কয়েক বছর ধরেই পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে বেশ জনপ্রিয় এই জায়গা। ছবি: সংগৃহীত
পায়ের তলায় সর্ষের পরিমাণ যেন শীতকাল এলেই বেড়ে যায়। হিমেল হাওয়ার স্পর্শে কিছুতেই আর বাড়িতে মন টেকে না। সপ্তাহান্তের ছুটিতেই কাছেপিঠে ঘুরে আসার পরিকল্পনা করেন অনেকেই। আপনার সপ্তাহান্তের ঠিকানা হতে পারে হুগলি জেলার গড় মান্দারণ।
কয়েক বছর ধরেই পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে বেশ জনপ্রিয় এই জায়গা। শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভূমি কামারপুকুর থেকে গড় মান্দারণে দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। নির্জনতা যাঁদের ভাল লাগে, এই জায়গা তাঁদের অপছন্দ হওয়ার কথা নয়। নিরিবিলি, শান্ত পরিবেশে মাঝেমাঝে শুধু হাওয়ার শন শন শব্দ আপনার শহুরে ক্লান্তি দূর করে দেবে। প্রায় ২০০ একর জমির উপরে গড়ে উঠেছে গড় মান্দারণ পর্যটন কেন্দ্র। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাসে এই জায়গার উল্লেখ রয়েছে। এখানকার ঐতিহাসিক গুরুত্বও কম নয়। গড় মান্দারণে একটি গাজি এবং পীরের দরগা রয়েছে। এলাকার বাইরের মানুষেরাও এখানে পুণ্য সঞ্চয় করতে আসেন। কথিত রয়েছে গৌড়ের অধিপতি হুসেন শাহের সেনাপতির সমাধি এই দরগা।
শাল, শিমুল, পিয়াল, সেগুন দিয়ে ঘেরা গড় মান্দারণের জঙ্গল। শীতকালে তো বটেই, সারা বছর অনেকেই পিকনিক করতে আসেন এখানে। গড় মান্দারণের প্রকৃতিই এই জায়গার মুখ্য আকর্ষণ। গোটাটাই যেন রং-তুলি দিয়ে ক্যানভাসে আঁকা ছবি। অদ্ভুত শান্তি মিশে রয়েছে এখানকার বাতাসে। পাখির কলতান, গাছেদের ফিসফাস আর ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে মিশে মাদকতা। দৈনন্দিনতা থেকে মুক্তি পেতে গড় মান্দারণ উপযুক্ত ঠিকানা হতে পারে। একশো সিঁড়ি পেরিয়ে উঠতে হবে মাজার দর্শন করতে। সর্বধর্মসমন্বয়ে এখানে প্রার্থনা করতে আসেন মানুষ। পাশেই ঢিপির মতো জায়গা রয়েছে। যেটা গড় নামে পরিচিত। তবে সে দুর্গের এখন আর কিছু অবশিষ্ট নয়। কথিত রয়েছে, একটা সময় ঢিপির নীচে নাকি সুড়ঙ্গ ছিল।
যে সুড়ঙ্গ দিয়ে যাওয়া যেত মন্দিরে। বহু কাল আগের সেই সুড়ঙ্গ অবশ্য এখন আর নেই। গড়ের পাশেই রয়েছে ছোট জলাশয়। কিন্তু অনেকটা অংশে চরা পড়ে গিয়েছে। ওই চর দিয়েই যাতায়াত করা যায়। বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা পর্যটনকেন্দ্র আপনার মনে ধরবেই।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে আরামবাগগামী লোকাল ট্রেন ধরে নামতে হবে আরামবাগ স্টেশনে। সেখান থেকে বাসে চেপে কামারপুকুর। আবার একটি বাসে করে গড় মান্দারণ।
কোথায় থাকবেন?
গড় মান্দারণেই থাকার তেমন কোনও জায়গা নেই। রাতে থাকতে হলে কামারপুকুর কিংবা জয়রামবাটীতে যেতে হবে। সেখানে বেশ কয়েকটি হোটেল এবং পান্থশালা রয়েছে। তবে সকালে গিয়ে ঘুরে রাতে ফিরে আসা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy