পুজোয় যাবেন না কি, ব্রহ্মপুরের কাছে মার্কণ্ডী সৈকতে? ছবি: সংগৃহীত।
বাতাসে আগমনীর সুর। নীল আকাশে সাদা পেঁজা তুলোট মেঘ জানান দিচ্ছে দুর্গা এল বলে। মন চাইছে নীল আকাশকে সঙ্গী করে কোথাও বেরিয়ে পড়তে? তা হলে বরং ঘুরে আসুন মার্কণ্ডী সমুদ্র সৈকত থেকে। পুজো মানেই চেনা সৈকতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। তবে যদি কোলাহল পেরিয়ে, প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বালুকেবলায় একলা হতে চান, তা হলে কিন্তু এর চেয়ে ভাল জায়গা আর হবে না।
ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় এর অবস্থান। ব্রহ্মপুর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে মার্কণ্ডী গ্রাম। এখানে মূলত মৎস্যজীবীদের বাস। গ্রামের নামেই সৈকত। মার্কণ্ডী সৈকতের রূপ-সৌন্দর্য আর পাঁচটা বালুকাবেলার মতো ঠিক নয়। সমুদ্রের আগে এখানে চোখে পড়বে নদী। স্থানীয়রা কেউ কেউ বলেন মার্কণ্ডী নদী। নদীর জলধারা পেরিয়ে আবার বালুতট। সেখানে আছড়ে পড়ছে ফেনিল জলরাশি। স্থানীয়রা জায়গাটিকে মোহনা হিসাবেই অভিহিত করেন। চারপাশ ভীষণ পরিচ্ছন্ন। হয়তো এই সৈকত পর্যটন মানচিত্রে এখনও সেভাবে জনপ্রিয় হয়নি বলেই, এখানে অকৃত্রিম প্রকৃতির সান্নিধ্য মেলে।
এখানে স্নান করলে, গায়ে লাগবে না নোংরা জল। পায়ে জড়াবে না প্লাস্টিকের ব্যাগ। বরং সৈকতের কোথাও কোথাও বালুতটে সবুজের ছোঁয়া চোখে পড়বে। খানিকক্ষণ চুপ করে বসে থাকলেই, দেখা মিলবে লাল কাঁকড়ার আনাগোনা। এই জায়গাটির সঙ্গে কিছুটা তালসারির মিল আছে। তবে মার্কণ্ডী তার চেয়েও সুন্দর।
কাছেই রয়েছে একটি মন্দির। সেখানেই অবস্থান করছেন শিব। পাশাপাশি ঘুরে নিতে পারেন মার্কণ্ডী গ্রামটিও। গ্রামে ঢোকার আগেই কেয়া বনে ঘুরে নিতে পারেন। এই গাছ থেকেই সুগন্ধী তৈরি হয়।
যেতে কতক্ষণ সময় লাগবে?
কলকাতা থেকে মার্কণ্ডী সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব ৬২১ কিলোমিটার। একটানা গেলে মোটামুটি ১৩ ঘণ্টা সময় লাগবে। চাইলে ভুবনেশ্বর, কটক অথবা বরকুলে রাত্রিবাস করতে পারেন। এই জায়াগাগুলি থেকে ঘুরে নেওয়ার জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ভুবনেশ্বর থেকে দেখে নিতে পারেন তাপান। বরকুলে পাবেন চিল্কার সান্নিধ্য।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ব্রহ্মপুরের দূরত্ব ৬১৩ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে কোলাঘাট, জলেশ্বর, ভদ্রক পার করে কটক। সেখান থেকে ভুবনেশ্বর হয়ে খুরদা বা খরদা, বালুগাঁও, বরকুল পার করে ব্রহ্মপুর। লম্বা যাত্রাপথ একবারে পাড়ি দিলে ধকল হবে। সেক্ষেত্রে কটক, ভুবনেশ্বর, খুরদা বা খরদা জেলায় বরকুল, কিংবা গঞ্জামে রম্ভাতে রাত্রিবাস করতে পারেন।
কোথায় থাকবেন?
মার্কণ্ডীর খুব কাছে থাকার জায়গা নেই। তবে ব্রহ্মপুরে ছোট বড়, নামী-দামি অসংখ্য হোটেল আছে। সেখানে থেকে গাড়ি নিয়ে সাইট সিইং করতে পারেন। চাইলে গোপালুর সৈকতেও থাকতে পারেন। সেখানেও বিভিন্ন ধরনের হোটেল রয়েছে। যেহেতু ব্রহ্মপুর ও গোপালপুর থেকে মার্কণ্ডী সৈকত খুব বেশি দূরে নয়, তাই এর মধ্যে কোনও একটি জায়গায় হোটেল খুঁজে নিতে পারেন। গোপালপুরে ওড়িশা সরকারের ‘পান্থ নিবাস’-ও রয়েছে। অনলাইনে পান্থ নিবাস বুকিং করা যায়।
আর কী দেখবেন?
মার্কণ্ডী সৈকত থেকে গোপালপুর সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব ৩৪ কিলোমিটার। ৩০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আরও একটি সুন্দর সৈকত, পতি সোনাপুর বা সোনপুর বিচ। এই সৈকতটি পুরীর গোল্ডেন বিচের মতোই সাজানো, গোজানো। পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত তারাতারিনী মন্দিরও এখান থেকে খুব বেশি দূরে নয়। দূরত্ব ৫২ কিলোমিটার। এছাড়া দেখে নেওয়া যায় ভৈরবী মন্দির ও গোকুল ধাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy