জল, জঙ্গল আর পাহাড়ে ঘেরা মুকুটমণিপুরের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে বাঙালি পর্যটকদের কাছে। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ
এগিয়ে আসছে শীতের ছুটি, পাল্লা দিয়ে উচাটন হচ্ছে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির মন। সপ্তাহান্তে কাছেপিঠে কয়েক দিনের জন্য ঘুরে আসার জন্য মন আনচান করছে অনেকেরই। সপ্তাহান্তের ছুটিতে দিন দুয়েকের জন্য ঘুরে আসতে চাইলে আদর্শ ঠিকানা হতে পারে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর। জল, জঙ্গল আর পাহাড়ে ঘেরা মুকুটমণিপুরের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে বাঙালি পর্যটকদের কাছে।
কী দেখবেন?
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য মুকুটমণিপুরকে অনেকেই ‘রাঢ়বঙ্গের রানি’ বলেন। বাঁকুড়ার একেবারে দক্ষিণে কংসাবতী ও কুমারী নদী যেখানে মিলেছে, সেখানেই মুকুটমণিপুর জলাধার। জলাধারের চারদিকে সবুজে ঢাকা ছোট ছোট পাহাড় আর টিলা।
পাশেই রয়েছে কংসাবতী বাঁধ। সরকারি তথ্য বলছে, এটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ। বাঁধটি দৈর্ঘ্যে ১১ কিলোমিটার। বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে নির্মিত। ইচ্ছা হলে মুকুটমণিপুর জলাধারের পাড় ধরে হেঁটে অথবা ভ্যানে চড়ে সোজা চলে যেতে পারেন জলাধারের গায়ে থাকা পরেশনাথ পাহাড়েও। কথিত আছে, এক সময়ে বাঁকুড়ায় জৈন ধর্মের প্রভাব ছিল। আর জৈন ধর্মাবলম্বী মানুষদের তীর্থস্থান ছিল এই পরেশনাথ পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরে জৈন তীর্থঙ্করদের একাধিক মূর্তি সেই ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়। ‘মুসাফিরানা ভিউ পয়েন্ট’-ও এখন পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মুসাফিরানা আসলে জলাধারের গায়ে থাকা ছোট্ট একটি পাহাড়। বিভিন্ন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই পাহাড়টি। পাহাড়ের গায়ে বাঁধানো সিঁড়ি রয়েছে। পাহাড়ের চূড়া থেকে মুকুটমণিপুরের যাবতীয় নৈসর্গিক শোভা দেখা যায়। হাতে সময় থাকলে নৌকায় চড়ে মুকুটমণিপুরের গভীর জলে ভাসতে ভাসতে পৌঁছে যাওয়া যায় জলাধারের অন্য পাড়ে থাকা বন পুকুরিয়া হরিণ পার্কে। এই সব প্রচলিত জায়গা ছাড়াও হাতে একটু সময় থাকলে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে দেখতে পারেন ঝিলিমিলি ও সুতানের ঘন শাল-পিয়ালের জঙ্গল। ইচ্ছা হলে উঁকি দেওয়া যায় জঙ্গলে ঘেরা ছোট ছোট আদিবাসী গ্রামেও।
কোথায় থাকবেন?
রাত্রিবাসের জন্য মুকুটমণিপুর জলাধারের কাছেই সরকারি ও বেসরকারি একাধিক আবাসস্থল রয়েছে। ভাড়া দেড় হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। আগে থেকে বুক করে যাওয়াই ভাল। এখন অধিকাংশ হোটেল অনলাইনে বুক করা যায়। কিছু বেসরকারি হোটেলে তাঁবুতেও রাত্রিবাসের সুযোগ রয়েছে।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে মুকুটমণিপুর প্রায় ২৩০ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে পুরুলিয়াগামী ট্রেন ধরে বাঁকুড়া স্টেশনে নেমে গাড়ি ভাড়া করে মুকুটমণিপুর যাওয়া যায়। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহও সংস্থার বাস ধরেও সরাসরি কলকাতা থেকে মুকুটমণিপুর যাওয়া যায়। এ ছাড়া, কলকাতা থেকে গাড়ি বা বাসে চড়ে আসানসোল, দুর্গাপুর কিংবা পানাগড় হয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় মুকুটমণিপুরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy