বর্ষায় বেড়াতে গেলে শরীর ও স্বাস্থ্যে বাড়তি নজর দরকার, কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখতেই হবে? ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষার মরসুম মানে আচমকা আবহাওয়া বদল। টানা বৃষ্টি হলেই একটু ঠান্ডা। আবার রোদ উঠলেই গরমের সঙ্গে আর্দ্রতার যুগলবন্দি। বৃষ্টির মরসুমে ব্যাক্টিরিয়া, ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তে জ্বর, সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। সঙ্গে জমা জলে মশককুলের বৃদ্ধিতে দেখা দেয় ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। এক দিকে রোগবালাই, অন্য দিকে, প্রকৃতির সজীবতা উপভোগের হাতছানি। বর্ষার প্রকৃতি দেখতে ব্যাগ গুছিয়ে পাহাড়ে-জঙ্গলে পাড়ি দেন বহু মানুষই। বর্ষায় বেড়াতে গেলেও কিন্তু রোগবালাই পালাবে না। তাই বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন শরীর ও স্বাস্থ্য রক্ষায়?
হাত ধোয়া
শরীর ভাল রাখতে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার দরকার। এই অভ্যাস সব সময়ই ভাল। তবে বর্ষার দিনে বাইরে গেলে এ ব্যাপারে বাড়তি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। বাইরে বেড়ানো মানেই বিভিন্ন জিনিসে হাত পড়া। নোংরা হাতে খাবার খেলে পেটখারাপের ঝুঁকি বাড়ে। তা ছাড়া, বর্ষার মরসুমে জ্বর, সর্দি-কাশি হয় বহু লোকেরই। গণ পরিবহণে সেই কারণে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। অসুস্থ ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে ‘ড্রপলেট’ ছিটকে যে কোনও জায়গায় পড়তে পারে। নিজের অজান্তে তা হাতে লাগতে পারে। সেই হাত মুখে, নাকে , চোখে গেলেই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা। তাই বার বার হাত ধোয়া বা ‘স্যানিটাইজ়’ করা জরুরি।
মাস্কের ব্যবহার
বর্ষার মরসুমে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি। চিকিৎসকেরাই পরামর্শ দিচ্ছেন অসুস্থ মানুষের ছোঁয়াচ এড়াতে মাস্ক ব্যবহার করার। মাস্ক সর্ব ক্ষণ পরে না থাকলেও, বেড়াতে যাওয়ার সময় ট্রেন, বাস বা গাড়িতে সহযাত্রীর হাঁচি-কাশি থেকে নিজের সুরক্ষায় হাতের কাছে রাখা মাস্কটি পরে নিন। শিশুদের ক্ষেত্রেও তাই। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
পানীয় জল
বেড়াতে গেলে সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে পানীয় জলে। জলের ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকা দরকার। যে কোনও দোকান বা রেস্তেরাঁয় রাখা জল পান করা ঠিক নয়। বরং বোতলজাত পানীয় জল খান। হোটেলে যদি জল পরিশোধনকারী যন্ত্র থাকে, তা হলে সেই জল খেতে পারেন। না হলে পরিশুদ্ধ পানীয় জল কিনে খাওয়াই ভাল। খুদে সদস্য থাকলে প্রয়োজনে জল ফুটিয়ে নিয়ে ছেঁকে খাওয়ান। যদি ব্যক্তিগত গাড়িতে ভ্রমণ করেন, তা হলে পানীয় জল আগাম মজুত করে নিতে পারেন।
যেখানে সেখানে খাবেন না
বর্ষায় পেটের রোগ বেশি হয়। জল থেকেও সংক্রমণের ভয় থাকে। তাই বেড়াতে গেলে যেখান-সেখানে রাস্তা থেকে খাবার কিনে খাওয়া ঠিক হবে না। পরিচ্ছন্ন কোনও হোটেল বা রেস্তরাঁ থেকেই খাবার কেনা ভাল। খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া জরুরি। বিশেষত রাস্তায় বেরিয়ে ফুচকা, আলুকাবলি, ঘুগনি, অনেক ক্ষণ কেটে রাখা ফল বাদ দেওয়াই ভাল।
বর্ষাতি ও জুতো
বর্ষার সময় বেড়াতে গেলে বৃষ্টিতে ঘোরাই স্বাভাবিক। সঙ্গে সব সময় বর্ষাতি, ছাতা, বর্ষার উপযুক্ত জুতো রাখা দরকার। এমন পোশাক বেছে নিন, যা জল লাগলেও দ্রুত শুকিয়ে যাবে। না হলে বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লাগলে জ্বর, সর্দি ঠেকানো মুশকিল।
মশা থেকে সাবধান
বর্ষার মরসুমে গভীর জঙ্গলে প্রবেশের অনুমতি থাকে না। তবে হালকা জঙ্গল এলাকায় ভ্রমণে বাধা থাকে না। সে ক্ষেত্রে মশা থেকে সাবধান হতে হবে। না হলেই ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির হওয়ার আশঙ্কা হতে পারে। এই সময় পোকামাকড় কামড়েও বিপদ ঘটতে পারে। তাই ফুলহাতা জামাকাপড় পরা ভাল। মশা থেকে বাঁচতে মশা তাড়ানোর লোশন বা ক্রিম মেখে নিতে পারেন।
ওষুধ
বর্ষাকালে বেড়াতে গেলে, জ্বর, সর্দি-কাশি, পেট ব্যথা, পেটখারাপের ওষুধ নিতে ভুলবেন না। অন্যান্য ওষুধ ছাড়াও এগুলি সঙ্গে রাখতেই হবে। শিশুদের নিয়ে গেলে, তার ডাক্তারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করিয়ে নেওয়া জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy