লেটার প্যাডে লেখা সাদামাঠা কয়েক লাইনের চিঠি। চিঠির লেখকও তেমন খ্যাতনামী নন। ১০০ বছরের পুরনো সেই চিঠিই বিক্রি হল প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকায়। অভিশপ্ত টাইটানিক জাহাজের জীবিত যাত্রী কর্নেল আর্চিবল্ড গ্রেসির হাতে লেখা চিঠি নিলামে উঠেছিল ইংল্যান্ডে। জাহাজডুবির কয়েক দিন আগেই চিঠিটি তাঁর এক বন্ধুকে লিখেছিলেন গ্রেসি। ইংল্যান্ডের নিলাম সংস্থা উইল্টশায়ারের ‘হেনরি অলড্রিজ অ্যান্ড সন’ আয়োজিত নিলামে চিঠিটি বিক্রি হয়। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৬০ হাজার পাউন্ডে (৬৮ লক্ষ টাকা) বিক্রি হওয়ার আশা করা হলেও শেষ পর্যন্ত এটি তার পাঁচ গুণ দামে বিক্রি হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে। টাইটানিকে বসে লেখা চিঠির মধ্যে এটিই সবচেয়ে তথ্যসমৃদ্ধ বলে উল্লেখ করেছে নিলামকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন:
আরও পড়ুন:
১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল, সাউদাম্পটন থেকে টাইটানিকে ওঠার পর কর্নেল গ্রেসি তাঁর পরিচিত এক জনকে এই চিঠিটি লেখেন। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘পুরো যাত্রা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি টাইটানিকের প্রশংসা করবেন না বা কোনও মতামত প্রকাশ করবেন না।’’ কর্নেল আর্চিবল্ড গ্রেসি টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির যাত্রী ছিলেন। হিমবাহের ধাক্কায় জাহাজটি ডুবে যাওয়ার পর মারা যান দেড় হাজারের বেশি যাত্রী। যে কয়েক জন বেঁচে ফিরেছিলেন তাঁদের মধ্যে আর্চিবল্ড ছিলেন অন্যতম। ১৯১২ সালের ১১ এপ্রিল জাহাজটি যখন আয়ারল্যান্ডের কুইন্সটাউনে কিছু ক্ষণের জন্য থামে, তখন চিঠিটি পোস্ট করা হয়। পরে এটি ১২ এপ্রিল লন্ডনে পোস্টমার্ক করা হয়। গ্রেসি তাঁর এক পরিচিতকে চিঠিটি লিখেছিলেন। তিনি লন্ডনের ওয়াল্ডর্ফ হোটেলে চিঠিটি পেয়েছিলেন। টাইটানিকের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে গ্রেসি একটি বইও লিখেছেন। তার নাম ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’।
আরও পড়ুন:
দুর্ঘটনার সময় গ্রেসি তাঁর কেবিনে ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন ইঞ্জিনগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপদের সময় তিনি মহিলা এবং শিশুদের লাইফবোটে উঠতে সাহায্য করেন। পরে নিজে জলে ঝাঁপ দিয়ে একটি লাইফবোটে উঠে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচান। হাইপোথার্মিয়ার কারণে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। ১৯১২ সালের ২ ডিসেম্বর গ্রেসি কোমায় চলে যান এবং দু’দিন পর মারা যান আর্চিবল্ড গ্রেসি।