বিয়ের প্রথা সমস্ত দেশে থাকলেও দেশ, জাতি ও সম্প্রদায়ভেদে রীতিনীতি আলাদা। কোথাও বিয়ের আগে গাছের উপর উঠে বসেন নববধূ। কোনও সম্প্রদায়ের কনের মা দম্পতির ঘরে থাকেন, আবার কোনও সংস্কৃতিতে প্রথা রয়েছে মেয়েদের প্রথমে কুকুর বা ব্যাঙের মতো প্রাণীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ইন্দোনশিয়া বা মালয়েশিয়ায় এমন একটি জাতি রয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে বিবাহের একটি অদ্ভুত রীতি। যেখানে বিয়ের পর বর-কনেকে তিন দিন ধরে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। এমনকি তাদের শৌচাগার ব্যবহারের উপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এই রীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বেশ কিছু পুরনো বিশ্বাস এবং এটি বিবাহের সাংস্কৃতিক রীতিও বটে।
ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া ও বোর্নিয়ো অঞ্চলে বসবাসকারী টিডং উপজাতি এই অদ্ভুত রীতি পালন করে। টিডং শব্দের অর্থ ‘পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষ’। এই উপজাতির প্রধান পেশা কৃষিকাজ। টিডং সম্প্রদায়ের মতে, বিবাহ একটি পবিত্র অনুষ্ঠান। বর-কনে তাঁদের বিয়ের প্রথম তিন দিন শৌচাগার ব্যবহার করলে তা নবদম্পতির জীবনের পবিত্রতা নষ্ট করে দেবে। বিবাহের পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য নবদম্পতিকে তিন দিন শৌচাগার ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়। যদি তাঁরা এটি করে ফেলেন তা হলে এটিকে একটি অশুভ লক্ষণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। দম্পতি এই ঐতিহ্য যাতে মেনে চলেন তা নিশ্চিত করার জন্য পরিবারের সদস্যরা নবদম্পতির উপর নজর রাখেন। অনেক সময় নববিবাহিত দম্পতিকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। তাঁরা যাতে বেরিয়ে যেতে না পারেন।
আরও পড়ুন:
উপজাতিরা বিশ্বাস করেন যে শৌচাগার একটি ময়লা জায়গা এবং এখানে নেতিবাচক শক্তি থাকে। সেই শক্তি বর এবং কনের সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে। এমনকি বিবাহে ফাটল ধরাতে পারে। এই তিন দিনে, নবদম্পতিদের শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন যাতে না হয় সে জন্য খুব কম খাবার দেওয়া হয়। তাঁদের জল খাওয়ার পরিমাণও মেপে দেওয়া হয়।