Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
TET

টেট আন্দোলনে নতুন জটিলতা, ২০১৪ সালের প্রার্থীদের বিরোধিতায় পথে ২০১৭ সালের প্রার্থীরা

২০১৭ সালের ৩০০-৪০০ টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা বৃহস্পতিবার থেকে সল্টলেকেই আন্দোলনে বসেছেন। তাঁদের আঙুল এ বার ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের দিকে। নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে।

২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের দাবিকে ‘অন্যায্য’ বলছেন ২০১৭ সালের টেট আন্দোলনকারীরা।

২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের দাবিকে ‘অন্যায্য’ বলছেন ২০১৭ সালের টেট আন্দোলনকারীরা। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৪৯
Share: Save:

আন্দোলনে নতুন প্রতিপক্ষ! ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের পাল্টা আন্দোলনে বসলেন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা। বৃহস্পতিবার থেকে সল্টলেকের ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করলেন তাঁরা। দাবি, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের দাবি ‘অন্যায্য’। তাঁরা যদি এখন ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নেন, তা হলে আসনে কোপ পড়বে। সে ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা।

ঘটনাচক্রে, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা তার ৫০০ মিটার দূরে করুণাময়ীর সামনে আগে থেকেই আন্দোলনে বসে রয়েছেন। তাঁরা আমরণ অনশনও শুরু করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণেরা জানিয়েছেন, তাঁরাও আমরণ অনশন শুরু করবেন।

ফলে আন্দোলনকারীদের মধ্যেই নতুন জটিলতা দেখা দিয়েছে। দু’টি আলাদা আলাদা বছরের টেট উত্তীর্ণেরা একই সঙ্গে চাকরির দাবি জানাচ্ছেন। এক পক্ষ বলছেন, অন্য পক্ষ তাঁদের পেটে কোপ মেরে চাকরির জন্য আন্দোলন করছেন! ফলে এক দল আন্দোলনকারী অন্য এক দল আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে বলছেন।

অন্য দিকে, অনড় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আইন মেনেই হবে নিয়োগ। চাকরির ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ না নিলে চাকরি হবে না। পর্ষদের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। আর পর্ষদের সভাপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বসেছেন, তিনিও এর পর আমরণ অনশনে বসবেন! সব মিলিয়ে টেট আন্দোলনে জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে। সমাধানের কোনও রাস্তা দেখা যাচ্ছে না।

২০১৭ সালের ৩০০-৪০০ টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী বৃহস্পতিবার থেকে পৃথক আন্দোলনে বসেছেন। তাঁদের আঙুল ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণদের দিকে। এক দিকে অভিযোগ, দু’বার ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার পরেও চাকরি পাননি ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা। অথচ ২০১৭ সালে টেট উত্তীর্ণরা ছ’বছর পর এই প্রথম বার ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এ বার যদি ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণরা দাবি করেন, ইন্টারভিউ ছাড়াই তাঁদের চাকরি দেওয়া হোক, তা হলে বিপাকে পড়বেন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা। সে কারণেই ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের দাবিকে ‘অন্যায্য’ বলে আন্দোলনে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা।

নদিয়ার বাসিন্দা তথা ২০১৭ সালে টেট উত্তীর্ণ আরতি বিশ্বাস নামে এক আন্দোলনকারী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণেরা দু’বার চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এর পরেও তাঁরা বলছেন, তাঁরা বঞ্চিত! কারণ তাঁরা চাকরি পাননি। ছ’বছর পর আমাদের যখন ইন্টারভিউয়ের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, তখন তাঁরা দাবি করছেন, আগে তাঁদের চাকরি দিতে হবে! ওই আন্দোলনকারীদের চাকরির দাবি অন্যায্য। তাঁরাও সকলে চাকরির প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করুন। আমাদের বিরোধিতা যেন না করেন, এটাই কাম্য। পর্ষদের কাছেও আসন বাড়ানোর আর্জি জানাচ্ছি আমরা।’’

কেন ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের দাবিকে ‘অন্যায্য’ বলছেন, তা বিশদে বোঝাতে ২০১৭ সালের টেট আন্দোলনকারীরা ‘এনসিপিই’ (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন)-র নতুন নিয়মের কথা তুলে ধরেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী আগে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। তার পরেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা টেট-এ বসা যায়। তাঁরা সকলে সে ভাবেই টেট প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু ২০১৪ সালে সেই নিয়ম ছিল না। পরীক্ষার পরে প্রশিক্ষণ নিলেও চলত। কারণ তখন প্রশিক্ষণ ‘বাধ্যতামূলক’ ছিল না। নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পরে ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের পরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে পর্ষদ। এর পরেও তাঁরা ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না চাইলে আসনে কোপ পড়বে। ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের একাংশের হতাশার কারণ হল, ২০১৪ সালের আন্দোলনকারীরা যদি ইন্টারভিউতে বসেন, তা হলে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এই আসন ভাগাভাগিতে রাজি নন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা।

এ দিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতেই হবে! আইন মেনেই তাঁদের নিয়োগ করা হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়ে তাঁদের চাকরি দেওয়ার দাবি কোনও মতেই মানা হবে না। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও ওই বিষয়ে পর্ষদকেই সমর্থন জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

TET TET Protest TET Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy