(বাঁ দিকে) রিস থমাস এবং জেকে রাওলিং (ডান দিকে)। —ছবি: সংগৃহীত।
স্কুলজীবন থেকেই হ্যারি পটারের দুনিয়া প্রিয় তরুণের। জেকে রাওলিংয়ের লেখা হ্যারি পটারের কোনও বই প্রকাশ পেতে না পেতেই তা পড়ে ফেলতেন তিনি। হ্যারি প়টার সিরিজ়ের ছ’টি বই তাঁর বাবা-মা কিনে দিলেও সপ্তম বইটি কিনে দিতে আপত্তি জানান তরুণের বাবা-মা। এ দিকে বই পড়ার লোভও সামলাতে পারছিলেন না তিনি। তাই উত্তেজনার বশে বইয়ের একটি দোকান থেকে হ্যারি পটারের সপ্তম এবং শেষ বইটি চুরি করেছিলেন সেই তরুণ। তার পর কেটে যায় প্রায় দু’দশক। নিজের প্রথম বই প্রকাশ পাওয়ার পর ‘চুরির জিনিস’ নিয়ে একই দোকানে হাজির হন তিনি। এই ঘটনা নজর কাড়ে জেকে রাওলিংয়েরও।
ঘটনাটি কেরলের বাসিন্দা রিস থমাসের। এর্নাকুলম জেলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন রিস। সেখানকার একটি স্কুলে পড়তেন তিনি। হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ১৭ বছর আগে যখন তিনি নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন, তখন হ্যারি পটারের সপ্তম এবং শেষ বই ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস’ প্রকাশিত হয়। বইটি কিনে দেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের কাছে বায়না করতে থাকেন রিস। কিন্তু রিসের বাবা-মা তাঁকে সেই বইটি কিনে দিতে চাননি। রিস জানান, স্থানীয় গ্রন্থাগার থেকে সংগ্রহ করে বইটি রিসকে পরে পড়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা।
মনখারাপ করে সেই কথা বন্ধুদের জানিয়েছিলেন রিস। রিস সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমার বন্ধুরা আমায় চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল যে, পড়ার এত ইচ্ছা থাকলে আমি যেন বইটি চুরি করে পড়ি। তখন ‘ডন’, ‘ধুম’-এর মতো হিন্দি সিনেমা দেখতাম আমি। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। দেবদাস নামে এক ব্যক্তির বইয়ের দোকান ছিল। সেখান থেকেই আমি বই চুরি করেছিলাম।’’
দেবদাসের দোকান থেকে বই চুরি করার কিছু দিন পর আবার সেই দোকানে গিয়েছিলেন রিস। কিন্তু রিসকে দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন দেবদাস। তার পর থেকে আর কোনও দিন দেবদাসের দোকানে যাননি তিনি। দেখতে দেখতে ১৭ বছর পেরিয়ে যায়। দেবদাসের স্মৃতি থেকে এই ঘটনা আবছা হয়ে গেলেও রিস তা ভুলতে পারেননি। ‘নাইন্টিস কিড’ নামে মালয়ালম ভাষায় একটি বই লেখেন তিনি। নিজের লেখা প্রথম বইয়ের একটি কপি নিয়ে দেবদাসের দোকানে যান রিস। তাঁর সঙ্গে ছিল ১৭ বছর আগে ‘চুরি করা’ হ্যারি পটারের বই। পুরনো স্মৃতি আবার যেন তাজা হয়ে আসে দেবদাসের।
সাক্ষাৎকারে রিস বলেন, ‘‘দেবদাস আমার কাছ থেকে বইয়ের দাম নেননি। আমায় বকাবকিও করেননি। বরং আমার লেখা বইটি সই করে তাঁকে উপহার দিতে বললেন। আমি নিজেও হ্যারি পটারের বইটি ফেরত দিতে চাইনি। আমার কাছে স্মৃতিস্বরূপ আজীবন রেখে দিতে চেয়েছিলাম।’’ রিসের এই কাহিনি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে প়ড়ে। হ্যারি পটারের অনুগামীর এই ঘটনা নজর কাড়ে হ্যারি পটারের স্রষ্টারও। ঘটনাটি উল্লেখ করে জেকে রাওলিং সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘যদিও আমার পুরো বিষয়টি খুব মিষ্টি লেগেছে। কিন্তু এতে অনেকেই মনে করতে পারেন যে, আমি বই চুরির সমর্থনে কথা বলছি। আমি একেবারেই এর বিপক্ষে। দয়া করে কখনও বই চুরি করবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy