Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

গণপিটুনিতে দোষী সাব্যস্ত ১২ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড

পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাক্ষীদের নিরাপদ রেখে অভিযুক্তেরা যে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, সেটা প্রমাণ করা কঠিন ছিল। সে দিক থেকে এই রায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’

অনিল বিশ্বাসের স্ত্রী ও ছেলে (বাঁ দিকে)। নিজের বাড়িতে ব্যঞ্জন বিশ্বাস (ডান দিকে)।  ছবি: প্রণব দেবনাথ

অনিল বিশ্বাসের স্ত্রী ও ছেলে (বাঁ দিকে)। নিজের বাড়িতে ব্যঞ্জন বিশ্বাস (ডান দিকে)। ছবি: প্রণব দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৪
Share: Save:

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন পাঁচ জন। দু’জন মারা যান। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারির ওই ঘটনায় সোমবার ১২ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল পূর্ব বর্ধমানের কালনা আদালত। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় দেওয়ার সময় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল মন্তব্য করেন, গত কয়েক বছরে গণপিটুনিতে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। এ রায় পুলিশের প্রতি আস্থা ফেরাবে।

পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাক্ষীদের নিরাপদ রেখে অভিযুক্তেরা যে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, সেটা প্রমাণ করা কঠিন ছিল। সে দিক থেকে এই রায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘটনার তদন্তকারী অফিসার হাসান পারভেজকে জেলা পুলিশের তরফে পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কালনার বারুইপাড়ার ওই মামলায় শুক্রবারই ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এ দিন আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয় তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ হালদার, গণেশ দাস, তাপস রায়, নাজির শেখ, বাবু সরকার, প্রীতম কর্মকার, রাজু পাত্র, কুন্তল দেবনাথ, মিনতি হালদার, সুমন মণ্ডল ও সাগর বাছারকে। সবাই বারুইপাড়ার বাসিন্দা। রায় শুনে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “গণপিটুনি এই মুহূর্তে জ্বলন্ত সমস্যা। এই রায় যুগান্তকারী।’’

২০১৭-র ওই দিন গাছে কীটনাশক ছড়ানোর জন্য নদিয়ার রানাঘাট থেকে কালনার বারুইপাড়ায় যান কয়েক জন। তাঁদের ছেলেধরা সন্দেহে শুরু হয় গণপিটুনি। মারা যান অনিল বিশ্বাস এবং নারায়ণ দাস নামে দু’জন। গুরুতর জখম হন মধুমঙ্গল দাস, ব্যঞ্জন বিশ্বাস ও মানিক সরকার। পরে মৃত অনিল বিশ্বাসের ছেলে রাজু বিশ্বাস কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই বছরের ১৪ এপ্রিল ২৬ জনের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে ছ’জন পলাতক। বাকিদের মধ্যে সাত জন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। এক জনের বিচার শুরু হয় জুভেনাইল আদালতে। বাকিদের কালনা আদালতে।

আরও পড়ুন:শহরে উল্টোল তীব্র গতির স্কুলবাস, আহত ২২

বিচারক এ দিন বেলা ২টো নাগাদ রায় দেন। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আশিস চৌধুরী বলেন, “গণপিটুনির ঘটনায় সাধারণত অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত পরস্পরের অপরিচিত হওয়ায় সাক্ষীর অভাবে অভিযুক্তেরা খালাস পায়। এ ক্ষেত্রে পুলিশের সক্রিয়তার কারণেই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া গিয়েছে।’’ গণপিটুনিতে নিহত নারায়ণ দাসের স্ত্রী তারামণি দাস বলেন, ‘‘২০১৭ থেকে এ দিনটার জন্য অপেক্ষা করছি।’’ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষের অন্যতম আইনজীবী অতনু মজুমদার।

অন্য বিষয়গুলি:

Lynching Life Term Death Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy