শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বিত্তশালীদের তালিকায় পরিচিত নাম মুকেশ অম্বানী। প্রভাব-প্রতিপত্তি যথেষ্ট। তবে তা সত্ত্বেও বরাবরই নিজের বংশ পরম্পরা, ঐতিহ্য, অনুশাসন, ধর্মীয় নীতি পালনে যথেষ্ট সচেষ্ট পরিবারের অম্বানী পরিবারের সকলেই।
এই পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সাজপোশাক, কার্যকলাপ, ব্যবসায়িক জগতে পদক্ষেপ যেমন সকলের নজরে থাকে তেমনই তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনেও নজর থাকে ফটোশিকারিদের। সম্প্রতি, মুম্বইয়ের বাবুলনাথ মন্দিরে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন অম্বানী পরিবারের বড় ছেলে আকাশ অম্বানী এবং তাঁর স্ত্রী শ্লোকা মেহতা। কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মন্দিরে গিয়েছিলেন তাঁরা।

মুম্বইয়ের বাবুলনাথ মন্দির। ছবি:সংগৃহীত।
পরিচ্ছদে বাহুল্য ছিল না তাঁদের। আকাশ পরেছিলেন সাদা রঙের শার্ট ও কালো ট্রাউজ়ার্স, শ্লোকাকে দেখা গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী সাদা, নীল প্রিন্টেড কুর্তিতে। হাতে ছিল ব্রেসলেট। খোলা চুল, সাজেও ছিল না বাহুল্য।
দম্পতি পুজো দিতে গিয়েছেলন যে মন্দিরটিতে, তার নাম বাবুলনাথ মন্দির। এ মন্দির শিবের। মুম্বইয়ের গিরগাম চৌপথির এই মন্দির কিন্তু বেশ পুরনো। দূর-দূরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা এখানে পুজো দিতে আসেন।
মুম্বই বেড়াতে গেলে সাধারণত লোকজন সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরে যান। আরব সাগরের পারে হাজি আলিও পর্যটন মহলে জনপ্রিয়। তবে চাইলে কিন্তু শ্লোক, আকাশের মতো ঘুরে নিতে পারেন বাবুলনাথ মন্দিরও। এখানে রয়েছে বাবুল বা বাবলা গাছ। সেই গাছকে পবিত্রজ্ঞানে পুজো করা হয়। শিবরাত্রিতে বিপুল ভক্ত সমাগম হয় এই মন্দিরে।
এই মন্দিরের উৎপত্তি নিয়ে নানা রকম কথা শোনা যায়। কেউ বলেন, এখানকার শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল দ্বাদশ শতকে রাজা ভীমদেবের আমলে। কালের নিয়মে সেই মন্দির ধ্বংস হয়ে যায়। ১৭০০ শতকে আবার শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা হয়। নতুন মন্দির তৈরি করা হয় ১৭৮০ সালে। কথিত আছে, মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের নীচ থেকে শিবলিঙ্গ ছাড়াও উদ্ধার হয়েছিল গণেশ, পার্বতী, হনুমান-সহ আরও কয়েকটি মূর্তি।
তবে বর্তমান যে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত, সেটি তৈরিতে অর্থ দান করেছিলেন বরোদার মহারাজা শাহজিরাও গায়কোয়াড়। সেটি তৈরি হয়েছিল ১৮৯০ সালে।
মজার ব্যাপার হল, এ এমন এক মন্দির যেখানে শুধু সিঁড়ি দিয়ে নয়, যাওয়া যায় লিফটে চড়েও। প্রাচীন মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী, পাথুরে থামের অপূর্ব ভাস্কর্য মুগ্ধ করবে শিল্পানুরাগীদের। উন্মুক্ত চত্বরের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে একাধিক মন্দির। মূল মন্দিরের সুউচ্চ চূড়া দূর থেকে দৃশ্যমান।
মন্দির কখন খোলা থাকে?
সোমবার সকাল ছ’টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে। সপ্তাহের অন্যান্য দিন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মন্দিরে প্রবেশ করা যায়।
কী ভাবে যাবেন?
মুম্বই সেন্ট্রাল রেল স্টেশন থেকে বাবুলনাথ মন্দিরের দূরত্ব ২.৮ কিলোমিটার। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস থেকে মন্দির ৪.২ কিলোমিটার দূরে। বাস, ট্যাক্সি পেয়ে যাবেন মুম্বইয়ের যে কোনও প্রান্ত থেকে মন্দিরে যাওয়ার জন্য।