যেন চকচকে লোহার চাবুকের উপর কমলা রঙের পাখনা বসানো! এমনই এক অদ্ভুতদর্শন মাছের দেখা মিলল মেক্সিকোর সমুদ্রসৈকতে। আর তা নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। মাছটিকে ‘ডুমস্ডে ফিশ’ বা পৃথিবী ধ্বংসের বার্তাবহনকারী মাছের আখ্যাও দিচ্ছেন কেউ কেউ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সমুদ্রসৈকতে ভেসে ওঠে মাছটি। মাছটিকে দেখে বিস্মিত মানুষজন সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এসেছে। ভাইরালও হয়েছে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
আরও পড়ুন:
ভিডিয়োয় যে মাছটিকে দেখা গিয়েছে, সেটি পরিচিত ‘ওরফিশ’ নামে। রুপোলি রঙের ছিপছিপে মাছটি দেখতে ধাতব চাবুকের মতো। পাখনার রং কমলা। তবে ‘ওরফিশ’ গভীর জলের মাছ। সাধারণত সমুদ্রের ‘মেসোপেলাজিক’ অঞ্চলে মাছটির বসবাস। সূর্যের আলো সেই অঞ্চলে পৌঁছয় না। ফলে খুব কমই সমুদ্রেপৃষ্ঠের কাছাকাছি দেখা যায় ওরফিশকে। তবে আকস্মিক ভাবে মাছটি সমুদ্রের উপরে উঠে আসায় আলোচনা শুরু হয়েছে। সেই ঘটনা উস্কে দিয়েছে কিছু ভয়ঙ্কর পৌরাণিক কাহিনিকেও। ফলে মাছটিকে আপাতত ‘ডুমস্ডে ফিশ’ নামেই ডাকছেন অনেকে। কিন্তু কেন?
জাপানের লোকগল্পে ওরফিশ পরিচিত ‘রিউগু নো সুকাই’ বা ‘সমুদ্র ঈশ্বরের বার্তাবাহক’ নামে। খারাপ বা বিধ্বংসী কিছু হতে চললে তবেই নাকি উপরে উঠে আসে মাছটি। ধ্বংসের বার্তা দিয়ে যায়। আর সে কারণেই ওই মাছটিকে ধ্বংসের দিনের মাছ বলে উল্লেখ করছেন অনেকে। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে জাপানের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরে গভীর সমুদ্রে বসবাসকারী প্রায় ২০টি ওরফিশ দেশটির উপকূলে ভেসে ওঠে।
আরও পড়ুন:
যদিও বিজ্ঞানীমহলের দাবি, ভূমিকম্পের কারণে চাপের পরিবর্তন হলে সমুদ্রের গভীরে থাকা প্রাণীদের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে এবং তারা সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি চলে আসে। আবার ভূমিকম্পের আগে প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নিঃসৃত হওয়ার কারণেও সমুদ্রের অতলে থাকা অনেক মাছ উপরে উঠে আসে। ‘ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ অনুযায়ী, ওরফিশ দৈর্ঘ্যে ছয় মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে সক্ষম। বেশ কিছু বিজ্ঞানী সেই মাছ এবং ভূমিকম্পের কার্যকলাপের মধ্যে একটি সম্ভাব্য যোগসূত্র স্বীকার করেন।