পরপর দু’দিন টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেট হওয়ার কথা ছিল। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর ২৯ মার্চের নির্ধারিত টেট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আগেই স্থগিত হয়ে গিয়েছে। সেই হাইকোর্টই অন্য একটি মামলায় সোমবার জানিয়ে দিয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বাছাইয়ের পরীক্ষা নির্ধারিত দিনে না-হওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রাথমিকের টেট তাই ৩০ মার্চ, রবিবার নির্ধারিত দিনেই হবে।
যদিও যে-সব প্রার্থী প্রাথমিক টেট দেবেন বলে এ বছর আবেদন করেছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এখনও পর্যন্ত তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড, পরীক্ষা কেন্দ্র সম্পর্কে কোনও তথ্য জানায়নি। পর্ষদ সূত্রের খবর, হাইকোর্ট কী নির্দেশ দেয়, সেটা না-জানা পর্যন্ত ওই সব তথ্য জানানোর কাজ স্থগিত রাখা হয়েছিল। পরীক্ষা নেওয়া যাবে বলে হাইকোর্ট সোমবার নির্দেশ দেওয়ায় এ বার প্রার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র কোথায় হবে, অ্যাডমিট কার্ড কী ভাবে মিলবে ইত্যাদি জানানো হবে।
এ বছর ৩১ মার্চের পরে প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের স্কুলে শিক্ষকতার জন্য নিয়োগ করা যাবে না বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)। ২৯ মার্চ এসএসসি-র যে-টেট হওয়ার কথা ছিল, তার মতোই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নির্ধারিত টেটের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়। দু’ক্ষেত্রেই আবেদনকারীদের বক্তব্য অনেকটা এক রকম। তাঁরা বলছেন, ২৯ বা ৩০ মার্চ পরীক্ষা হলেও ৩১ মার্চের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব হবে না। সে-ক্ষেত্রে এনসিটিই-র নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাবে এবং তার পরে আর প্রশিক্ষণহীন প্রার্থী নিয়োগ সম্ভব নয়। তাই ওই দু’টি নিয়োগ পরীক্ষারই বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী রাতুল বিশ্বাস এ দিন টেট সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে জানান, ৩০ মার্চের পরীক্ষার মাধ্যমে কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না। এতে সফল হলে টেট-উত্তীর্ণ শংসাপত্র দেওয়া হবে প্রার্থীদের, যা সাত বছর বৈধ থাকবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সফল প্রার্থীরা সকলেই চাকরিতে যোগ দেবেন। এই যুক্তি শোনার পরে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার রায় দিয়ে জানান, প্রাথমিক টেট বন্ধ করে দেওয়ার কোনও কারণ নেই। সেটি নির্ধারিত দিনেই হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য পরে বলেন, “হাইকোর্ট নির্ধারিত দিনেই পরীক্ষা নেওয়া যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছে। এটা খুবই স্বস্তির খবর।” সেই সঙ্গেই তিনি জানান, রাতুলবাবু আদালতে কী বলেছেন, তা তাঁর জানা নেই। সভাপতির কথায়, “এনসিটিই জানিয়েছে, টেট-উত্তীর্ণ শংসাপত্রটি সর্বাধিক সাত বছর বৈধ থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে তা ঠিক কত বছর বৈধ থাকবে, এখনও সেই সিদ্ধান্ত হয়নি।” তিনি জানান, বিগত টেটে প্রশিক্ষণহীন যে-সব প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন, এপ্রিল থেকে তাঁদের প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
২০১৩-র ৩১ মার্চ প্রাথমিক স্কুলের ৩৫ হাজার শূন্য পদের জন্য টেট নেওয়া হয়। প্রায় ১৮ লক্ষ পরীক্ষার্থী ওই পরীক্ষা দিলেও মাত্র ১৮ হাজার আসনে শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব হয়েছে। গত বছর নভেম্বরে ওই টেটের ফল প্রকাশের সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছিল, বাকি পদগুলির জন্য প্রার্থী বাছাই করতে চলতি আর্থিক বছরেই ফের টেট নেওয়া হবে। সেই সঙ্গেই জানানো হয়, আগের টেটে বসেও যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁরা চাইলে এ বার ফি ছাড়া ফের ওই পরীক্ষা দিতে পারেন। তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্র, রোল নম্বর ও অ্যাডমিট কার্ড আগে যা ছিল, এ বারেও তা-ই থাকবে। গত বারের প্রায় ১৪ লক্ষ প্রার্থী এ বছর টেট দেবেন বলে পর্ষদ সূত্রের খবর।
কিন্তু এ বছর যাঁরা টেটে বসার জন্য নতুন করে আবেদন জানিয়েছেন, তাঁদের ফি জমা নেওয়া হলেও অ্যাডমিট কার্ড কোথা থেকে পাবেন, পরীক্ষা কেন্দ্র কী হবে, এখনও তা সে জানানো হয়নি। পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেও এই সব তথ্য জানতে না-পারায় এই আবেদনকারীরা সংশয়ে পড়ে গিয়েছেন।
পর্ষদ সূত্রের খবর, এমন আবেদনকারীর সংখ্যা সাড়ে চার-পাঁচ লক্ষ। নতুন আবেদনকারীরা পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য কোথা থেকে জানতে পারবেন, আজ, মঙ্গলবার তা জানানো হবে। প্রার্থীরা অনলাইনে অ্যাডমিট কার্ড পাবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy