সারদা গোষ্ঠীর এক মহিলা কর্মীর দেওয়া পেনড্রাইভে সংস্থার আয় ও ব্যয়ের অনেক তথ্য মেলায় বুধবার কিছুটা নিশ্চিন্ত দেখাচ্ছিল ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-কে। পরের দিনই জানা গেল, যত গোলমাল সফটওয়্যারেই। তাতে এমন রহস্য লুকিয়ে আছে, যা ভেদ করতে পারলে সারদার উধাও হওয়া টাকার বড় অংশের সন্ধান মিলতে পারে।
সারদার আর্থিক লেনদেনের জন্য যে-সংস্থা বিশেষ সফটওয়্যার পরিষেবা দিত, বৃহস্পতিবার তাদের দুই প্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ধারণা হয়েছে ইডি-র তদন্তকারীদের। সিবিআইয়ের কাছে পাঠানো চিঠিতে ওই সফটওয়্যার নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন নিজেই। ইডি সূত্রের খবর, সারদার সেই বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছিলেন সারদা-প্রধান।
এ দিন সেই বিশেষ সফটওয়্যারের পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার দুই প্রতিনিধির মুখোমুখি বসেন এক দল তদন্তকারী। ইডি-র খবর, দুই প্রতিনিধি জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে জানান, তাঁরা সারদার সঙ্গে চুক্তি অনুসারে ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত কাজ করেন। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে তার পরবর্তী সময়ে কোন সফটওয়্যারে সারদা গোষ্ঠীর লেনদেনের কাজ হল? তা হলে কি কোনও নকল সফটওয়্যার তৈরি করে আর্থিক লেনদেনের কাজ হত?
ইডি-র এক তদন্তকারী জানান, এই প্রশ্নের জবাবের জন্য ২০১২ সাল থেকে সারদার আর্থিক লেনদেনের হিসেব ঠিক কী ভাবে রাখা হত, সেই বিষয়ে ফের কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।
রহস্য শুধু সফটওয়্যারে নয়, সারদার জমিজমা সংক্রান্ত একাধিক চুক্তির হিসেবেও প্রচুর অসঙ্গতি পেয়েছেন তদন্তকারীরা। যেমন, বুধবার সারদার ব্যাঙ্কিং ডেস্কের শীর্ষ কর্ত্রী আমরিন আরা যে-সব তথ্য দিয়েছেন, সেই অনুসারে একটি ফাইলে ওই লগ্নি সংস্থার জমিজমা সংক্রান্ত সমস্ত আর্থিক লেনদেনের হিসেব ছিল। সেই তথ্য বিধাননগর পুলিশকেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা জানান, এখনও পর্যন্ত বিধাননগর পুলিশের কাছ থেকে তেমন কোনও তথ্য তাঁরা পাননি। সারদা কেলেঙ্কারি ধরা পড়ার পরে ইডি বেশ কয়েক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আমরিনকে। কিন্তু তখন তাঁর কাছ থেকে সারদার আয়-ব্যয়ের হিসেব ও তথ্য তেমন পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে ফের ডেকে পাঠানো হয়। বিধাননগর পুলিশের কাছ থেকে জমি নিয়ে সারদার আর্থিক লেনদেনের তেমন কোনও তথ্য না-পাওয়ায় ওই মহিলা কর্মীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের আশায় ছিল ইডি। ওই তদন্ত সংস্থা সূত্রের খবর, সারদার হয়ে যত জমি ও অন্যান্য সম্পত্তি কেনা হয়েছে, আমরিনের দেওয়া পেনড্রাইভে তার আর্থিক বিবরণ পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, আমরিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জমি সংক্রান্ত অনেক অজানা চুক্তির আর্থিক হিসেব মিলেছে ঠিকই। কিন্তু বাকি তথ্য হাতে না-এলে জমি সংক্রান্ত চুক্তিগুলির আর্থিক হিসেবের মোট পরিমাণ জানা যাবে না। সে-ক্ষেত্রে সুদীপ্ত-ঘনিষ্ঠ অন্য এক মহিলা কর্মীর নাম উঠে এসেছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তদন্তকারীরা।
সারদার সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য পেতে ওই সংস্থার দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক কর্মীকে আজ, শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy