শ্যামপুরের কাছে রূপনারায়ণে চলছে তল্লাশি। ছবি: সুব্রত জানা
মাঝনদীতে চরে দাঁড়িয়েছিল ভুটভুটি। যাত্রীদের নিয়ে জোয়ারের অপেক্ষায় ছিলেন মাঝি। কিন্তু জোয়ারের ধাক্কায় ভুটভুটি উল্টে জলে পড়লেন যাত্রীরা।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের মায়াচর-দনিপুর ফেরি-রুটে রূপনারায়ণে ওই দুর্ঘটনায় আহত অন্তত ৩৮। কার্তিক সামন্ত নামে মায়াচরের এক বাসিন্দা রাত পর্যন্ত নিখোঁজ। দু’বছরের মেয়েকে নিয়ে প্রাণে বাঁচলেও জলে রেশন কার্ড, আধার কার্ড-সহ নথি খুইয়ে বিপাকে পুতুল জানা নামে এক যাত্রী।
পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, অনুমতি ছাড়াই ওই দুই ঘাটে বিপজ্জনক ভাবে পারাপার চলছিল। ভুটভুটির মালিক, দনিপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মণ পালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহণ কর্তৃপক্ষকে। পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ জানায়, কোলাঘাট, তমলুক, মহিষাদল ও হাওড়ার শ্যামপুর থানা উদ্ধারকাজ চালায়। বহু যাত্রীকে মৎস্যজীবীরাই বাঁচিয়েছেন। কার্তিক সামন্তের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মায়াচর থেকে দনিপুর যাওয়ার কথা ছিল ভুটভুটিটির। ভাটার জন্য সেটি চরে আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। যাত্রীরা তাতে উঠে অপেক্ষা করছিলেন। হাওড়ার শ্যামপুরের যাত্রী-সহ অন্তত ৪০ জন যাত্রী ছিলেন বলে স্থানীয়দের দাবি। সাড়ে ৯টা নাগাদ জোয়ার আসে। তাতেই দুর্ঘটনা। অভিজ্ঞ মাঝি লক্ষ্মণ কেন ভুটভুটিটি চরে আড়াআড়ি রেখেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জলে ভেসে যাত্রীরা হাওড়ার আমবেড়িয়া, কমলপুর ও শ্যামপুরের দিকে চলে যান। উদ্ধারে আসে উপকূলরক্ষী বাহিনীও।
আহত ৩৩ জনকে কমলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তিন জনকে স্থানান্তরিত করানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন শ্যামপুরের দেউলি গ্রামের পুতুল জানা। তিনি মহিষাদলে বাপেরবাড়ি যাচ্ছিলেন নিজের রেশন কার্ড আনতে। সঙ্গে ছিল দু’বছরের মেয়ে এবং পরিবারের সকলের রেশন কার্ড, আধার কার্ড ও ভোটার কার্ড। ভেবেছিলেন, নিজের রেশন কার্ড এবং পরিবারের সকলের যাবতীয় কার্ডের ফোটোকপি বাপেরবাড়ির কাছ থেকেই করিয়ে ফিরবেন। পুতুলের কথায়, ‘‘চার দিকে এনআরসি নিয়ে শুনছি। শুনছি নতুন রেশন কার্ডও করাতে হবে। ভেবেছিলাম এ বার রেশন কার্ডে নিজের পদবি সংশোধনের কাজটা করে নেব। তাই বাপের বাড়ি যাচ্ছিলাম। জোয়ারের ধাক্কায় নৌকাটা তিন-চারটে পাক খেয়ে উল্টে গেল। মেয়েকে জাপটে ধরে ভাসছিলাম। কিন্তু নথি ধরে রাখতে পারলাম না। জানি না, এর পরে কী হবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy