প্রতীকী ছবি।
আমপানে বাড়ি ভাঙার পরে ক্ষতিপূরণের টাকা না-মেলার অভিযোগে দেগঙ্গার বিডিও অফিস ঘেরাও, রাস্তা অবরোধ ও গোলমালের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে আট জন গ্রামবাসী এবং ছ’জন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। মঙ্গলবার তাঁদের বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে ছ’জনের তিন দিনের পুলিশি হেফাজত এবং বাকিদের জেল হেফাজত হয়।
বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশকে ধাক্কা মারার অভিযোগে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাঁদের জেরা করে ঘটনার তদন্ত হবে।’’ রাজ্যের শাসক দল মনে করছে, ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের সময়ে যে ‘পরিকল্পনা’ করা হয়েছিল, দেগঙ্গার ক্ষেত্রেও তেমনই কিছু আঁতাঁত হয়েছে।
আমপানে আসল ক্ষতিগ্রস্তেরা টাকা পাননি। অন্য দিকে, বাড়িঘরের ক্ষতি না-হলেও পঞ্চায়েতের সদস্য, স্থানীয় নেতাদের ঘনিষ্ঠেরা টাকা পেয়েছেন, এই অভিযোগে সোমবার সকাল থেকে রাত দফায় দফায় বিডিও অফিস ঘেরাও করার পাশাপাশি বারাসত-টাকি রোড অবরোধ করেন হাজার দুয়েক মানুষ। কারা টাকা পেয়েছেন, সেই তালিকা প্রকাশের দাবিতে অফিস ভাঙচুর চলে। রাতে কিছু লোক অবরোধকারীদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে বলেও অভিযোগ।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় এর পরেই। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা ইট ছোড়েন। পুলিশ পৌঁছলে ধাক্কাধাক্কি হয়। জখম হন কয়েক জন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। মঙ্গলবার দেগঙ্গা থানার পুলিশ আধিকারিক সুমিত মণ্ডল জানান, মারমুখী আন্দোলন মানা হবে না।
আমপানে আসল ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জুড়েই চলছে বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সাহায্য চাইতে গেলে আমল দেননি স্থানীয় নেতা, পঞ্চায়েত বা প্রশাসন। নিজেদের মতো তালিকা করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তাঁরা। নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণ চেয়ে কেবল আবেদন করলেই হবে না। সত্যিই সেই বাড়িটি ভেঙেছে কি না, সরেজমিন তা দেখবে প্রশাসন। তাই প্রশ্ন উঠেছে, এই নিয়ম থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা আবেদন করে কী ভাবে টাকা পাচ্ছেন কেউ কেউ?
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, আমপানে উত্তর ২৪ পরগনার কিছু এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির কিছু না কিছু ক্ষতি হয়েছে। অল্প ক্ষতি সারিয়ে নেওয়া সম্ভব হলেও অনেকে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছেন। সব আবেদন দেখতে সময় লাগছে। করোনা পরিস্থিতির জন্যও সমস্যা হয়েছে। বহু মানুষ যে ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য পাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থাকবে বলেও জানান ওই কর্তা।
আমপানে উত্তর ২৪ পরগনায় ৫ লক্ষেরও বেশি বাড়ি আংশিক ও পুরো ভেঙেছে। তার মধ্যে ১ লক্ষ ২৭ হাজার মানুষকে বাড়ি ভাঙার টাকা এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাঁরা এখনও টাকা পাননি, তাঁদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে। অন্যায় ভাবে টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তারও তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy