প্রতীকী ছবি।
বাঙালির বিয়ের সঙ্গে বেনারসীর সম্পর্ক অতি প্রাচীন। বিয়ের মাস কয়েক আগে শহরের কোনও নামী দোকানে গিয়ে ভাল দেখে বেনারসী কিনে নেওয়া হত। তবে সময়ের সঙ্গে বদলেছে পোশাকের ধরন, নকশা। বিয়ের পোশাকের তালিকায় বেনারসীর পাশাপাশি এখন সমান তালে জায়গা করে নিয়েছে লেহঙ্গাও।
এখন অনেকেই বিয়ের দিন বেনারসী পরলে বউভাতে কিন্তু লেহঙ্গাকেই বেছে নেন। আসলে জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা একটু অন্য রকম হলে বেশ ভালই হয়। তাই যে লেহঙ্গাটি আপনি কিনছেন, সেটি যেন অন্যদের থেকে এক্কেবারে আলাদা দেখতে হয়।
১. আবু জানি সন্দীপ খোশলা
সোনাম কপুরের মেহেন্দির অনুষ্ঠানের মতো সাজ হোক কিংবা প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার মতো সাজ, যেমনটা চাইবেন তেমনটাই পেয়ে যাবেন এখানে। এই পোশাকশিল্পীর কাজের প্রধান আকর্ষণ হল আয়নার কাজ এবং চিকনকারি কাজ। কনের লেহঙ্গার নকশা নির্ভর করে বিয়ের জায়গা, সময়ের উপর। কোন সময় বিয়ে করছেন, অর্থাৎ শীতকালে নাকি গরমকালে সেই অনুযায়ীই হবে লেহঙ্গার ডিজাইন।
২. অনামিকা খন্না
অনামিকা খন্না প্রথম থেকেই তাঁর লেহঙ্গার ডিজাইনে ঐতিহ্যের ছোঁয়া রেখে এসেছেন। অনামিকা খান্না এমন ভাবেই প্রতিটি লেহঙ্গায় কারুকাজ ও নকশা ফুটিয়ে তোলেন, যাতে অল্প গয়নার সঙ্গে অনায়াসেই মানিয়ে যাবে লেহঙ্গা। অনামিকা খন্নার কাজের মূল আকর্ষণ হল কেপস। সঙ্গে হাল্কা সুতোর কাজ।
৩. অনিতা ডোংরে
রাজস্থানি নকশার জন্য অনিতা ডোংরের নাম সর্বজনবিদিত। গোটাপাত্তি এবং নানান রঙের ছোঁয়া তাঁর লেহঙ্গায় অন্য মাত্রা এনে দেয় । এ ছাড়াও অনিতার আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এমনিতে লেহঙ্গায় সচরাচর পকেট থাকে না বললেই চলে। কিন্তু অনিতা ডোংরে পকেটযুক্ত লেহঙ্গার সঙ্গে এমন ভাবে ব্লাউজ বানান যা খুব সহজেই পরা যায়। অনিতা কনের স্বাচ্ছন্দ্যকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁর প্রতিটি কাজে। তাই অত্যধিক ভারী লেহঙ্গার বদলে, তাঁর হাতের জাদুতে ফুটে ওঠে আরামদায়ক অথচ সুন্দর ও হাল্কা কাজের লেহঙ্গা।
৪. গৌরব গুপ্ত
কনের শারীরিক গঠন এবং গায়ের রং অনুযায়ী পোশাক তৈরি করাই গৌরব গুপ্তের ডিজাইনের বিশেষত্ব। শিফন, ক্রেপ, ডোপিয়ন, নেট, অর্গানজা— ইত্যাদির মিশেলে তাঁর তৈরি করা হয় পোশাকগুলি। গৌরব গুপ্তের মতে, এখনকার কনেরা গতে বাঁধা ধারণার চৌকাঠ পেরিয়ে একটু অন্য ধরনের, একটু উজ্জ্বল রংই বেশি ভালবাসেন। আবার অন্য দিকে রঙের পাশাপাশি নিজেদের পছন্দসই সাজের সঙ্গেও তাঁরা আপস করতে চান না। তাই সেই সব কথা মাথায় রেখেই গৌরব গুপ্ত তাঁর পোশাকে নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তোলেন এক একটি নকশা। যা কনের সাজ নিমেষেই অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়।
৫. রিতু কুমার
সাজ-পোশাক, কাপড় এবং হস্তশিল্প— ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে পদ্মশ্রী পেয়েছিলেন রিতু কুমার। তাঁর তৈরি লেহঙ্গায় বার বার প্রাচীন ভারতীয় নকশা এবং প্রথাগত কারুশিল্পের উদ্ভাবনী ব্যবহার নজর কেড়েছে। তাঁর তৈরি নকশায় বার বার ধরা পড়ে মুঘল থেকে ফার্সি ঘরানার সঙ্গে ভারতীয় ঘরানার সুতোর কাজের এক অসাধারণ মেলবন্ধন।
৬. মণীশ মালহোত্র
বিয়ের পোশাক-পরিকল্পক হিসেবে আরও একটি পরিচিত নাম মণীশ মালহোত্র। তাঁর তৈরি লেহঙ্গায় নজর কেড়েছেন বহু বলি অভিনেত্রী। মণীশের কথায়,তাঁর প্রত্যেকটি নকশা স্বতন্ত্র এবং সেই প্রতিটি কাজের মধ্যে থাকে আধুনিকতার ছোঁয়া। তিনি ক্রেতার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পোশাকের নকশা ফুটিয়ে তোলেন। যে কারণে অনেক বলি তারকাকে প্রায়ই তাঁর তৈরি লেহঙ্গায় দেখা যায়।
৭. সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়
ভারতে সেরা ডিজাইনারদের কথা বললে প্রথমেই আসে সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের নাম। অনেকের কাছেই বিয়েতে সব্যসাচীর তৈরী লেহঙ্গা পরা স্বপ্নপূরণের সমান। বিয়ে থেকে বউভাত, আচার-অনুষ্ঠানের প্রতিটি মুহূর্ত ধরে রাখতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। সেই কারণেই বলিউড থেকে টলিউডের তাবড় তাবড় নায়িকা তাঁর ডিজাইনে মোহিত।
সব্যসাচীর তৈরী পোশাকে যেমন রয়েছে ঐতিহ্য, সংস্কৃতির ছোঁয়া, তেমনই চেনা ছন্দের বাইরে বেরিয়ে কাজ এবং নকশায় নতুনত্ব। সেই নতুনত্বতেই মোহিত হয়ে বিয়ের দিন তাঁর নকশা করা লেহঙ্গাকেই বেছে নিয়েছিলেন বলি তারকা অনুষ্কা শর্মা থেকে দীপিকা পাড়ুকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy