মনোজ-গম্ভীর বচসা থামাতে ছুটে আসছেন আম্পায়ার। শনিবার ফিরোজ শাহ কোটলায়। ছবি: রমাকান্ত কুশওয়া
খেলা শেষ। ফিরোজ শাহ কোটলা থেকে বাংলা তিন পয়েন্ট তুলেও নিল। কিন্তু মাঠের স্লেজিং মাঠে আটকে না থেকে দুই ক্যাপ্টেনের সঙ্গে চলে এল মাঠের বাইরে।
শনিবার দিল্লি-বাংলা রঞ্জি ম্যাচে মনোজ তিওয়ারি ও গৌতম গম্ভীরের মধ্যে যে ঝামেলা প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, রবিবার খেলা শেষেও তাকে জিইয়ে রাখলেন দুই ক্যাপ্টেন। বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতিতে।
রবিবার ম্যাচ শেষের পর গম্ভীরের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনেন মনোজ। তাঁর বক্তব্য, যে শহরের আইপিএল দলের ক্যাপ্টেন গম্ভীর, সেই রাজ্যের মানুষের নামে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন তিনি। শুধু বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্য নয়, বাংলার ক্রিকেট কিংবদন্তি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে নিজের মনে জমে থাকা যাবতীয় বিষও গম্ভীর উগরে দেন বলে অভিযোগ মনোজের।
রাতে পাল্টা অভিযোগ করে গম্ভীর বিবৃতি দেন, মনোজ মিথ্যা কথা বলে ব্যাপারটা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরির চেষ্টা করছেন। বাঙালি বা সৌরভ নিয়ে তিনি কোনও খারাপ মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছেন গম্ভীর। এও অভিযোগ করেছেন, সৌরভের নাম টেনে এনে মনোজ সস্তার প্রচার চাইছেন।
ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্য বেশিদূর এগোতে নারাজ বাংলার টিম ম্যানেজমেন্ট বা সিএবি। শনিবার ফিরোজ শাহ কোটলায় যে ঘটনা ঘটেছে, তার ভিডিও ফুটেজ বোর্ডের কাছে পাঠানো হচ্ছে আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারির রিপোর্টসহ— এই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর আর এই নিয়ে দিল্লি বা গম্ভীরের বিরুদ্ধে আলাদা করে অভিযোগের রাস্তায় যেতে চান না বলে এ দিন জানিয়ে দিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
রবিবার মনোজের ৯৭ ও আমির গনির ৬২-র পর বাংলা ২১৭-৫-এ ডিক্লেয়ার করে দিল্লির সামনে ৩২৬-এর টার্গেট দেয়। দিল্লি ৩৭ ওভারে ১৬১-৪ করার পর দুই অধিনায়কের সম্মতিতে খেলা শেষ হয়ে যায়। কোটলা থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে এ বার রোহতকে বীরেন্দ্র সহবাগের হরিয়ানার বিরুদ্ধে খেলতে রওনা হচ্ছে বাংলা। গম্ভীর সারা দিন ব্যাট করতেই নামেননি। তিনি নাকি দিল্লির দল বাছাই বৈঠকে ছিলেন।
রবিবার রাতে মনোজ আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘গোতি মাঠে কী বলেছে, তার সব কিছু আমি বলতে পারব না। এগুলো আপনারাও লিখতে পারবেন না। ও বারবার যা বলছিল, তার মোদ্দা কথা হল, ‘তোদের বাঙালিদের দ্বারা কিস্সু হবে না। তোরা যেখানে যাস মার খাস, হেরে মরিস। এখানেও হারবি। তারপর আরও কত কী, যা আমি মুখে বলতে পারব না। অযথা ও দাদি-র (সৌরভ) প্রসঙ্গও টেনে এনে ওঁর নামেও যা-তা বলল। আমি এ সবই দাদি-কে ফোন করে বলেছি।’’
পাড়ার ঠাকুর বিসর্জনে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে এই প্রসঙ্গে সৌরভ বলেন, ‘‘মনোজের কাছে সব শুনেছি। জানি না কেন এমন মতিভ্রম হল গৌতমের।’’ সিএবি-র তরফে যে কোনও সরকারি নালিশ বোর্ডের কাছে জানানো হচ্ছে না, তা সাফ জানিয়ে সৌরভ বলেন, ‘‘গৌতম গম্ভীরের নামে আবার কী নালিশ করব? ও যা পারে বলুক। আমাদের কিছু এসে যায় না। মনোজকে বলেছি, এ সব ভুলে গিয়ে ক্রিকেটে মন দে। দল ভাল খেলছে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।’’
মনোজ নিজেও অবশ্য ক্রিকেটেই মন দিতে চান। বলেন, ‘‘আমি ক্রিকেটেই মন দিতে চাই। মাঠে স্লেজিং হয়েই থাকে। তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু স্লেজিংয়ের নামে বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করার অধিকার কাউকে দিইনি। তাও শাস্তি এড়াতে আমি নিজেকে যথাসাধ্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম। এখন আবার লিখিত বিবৃতি দিয়ে পরপর মিথ্যে কথা বলছে!’’
মনোজের এই অভিযোগে গম্ভীরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যাদের জন্য কেকেআর পরপর দু’বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সেই বাঙালিদের প্রতি আমার অনেক ঋণ। বাঙালিদের কাছ থেকে প্রচুর ভালবাসা পেয়েছি বলে বাংলাকে আমি নিজের ‘সেকেন্ড হোম’ মনে করি। আর দাদা আমার দেখা সেরা অধিনায়ক। ওঁর নেতৃত্বেই আমি ভারতীয় দলে প্রথম খেলি। দাদার নাম এর মধ্যে টেনে এনে সস্তার প্রচার পেতে চাইছে মনোজ। মনোজ বরং ক্রিকেটে মন দিক। চাঞ্চল্য সৃষ্টিতে নয়। ওর প্রতি শুভেচ্ছা রইল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy