মনোজ-সুদীপ। বাংলাকে যাঁরা টানলেন। ফিরোজ শাহ কোটলাতে। বৃহস্পতিবার। ছবি: প্রেম সিংহ।
সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধিমান সাহা ও মনোজ তিওয়ারি— ব্যাটিং ত্রয়ী জ্বলে উঠতেই চালকের আসনে বাংলা। দিল্লির চতুর্মুখী পেস আক্রমণ সামলে তৃতীয় রঞ্জি ম্যাচে দলকে ভাল জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিলেন এই তিন ব্যাটসম্যান। দিনের শেষে টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলা ২৭২-৩।
রঞ্জি ট্রফির শুরু থেকেই তরুণ ব্যাটসম্যান সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের অসাধারণ ব্যাটিং পারফম্যান্স বাংলাকে আশার আলো দেখাচ্ছে। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামীর পর এ বার দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলাতেও সেঞ্চুরির ফলক পুঁতলেন তিনি। বেঙ্গালুরুতে যে ভাবে ঋদ্ধিমান ও তিনি বাংলাকে বিপদসীমা থেকে দূরে সরিয়ে এনেছিলেন, এ দিনও সে ভাবেই তাঁদের ১৪২-এর পার্টনারশিপ বাংলাকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে দিল। ক্রিজে এখনও টিকে রয়েছেন এই দু’জন। ঋদ্ধিমান ৬৭ ও সুদীপ ১০৮ করে। এর আগে ক্যাপ্টেন মনোজ তিওয়ারির সঙ্গে সুদীপের ১০৩-এর যুগলবন্দিও কম মূল্যবান নয়। মনোজ ৫৫ করে প্রদীপ সাঙ্গওয়ানের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যখন ফিরে যান, তখন বাংলা ১৩০-৩। এই জায়গা থেকেই দলের হাল ধরেন সুদীপ ও ঋদ্ধিমান। ভারতীয় টেস্ট দলে যোগ দেওয়ার আগে সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ রঞ্জি ম্যাচ।
অভিমন্যু ঈশ্বরনের অভাবে এই ম্যাচেও ওপেনার-সমস্যায় ভুগছে বাংলা। পার্থসারথি ভট্টাচার্যকে এ দিন নাভেদ আহমেদের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠানো হলেও ২৭ রানের মধ্যে দুই ওপেনারই ড্রেসিং রুমে ফেরত চলে যান। গতিময় উইকেটে শুরু থেকেই পেস আক্রমণের সামনে পড়ে বেশ ঘাবড়ে যাওয়া পার্থ (১৫) অবশ্য এলবিডব্লু-র ফাঁদে পড়েন বাঁ হাতি স্পিনার মনন শর্মার আর্ম বলে। অন্য ওপেনার নাভেদ আহমেদ (১০) নভদীপ সাইনির বাড়তি পেসের কাছে হার মেনে মিডল স্টাম্প খুইয়ে ফিরে যান।
প্রথম ঘন্টাতেই বাংলার এই বেহাল দশা (২৭-২) সামলাতে তখন ক্রিজে জুটি বাঁধেন মনোজ (৫৫) ও সুদীপ। ধীরগতিতে স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সুদীপ দ্বিতীয় স্লিপে নীতিশ রানার হাতে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান একবার। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘উইকেট বেশ স্লো। স্ট্রোক প্লে মোটেই সোজা নয় এই পিচে। সে জন্যই ধীর গতিতে খেলতে হল। উইকেটে পড়ে থাকাটাই লক্ষ্য ছিল।’’ মনোজ বরং কিছুটা গতিময় ছিলেন। মননকে লং অনের উপর দিয়ে একবার ছয় হাঁকান এবং তার পর পরই কভার দিয়ে বাউন্ডারি মারেন। ১২৬ বলের ইনিংসে আরও পাঁচটা বাউন্ডারি মারেন মনোজ। উল্টোদিকে মেজাজি ক্যাপ্টেনকে দেখে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরে পান সুদীপ। তিনিও ক্রমশ বড় শট খেলতে শুরু করেন। সারা দিনে দশটা বাউন্ডারি মারেন তিনি। তবু বেশ সচেতন ইনিংস খেলেন। সেঞ্চুরিতে পৌঁছন ২২০ বল খেলে।
লাঞ্চের পর সাঙ্গওয়ানের একটি রাউন্ড দ্য উইকেট বল মনোজ ছেড়েই দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বল তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে সোজা উইকেট কিপার ঋষভ পন্থের গ্লাভসে চলে যায়। মনোজ ফিরতেই ঋদ্ধির সঙ্গে পার্টনারশিপ শুরু করেন সুদীপ। বেঙ্গালুরুতে ১৭৩-এর পার্টনারশিপ গড়েছিলেন এই দু’জন। সুদীপ ১৪৫ ও ঋদ্ধি ৯০-এর ইনিংস খেলেছিলেন। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে তাঁরা দলকে কত দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, সেটাই দেখার।
বাংলা শিবিরে ফোন করে জানা গেল, উইকেট ক্রমশ আরও পাটা ও গতিহীন হয়ে উঠছে। ফলে দ্বিতীয় দিন ক্রিজে পড়ে থেকে রান তোলাই লক্ষ্য তাদের। সে জন্য দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের দিকে তাকিয়ে দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলা (প্রথম ইনিংস) ২৭২-৩
(সুদীপ ১০৩ নআ, ঋদ্ধিমান ৬৭ নআ, মনোজ ৫৫, সাঙ্গওয়ান ১-৩৬)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy