ক’দিন আগেও ছিলেন শাসকদলের মন্ত্রী। দলনেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে দল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়ার পরে এখন তিনিই চক্ষুশূল তৃণমূলের। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে সেই সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের সঙ্গে রাজ্যের আর এক মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় ঠাকুরের দ্বৈরথ যে আরও বাড়বে, তার ইঙ্গিতও মিলতে শুরু করেছে নানা ঘটনায়। রবিবার বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগে মঞ্জুল জানিয়েছেন, ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কিছু দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে ঢুকে হুমকি দিয়েছে। সে দিনই মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন মঞ্জুল। ওই দিন কিন্তু তিনি অভিযোগ করেননি থানায়। কেন?
এ প্রসঙ্গে মঞ্জুলের বক্তব্য মেলেনি। তবে, তাঁর ছেলে সুব্রত ঠাকুর (বাবার সঙ্গেই বিজেপিতে গিয়েছেন) বলেন, “আমরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথাও বলতে হয়েছে। সে জন্যই দেরি হল।” বর্তমান পরিস্থিতিতে মঞ্জুল ‘নিরাপত্তার অভাব’ বোধ করছেন বলেও তাঁর পরিবার সূত্রে খবর।
১৫ তারিখ বিকেলের পরে মঞ্জুল-সুব্রতর বিজেপিতে যোগদানের খবর ছড়িয়ে পড়তেই গাইঘাটার ঠাকুরনগরের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। মঞ্জুলদের বাসস্থান ঠাকুরবাড়িতে (মতুয়াদের পীঠস্থানও বটে) গোটা তিরিশেক মোটরবাইকে চেপে বেশ কিছু যুবক পুলিশি ঘেরাটোপ ভেঙে ঢুকে পড়ে তুমুল হইহট্টগোল করে। ‘মঞ্জুল-সুব্রত মুর্দাবাদ’ ধ্বনিও ওঠে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের তির ছিল। তবে, পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে তৃণমূলের নামে সরাসরি কিছু বলেননি মঞ্জুল। কিন্তু, ইঙ্গিতটা স্পষ্ট। যা জেনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “কাউকে ভয় দেখানো আমরা সমর্থন করি না। তবে দেখতে হবে, উনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন কিনা। পুলিশ তদন্ত করলেই সত্যিটা জানা যাবে।” তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জ্যোতিপ্রিয়র পাল্টা অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে এঁটে উঠতে না পেরে সিপিএমের আদলেই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করছে বিজেপি। রবিবার দুপুরে বনগাঁয় দলের এক কর্মিসভায় এ কথা বলেছেন তিনি। যা উত্তরে বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খুনের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। ওটা তৃণমূলের সংস্কৃতি।”
আনুষ্ঠানিক ভাবে দল ছাড়ার দিন মমতার পাশাপাশি জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মঞ্জুল। ওই ঘটনার পর থেকে দু’জনের কাজিয়া তুুঙ্গে উঠেছে। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বনগাঁর শিমুলতলায় ও গাইঘাটার চাঁদপাড়া তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুরের সমর্থনে রবিবার কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। মঞ্জুলের নাম না করে জ্যোতিপ্রিয় ওই সভায় বলেন, “আমি ওঁর সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। কিছু বললেই উনি গালাগাল দেন! আমাকে সারমেয় কামড়ালে আমি কি সারমেয়কে কামড়াতে পারি? ওঁর ভাষাজ্ঞান নেই।” যা শুনে মঞ্জুল পরে বলেন, “ওঁদের শালীনতা বোধ বলে কোনও বস্তু নেই। মানুষই এর জবাব দেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy