Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Honeymoon Destination

পাহাড়ের কোলে মধুচন্দ্রিমা সারলেন উদয় এবং অনামিকা, সপ্তাহান্তে আপনিও যেতে পারেন সেখানে

স্বাধীনতার আগে তাকদাহ ছিল ব্রিটিশদের একটি সেনাছাউনি। এখন ব্রিটিশ রাজত্ব না থাকলেও থেকে গিয়েছে তাঁদের তৈরি বাংলো, গির্জা।

Image of Uday Pratap Singh and Anamika Chakraborty

পাহাড়ে দ্বিতীয় বার বিয়ের পর উদয় এবং অনামিকা। ছবি: সংগৃহীত

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩ ১২:০০
Share: Save:

শহরে ‘ক্যাকোফোনি’ ছেড়ে শান্ত, নিরিবিলি পাহাড়, লেকের ধার কিংবা রাজপ্রাসাদে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করার চল হয়েছে এখন। তবে অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা বা ক্যাটরিনা কইফের মতো বিলাসবহুল বিয়ে না হোক, বাংলা ধারাবাহিক ‘মিঠাই-এর জুটি উদয়প্রতাপ সিংহ এবং অনামিকা চক্রবর্তীর মতো তাকদহতে গিয়ে বিয়ে বা মধুচন্দ্রিমার আয়োজন করা কিন্তু একেবারেই খরচসাপেক্ষ নয়।

বন্ধুদের নিয়ে পাহাড়ে একান্তে কিছুটা সময় কাটাতে গিয়েছিলেন উদয় এবং অনামিকা। সেখানে গিয়েই আবার সাত পাকে বাঁধা পড়লেন ‘মিঠাই’-এর অভিনেতারা। দার্জিলিং জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম হল তাকদহ। বর্ষার ধূসর মেঘ যেখানে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে প্রতিনিয়ত। পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট কয়েকটি কাঠের বাড়ি এবং ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো একটি বিট্রিশ ‘হেরিটেজ’ বাংলো— এই নিয়ে তাকদহ গ্রাম। এই জায়গার মূল আকর্ষণ পাহাড়ের কোলে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত। পাকদণ্ডী পথের ক্লান্তি থাকলেও ভোরবেলা বাংলোর লন থেকে সূর্যোদয়ের দৃশ্য হাতছাড়া করার কোনও মানেই হয় না। আশপাশের নির্জনতায় গোটা দিন কেটে যাবে অনায়াসে। হঠাৎ যে কখন ঝুপ করে সন্ধে নামবে এবং পাহাড়ের গায়ে লক্ষ প্রদীপ জ্বলে উঠবে টেরই পাবেন না। তবে এই শত বছরেরও বেশি পুরনো বাংলো নিয়ে অনেক রোমহর্ষক কাহিনি রয়েছে। এখানে রাত না কাটালে সে অভিজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল।

তাকদহের পরিবেশ মনোরম হলেও আলাদা করে দেখার তেমন কিছু নেই। তবে আসা-যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি ভিউ পয়েন্টে গাড়ি দাঁড়ায়। তার মধ্যে ‘লাভার্স মিট’ বেশ জনপ্রিয়। পাহাড়ের কিনারায় দাঁড়িয়ে সেখান থেকে নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করার আনন্দই আলাদা। প্রথম রাতটা প্রকৃতির মাঝে কাটিয়ে, চাইলে পরের দিন একটু দূরে যাওয়া যেতেই পারে। পথেই পড়বে তিনচুলে ভিউপয়েন্ট। তিনটি পাহাড়ের চূড়ো পর পর এমন ভাবে সাজানো, সেখানে রোদ এসে পড়লে দেখে মনে হয় যেন তিনটি জ্বলন্ত উনুন। এখান থেকে মিনিট ৪০ এগোলেই ছোটমাঙ্গওয়া ‘অরেঞ্জ গার্ডেন’। ঠিক সময়ে এলে গাছে কমলালেবু ধরে থাকতে দেখা যায়। এই বাগানের ভিতরেই অবশ্য একটি কারখানা রয়েছে। গাছ থেকে কমলালেবু পেড়ে রস, স্কোয়াশ ইত্যাদি নানা রকম জিনিস তৈরি হয় এই কারখানায়। চাইলে এখান থেকে কিনতে পারেন সেই সব খাবার।

Image of Sunset

সূর্যাস্তের অপরূপ শোভা দেখতে পাবেন তাকদহ থেকে। ছবি: সংগৃহীত

মনের মানুষটির হাতে হাত রেখে এক বেলা কাটিয়ে দিতে পারেন এখানকার পাইন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে। চাইলে ঘুরে দেখতে পারেন এখানকার অর্কিডের বাগান। গুম্বাদারা ভিউপয়েন্ট, লামাহাটা ইকো পার্ক, রংগ্‌লি চা বাগান। তবে পাহাড়ে সন্ধে নামে খুব তাড়াতাড়ি। পাহাড়ি পথে হাঁটাচলা করার অভ্যাস যদি না থাকে, তা হলে অন্ধকার নামার আগে ফিরে যাওয়াই ভাল। পরের দিন এখান থেকেই দেখে নিতে পারেন শত বছরের পুরনো একটি ‘হ্যাঙ্গিং ব্রিজ’। ফেরার পথে দেখে নিতে পারেন তাকদহের পুরনো একটি চার্চ। যা আগে ব্রিটিশ বাংলোরই একটি অংশ ছিল। তবে বর্ষাকালে জঙ্গলের রাস্তায় হাঁটতে বেরোলে বাড়তি সতর্কতা নিতেই হয়। জোঁকের ভয় থাকে। যে হেতু আশপাশে খুব বেশি হোটেল নেই, লোকজনের আনাগোনাও খুব কম, তাই যাতায়াতের পথে বন্য জীবজন্তুর দেখা মিললেও মিলতে পারে। সঙ্গে বর্ষাতি, ছাতা, গামবুট এবং টর্চ নিতে কিন্তু ভুলবেন না।

কী ভাবে যাবেন?

শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি নেমে সেখান থেকে গাড়িতে সোজা তাকদহ পৌঁছনো যায়। আবার টয় ট্রেন চড়ার ইচ্ছে থাকলে, তা-ও সম্ভব। তবে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সরাসরি তাকদহ পৌঁছনোর কোনও ট্রেন নেই। ঘুম স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছনো যায় তাকদহ গ্রামে। তবে এই আবহাওয়ায় প্রায়ই বৃষ্টি হয়, অনেক সময়ে এই টয় ট্রেনের লাইনের উপর ধস নামতেও দেখা যায়। তাই মাঝেমধ্যেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য পরিষেবা বন্ধ থাকে। এ ছাড়া আকাশপথে কলকাতা থেকে বাগডোগরা গিয়ে, সেখান থেকেও তাকদহ পৌঁছনো যায়। সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা।

কোথায় থাকবেন?

তাকদহতে থাকার খুব বেশি জায়গা নেই। হেরিটেজ বাংলোতে থাকতে গেলে অনেক আগে থেকে বুকিং করতে হয়। এ ছাড়া ছোটখাটো কিছু হোম স্টে রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Honeymoon Destination destination wedding
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE