আলো জ্বালানোর বেতন ৩০ কোটি! ছবি: সংগৃহীত।
আলো জ্বালানোর বেতন ৩০ কোটি! মনে হতে পারে কী এমন চাকরি যার জন্য এত টাকা দিতে প্রস্তুত ছিলেন স্বয়ং মিশরের ফারাও। এমন বেতনের বহর শুনেও কেউ এগিয়ে আসতে চাইতেন না এই চাকরি করতে। কী সেই চাকরি?
আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘরে সর্ব ক্ষণের জন্য আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে। মুহূর্তের জন্য হলেও বন্ধ করা যাবে না সেই আলো। উত্তাল সমুদ্রের মাঝখানে একদম একা আলো নিয়ে জাহাজকে পথ দেখানোই একমাত্র দায়িত্ব। সম্প্রতি আলেকজান্দ্রিয়ার সেই বাতিঘরের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মনে হয়েছে, এক দিনের জন্য হলেও এই জায়গায় থাকা সম্ভব নয়। মাসের পর মাস থাকা তো দূর অস্ত্।
৩০ কোটি টাকা ও বিলাসের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কাজটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজ’ বলেছিলেন অনেকেই। কারণ সমুদ্রের মাঝখানে একা থেকে প্রবল ঝড়ের মোকাবিলা করতে হত এবং আলো সবসময় জ্বলছে কি না তা নিশ্চিত করতে হত। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস প্রায়শই বাতিঘরটিকে পুরোপুরি ঢেকে দেয় এবং সেখানে বসবাসকারীর জীবনও বিপন্ন করে। কঠিন পরিস্থিতি এবং একাকীত্বের কারণে কেউ এই কাজটি করতে চাইতেন না।
আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘরটির শুধুমাত্র জাহাজকে সঠিক দিশা দেখানোর জন্যই বিখ্যাত ছিল এমন নয়, এর স্থাপত্যও নজরকাড়া। বর্তমানে যে সব পর্যটক রোমাঞ্চকর ভ্রমণের স্বাদ পেতে চান তাঁদের জন্য আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর অন্যতম। আলেকজান্দ্রিয়ার কাছে বিখ্যাত নাবিক মোরেসিয়াস এক বার হারিকেনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সমুদ্রের ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় লুকোনো পাথর ছিল, যার কারণে তাঁর জাহাজটি ডুবে যায়। এর পরেই নিরাপদ জাহাজ চলাচলের জন্য বাতিঘরের গুরুত্ব বুঝতে পারেন ফারাও প্রথম টলেমি। খ্রিস্টজন্মের প্রায় ৩০০ বছর আগে এই বাতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। সেই সময়ে ওই বাতিস্তম্ভে আলো জ্বালানোর জন্য ফারাও যে পরিমাণ বেতন এবং অন্যান্য সুবিধার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তার মূল্য আজকের দিনে প্রায় ৩০ কোটি টাকা! কিন্তু এত টাকা দিয়েও সেখানে কাজ করার লোক পাওয়া যেত না।
পরবর্তী কালে অবশ্য এই বাতিস্তম্ভে স্বয়ংক্রিয় আলোর ব্যবস্থা করা হয়। এটি সেই যুগের অন্যতম সেরা স্থাপত্যের কৃতিত্ব হিসাবে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy