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৃর্থীজিতের বয়স যখন বছর দু’য়েক, তখন সে অসুস্থ হয়। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছিল। তারপর কলকাতার নানা হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ায় ভুগছে সে।
সেই থেকে ছেলেকে বাঁচানোর লড়াই করছেন মা গৌরী ও বাবা সুবীর। সুবীরের সাইকেল সারানোর দোকান। সামান্য আয়। ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ছুটতে হয় বলে দোকান মাসের বেশির ভাগ সময়ে বন্ধ রাখতে হয়। এ কারণে দিন দিন পসার কমেছে।
গৌরী বলেন, ‘‘বাড়িতে রান্না-খাওয়া করি না আমরা। সরকারি জায়গায় খাই। জামা-কাপড় কিনি না। টাকা-পয়সা যা ছিল, সবই ছেলের জন্য খরচ হয়ে গিয়েছে। ধারদেনা করে চলছে। ভিটেবাড়িটুকু ছাড়া আর কিছুই নেই।’’ মাঝে মধ্যে মেলায় দোকান দেন পাত্র দম্পতি।
গৌরী জানান, প্রতি পনেরো দিন অন্তর ছেলেকে রক্ত দিতে হয়। পরের কয়েক দিন ভাল থাকে। কিন্তু দিন কয়েক আগে দাঁতের মাড়ি, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। এনআরএসে ভর্তি করার পরে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন ছাড়া ছেলেকে বাঁচানোর উপায় নেই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বোন ম্যারো মানব শরীরে রক্ত কণিকা প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দাতার শরীর থেকে অস্থি মজ্জা সংগ্রহ করা হলে তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা হয় না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। অজ্ঞান করে এই প্রক্রিয়া করায় ব্যথা-বেদনাও টের পান না দাতা। পরেও খুব দ্রুত ব্যথা চলে যায়। গৌরী বলেন, ‘‘রক্তের গ্রুপ এবং আরও কিছু জিনিসে মিল হলে কোনও দাতা আমার ছেলেকে অস্থিমজ্জা দান করতে পারবেন। কত লোককে অনুরোধ করছি। এখনও সুরাহা হয়নি। ছেলেটাকে কী ভাবে বাঁচাবো জানি না।’’ বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের কাছেও আর্জি জানিয়েছেন গৌরীরা। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘আমরাও চেষ্টা করছি দাতা জোগাড় করার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy