দুর্নীতির পর সন্ত্রাস। ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছেন, আজ, মঙ্গলবার বর্ধমানের জনসভায় সেটিই প্রচারের মূল হাতিয়ার করতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
আজ অমিতের সভায় বিরাট কোনও চমক থাকবে বলে জানিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। সদ্য মন্ত্রিত্ব, বিধায়ক পদ এবং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে সপুত্র যোগ দিয়েছেন মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। তৃণমূল থেকে যোগদানের জন্য আরও অনেক বড় মাথা পা বাড়িয়ে বলেও মন্তব্য করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষিতে সিদ্ধার্থনাথের বক্তব্য থেকে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, রাজ্যের শাসক দল থেকে বিরাট কোনও ব্যক্তিত্ব আজ অমিতের সভায় হাজির হয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন। কিন্তু তৃণমূল-সন্ত্রাস যোগ নিয়ে রাজনৈতিক প্রচারকে উচ্চ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই আজ অমিতের সভায় অন্য দল থেকে কাউকে বিজেপিতে যোগদান করানো হবে না। কারণ, তাতে অমিতের বক্তৃতার বিষয়ের থেকে সেই যোগদানই বেশি গুরুত্ব পেয়ে যেতে পারে। সোমবার অমিতের সঙ্গে বৈঠকের পরে সিদ্ধার্থনাথ বলেন, “আগে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ওই সভায় অন্য দল থেকে আরও যোগদান করানো হবে। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদলেছি। কারণ তাতে অমিত শাহের সভার থেকেও যোগদান বড় হয়ে যাবে।” তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে যেতে চান, তাঁদের পরে যোগদান করানো হবে বলেও সিদ্ধার্থনাথ জানান। একই কথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতাও এ দিন দিল্লিতে জানান, তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার হলেই সারদা দুর্নীতি থেকে মমতার প্রশাসনিক ব্যর্থতা, অরাজকতাসবই অনায়াসে চলে আসে। কিন্তু অমিতের সভার জন্য বর্ধমানকে বেছে নেওয়ার পিছনে মূল কারণ হল, ওই জেলারই খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর তৃণমূলের সঙ্গে জামাতের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে ওই সভায় অমিতের মূল লক্ষ্যই হবে, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে মমতার আপসের উদাহরণ জনসমক্ষে পেশ করা। স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (সিমি)-কে নিষিদ্ধ করার পরেও তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান কী ভাবে সেই সংগঠনের মাথা হিসাবে কাজ করে গিয়েছেন, সেই সমস্ত তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে এসেছে। সিদ্ধার্থনাথও অভিযোগ করেছেন, ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশের জামাতুল মুজাহিদিনের এক মাথার যোগাযোগ রয়েছে। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ওই নেতার ১৮ দফায় আর্থিক লেনদেন হয়েছে। বিজেপি-র এক নেতার বক্তব্য, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর দেশে খাগড়াগড় ছাড়া আর কোনও সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্ট কার্ডেও এই ঘটনার কথা ঠিক এই ভাষাতেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সারদা-বিদ্ধ মমতাকে আজ অমিত সন্ত্রাস হাতিয়ারে আঘাত করবেন।
তবে সন্ত্রাস প্রশ্নে মমতার বিরুদ্ধে প্রচার নিয়ে বিজেপি যথেষ্ট সাবধানীও বটে। ইদানীং সংখ্যালঘুদের একাংশও বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। সন্ত্রাস নিয়ে প্রচারকে বিজেপি এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চায় না, যাতে সেই প্রবণতায় ভাটা পড়ে এবং সংখ্যালঘুরা তাদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে ওঠে। সে জন্যই এখন সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ হলেও বিজেপি প্রতিবাদ করে। একই কারণে আজ অমিতের সভায় সংখ্যালঘু-সহ সব ধরনের মানুষের উপরে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রশ্নও উঠবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy