Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

হাইকম্যান্ডের দূতের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ অধীর

রাজ্যে একেই অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে কংগ্রেস। তার ওপর প্রদেশ কংগ্রেসে নতুন করে গোষ্ঠী রাজনীতি শুরু হয়েছে। এই ব্যাপারে হাইকম্যান্ডের পাঠানো দূতের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাহুল গাঁধীর নির্দেশে গতকাল সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সি পি জোশী দিল্লিতে প্রদেশ নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৪ ০৩:৫০
Share: Save:

রাজ্যে একেই অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে কংগ্রেস। তার ওপর প্রদেশ কংগ্রেসে নতুন করে গোষ্ঠী রাজনীতি শুরু হয়েছে। এই ব্যাপারে হাইকম্যান্ডের পাঠানো দূতের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

রাহুল গাঁধীর নির্দেশে গতকাল সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সি পি জোশী দিল্লিতে প্রদেশ নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। বৈঠকেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সচিব শাকিল আহমেদ খান বিক্ষুব্ধ রাজনীতিতে ইন্ধন যোগাচ্ছেন। তাঁকে আর পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সূত্রের খবর, বৈঠকে অধীর জানান, প্রদেশ সভাপতি পদের জন্য লোভ তাঁর নেই। হাইকম্যান্ড চাইলে তাঁকে অব্যাহতি দিতে পারেন। কিন্তু তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিলে বিক্ষুব্ধ রাজনীতি বা গোষ্ঠী রাজনীতিকে কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবেন না।

লোকসভা ভোটের পর সম্প্রতি প্রদেশ কংগ্রেসের দফতরে বৈঠক ডেকেছিলেন অধীর। প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে ধুন্ধুমার ঘটে। প্রচারের জন্য হাইকম্যান্ডের পাঠানো তহবিল তছরূপ নিয়েও অধীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন রাজ্য কংগ্রেসের কিছু নেতা। আবার প্রদেশ নেতৃত্বের অনেকে সেই বৈঠকে না থেকেও প্রকারান্তরে তাঁদের ক্ষোভ জানান। যদিও মুখে তাঁরা বলেন, বৈঠকের জন্য চিঠি তাঁরা পাননি। বৈঠকের পরেই রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন অধীর। রাহুলকে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে কারও যদি অভিযোগ থাকে তো হাইকম্যান্ডের সামনে এসে জানান। এ জন্য হাইকম্যান্ডের তরফে বৈঠক ডাকা হোক। তার পরেই রাহুলের নির্দেশে গতকাল বৈঠক ডেকেছিলেন জোশী।

গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে যদিও গত কালের বৈঠক নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের কোনও নেতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। সূত্রের খবর, গত কালের বৈঠকও উত্তপ্ত ছিল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কাজের পদ্ধতি নিয়ে একাধিক নেতা-নেত্রী প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের অনুযোগ, দলের কাজ নিয়ে বিভিন্ন মত থাকতেই পারে। কিন্তু প্রদেশ সভাপতিকে সেটা শোনার ধৈর্য্যও রাখতে হবে। তা ছাড়া ভোটের পর দুম করে প্রদেশ ও জেলা স্তরের সব কমিটি ভাঙার ব্যাপারে অধীরের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

এমনকী এই অভিযোগও করা হয় যে, উত্তরবঙ্গে সনিয়া গাঁধীর সভার জন্য হাইকম্যান্ডের পাঠানো টাকাও ঠিক মতো খরচ করেননি অধীর। জোশীর সামনেই সব অভিযোগ খন্ডন করেন অধীর। তিনি জানান, এ জন্য আলাদা করে হাইকম্যান্ড টাকা দেয়নি। তার পরেই শাকিলের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন অধীর। আপত্তি করেন জোশী। তাঁর মতে, হাইকম্যান্ডের প্রতিনিধি তো রাজ্যে যাবেনই। তা ছাড়া রাহুল তাঁকে বেছেছেন। কিন্তু অধীরের বক্তব্য, যেই তাঁকে মনোনীত করুন, বিক্ষুব্ধ রাজনীতিতে ইন্ধন দেওয়ার দায়িত্ব নিশ্চয়ই দেওয়া হয়নি।

মজার বিষয়, হাইকম্যান্ডের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্বতন সাধারণ সম্পাদকরা রাজ্যে গিয়ে মাঝে মধ্যেই প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। কিন্তু জোশী দায়িত্ব পাওয়ার পর দু’-তিন দিনের বেশি পশ্চিমবঙ্গে যাননি। অধীরের দাবির প্রেক্ষিতে কাল জোশীও জানান, তিনি এ বার ঘন ঘন রাজ্যে যাবেন।

বৈঠকে অধীর জানান, তিনি শীঘ্রই জেলায় জেলায় সফর করবেন। জেলা ও ব্লক স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার পরেই জেলা ও প্রদেশ স্তরে নতুন কমিটি গড়া হবে। যদিও এ ক্ষেত্রেও অধীর হাইকম্যান্ডকে জানান, গোষ্ঠী রাজনীতি তিনি কখনও করেননি। তাই অযোগ্যদের জেলা বা রাজ্য স্তরে দায়িত্ব দেবেন না। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অধীরবাবুকে আরও সময় দেওয়া উচিত। তবে ওঁকেও সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলতে হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

highcommand congress adhir chowdhury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy