ব্যাঙ্কক, পাটায়া, ফুকেত, ক্র্যাবি ঘোরা? এ বার তাইল্যান্ডের অন্য এক দ্বীপে যাবেন নাকি! চেনা পরিসরের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভারতীয় পর্যটকদের নজর এখন সে দেশের পূর্ব উপকূলের দ্বীপ কো স্যামুইয়ের দিকে।
ইদানীং পর্যটনের স্থান বাছাইয়ে অনেকটাই ভূমিকা থাকে সমাজমাধ্যমের। বহু লোকে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামে সমাজমাধ্যম প্রভাবীদের ভিডিয়ো, রিল দেখে বেড়াতে যাওয়ার জায়গা বাছেন, পরিকল্পনা করেন। সেই তালিকায় ওয়েব সিরিজ়ের প্রভাবও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
‘এমিলি ইন প্যারিস’ দেখে ভালবাসার শহরের প্রেমে পড়েছেন অনেকেই। তুরস্কের ওয়েব সিরিজ় কারও মনে উস্কে দিয়েছে সে দেশে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা। সম্প্রতি আমেরিকান ওয়েব সিরিজ় ‘দ্য হোয়াইট লোটাস’ সিজ়ন থ্রি-র প্রিমিয়ারের পর থেকে ঝোঁক আরও বেড়েছে সেই দ্বীপ নিয়ে। সিরিজ়টির শুটিং হয়েছে ব্যাঙ্কক, পাটায়ার পাশাপাশি কো স্যামুইতে।
‘দ্য হোয়াইট লোটাস’ সিজ়ন ৩-এর প্রিমিয়ার হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি। অনলাইন ভ্রমণ সংক্রান্ত একটি তথ্য দেওয়ার সংস্থা অ্যাগোডার পরিসংখ্যান বলছে, তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ভারতীয়দের মধ্যে কো স্যামুই নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। জানুয়ারির তুলনায় জায়গাটি নিয়ে ‘সার্চ’ বেড়েছে ১৫ শতাংশ। গত বছরের এই সময়ের হিসাবের নিরিখে যা প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি।
কো স্যামুইয়ে কী এমন আছে?
তাইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত দ্বীপ কো স্যামুই। ছবির মতো সুন্দর সৈকত, শহর, পাহাড়, ঝর্না, বুদ্ধ পার্ক— আরও অনেক কিছুই আছে সেখানে। ব্যাঙ্কক থেকে উড়ানে ঘণ্টা দেড়েকের পথ। ঝাঁ-চকচকে হোটেল, রিসর্টের আরাম, আয়েসের সবই মিলবে এখানে। আর পাবেন নিখাদ প্রকৃতির সান্নিধ্য।
দ্বীপটি আয়তনে বিশেষ ছোট নয়। জলপথে ঘোরার পাশাপাশি স্কুটার বা বাইক ভাড়া করে দিব্যি চষে ফেলতে পারেন এ জায়গার আনাচকানাচ। নির্জনতা যেমন এখানে উপভোগ্য, তেমনই সান্ধ্য পার্টি, হুল্লোড়— কোনও আয়োজনের অভাব নেই।
আরও পড়ুন:
সৈকত: কো স্যামুই ঘিরে রয়েছে চাওয়েং, লিপা নই, চাং মন, লামাই— একাধিক সৈকত। এক এক জায়গার এক এক রকম সৌন্দর্য। চাইলে সারা দিন মিহি বালুতটে অলস দিন যাপন করতে পারেন প্রিয় মানুষটির সঙ্গে। আবার জলক্রীড়ার রোমাঞ্চও উপভোগ করতে পারেন। পাহাড়, সমুদ্রের মেলবন্ধন চোখে পড়বে প্রায় প্রতিটি সৈকতে। লামাই সৈকতে রয়েছে দু’টি পাথর, যারা স্থানীয়দের কাছে ঠাকুরদা-ঠাকুরমা নামেই পরিচিত। সেই পাথর নিয়েও রয়েছে কাহিনি। পরিচ্ছন্নতা, নির্জনতা এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। সৈকতের ধারে গড়ে উঠেছে রিসর্ট, হোটেল।
বুদ্ধ গার্ডেন: দ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ বুদ্ধ গার্ডেন। জঙ্গলঘেরা নির্জন স্থানে বিভিন্ন ভঙ্গিমার মূর্তি সাজানো। পাশ দিয়ে তির তির করে বয়ে যাচ্ছে জলরাশি। শান্তির আবহ চারদিকে। এই স্থান ধ্যানাভ্যাসের জন্য আদর্শ।
ঝর্না: না মুয়াং এক এবং দুই নামে দু’টি ঝর্না রয়েছে দ্বীপটিতে। বুদ্ধ পার্কের অদূরেই তার অবস্থান। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসছে জলরাশি। চাইলে ছোটখাটো হাইকিং করতে পারেন এখানে।
দ্বীপ ভ্রমণ: কো ফ্যাংগন, কো তাও এই দু’টি দ্বীপ জলপথে ঘুরে আসা যায় কো স্যামুই থেকে। অন্তত এক দিন করে সেখানে না থাকলে দ্বীপগুলি ভাল ভাবে উপভোগ করা যাবে না। স্নরকেলিং করার সুযোগ রয়েছে এই দুই দ্বীপ সংলগ্ন সৈকতে।
মৎস্যজীবীদের গ্রাম: কো স্যামুইয়ের উত্তরে রয়েছে মৎস্যজীবীদের গ্রাম বোফুট। হাঁটার রাস্তা, নানা রকম ক্যাফে রয়েছে সেখানে। স্থানীয় বাজারদোকান ঘোরার পাশাপাশি, সেখানকার খাবারও চেখে দেখতে পারেন। এখানে পাবেন টাটকা মাছ, সামুদ্রিক খাবার।