দেশের সর্বোচ্চ আদালত রাজ্যের কাছে হলফনামা চাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি দিল নিহত সাগর ঘোষের পরিবারকে। ওই হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিমকোর্টে গিয়েছিল নিহতের পরিবার। ওই মামলায় সিবিআইয়ে আপত্তি কোথায় তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে রাজ্যকে জানাতে শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এতেই স্বস্তি পেয়েছে তাঁদের পরিবার বলে এ দিন জানান ছেলে হৃদয় ঘোষ। হৃদয়দের আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহ রায় বলেন, “ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আমরা সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি করেছিলাম। সেটি গৃহীত হয়েছে। পাশাপাশি একটি নোটিস রাজি হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কী কারণে সিবিআই তদন্ত হবে না, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে।”
প্রসঙ্গত, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খুন হন পাড়ুইয়ের বাঁধ নবগ্রামের বাসিন্দা সাগর ঘোষ। ওই খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর মতো তৃণমূল নেতার। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত ওই হত্যা মামলার দায়িত্ব পায় বিশেষ তদন্তকারি দল সিট। গত ১৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিট। যদিও সেই চার্জশিটে অনুব্রত বা বিকাশের নাম ছিল না। তবে তৃণমূলের সাত্তোর অঞ্চল কমিটির সম্পাদক শেখ মুস্তফা, তৃণমূলের কসবা অঞ্চাল সভাপতি শেখ ইউনুস-সহ আট জনের নাম ছিল। সিটের দেওয়া ওই চার্জশিটের ভিত্তিতে সিউড়ি জেলা আদালতে গত ৮ জানুয়ারি ওই মামলায় চার্জ গঠিত হয়েছে। সিউড়ির জেলা আদালতে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ২৬ তারিখ পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণপর্বের জন্য ধার্য হয়েছিল। কিন্তু নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী, ছেলে হৃদয় ও বৌমা শিবানী-সহ মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা কেউই আদালতে সাক্ষ্য দেননি। মামলায় মোট ৫১ জনের সাক্ষ্য দানের কথা থাকলে সাকুল্যে ১৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এমনকী সমন নিয়ে সাক্ষ্য দিয়ে না আসায় ১২ জনের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। তার পরেও সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো যায়নি। মূল সাক্ষীদের সাক্ষ্য না হওয়ায় ফের আগামী ২৩-২৫ মার্চ সাক্ষ্য দানের দিন ধার্য করছে আদালত। সেই সময় কালের মধ্যে সুপ্রিমকোর্টর নির্দেশ তাই স্বস্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন হৃদয়বাবু।
আসলে প্রথম থেকেই এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার বিপক্ষে ছিলেন নিহতের পরিবার। তাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদালত সমন পাঠানোয় প্রথমে তা গ্রহণ করতে চাননি সাগর ঘোষের পরিবার। ছেলে হৃদয়ের দাবি ছিল, বাবার হত্যাকাণ্ডে নিযুক্ত সিটের দেওয়া যে চার্জশিটের ভিত্তিতে জেলা আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে, সেই তদন্তই পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁদের ওই তদন্তের উপর আস্থা নেই। সে জন্য তাঁদের পরিবার সিবিআই চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন এবং শীর্ষ আদালতের রায় পাওয়ার আপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। সেই কারণেই কখনও আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন, কখনও বা সরকারি আইনজীবীর বদল চেয়ে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী সরস্বতীদেবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy