Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
কাপ ফাইনালের ‘রিপ্লে’ নিয়ে উত্তাল ফুটবলবিশ্ব

ছক বদলে আজ লড়াইয়ে নামছেন দুই দ্রোণাচার্য

চার বছর আগের বিশ্বকাপ ফাইনালের রিপ্লে এ বার ব্রাজিলে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনেই হচ্ছে-র চেয়েও বোধহয় বেশি তাৎপর্যের, সেই মহাম্যাচের ছক বদল! না, স্পেন বনাম নেদারল্যান্ডস যুদ্ধে জাভি-ইনিয়েস্তাদের তিকিতাকা আর রবেন-ফান পার্সিদের ডাইরেক্ট ফুটবলের লড়াই দেখা যাবে না। শুক্রবার সালভাদরের মাঠে দেল বস্কি আর লুই ফান গল দু’দলের দুই ধুরন্ধর ম্যানেজারের মস্তিষ্কেই ঘুরপাক খাচ্ছে নতুন ছক।

বিশ্বযুদ্ধে যুযুধান। দেল বস্কি-ফান গল।

বিশ্বযুদ্ধে যুযুধান। দেল বস্কি-ফান গল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০৩:৩৬
Share: Save:

চার বছর আগের বিশ্বকাপ ফাইনালের রিপ্লে এ বার ব্রাজিলে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনেই হচ্ছে-র চেয়েও বোধহয় বেশি তাৎপর্যের, সেই মহাম্যাচের ছক বদল! না, স্পেন বনাম নেদারল্যান্ডস যুদ্ধে জাভি-ইনিয়েস্তাদের তিকিতাকা আর রবেন-ফান পার্সিদের ডাইরেক্ট ফুটবলের লড়াই দেখা যাবে না। শুক্রবার সালভাদরের মাঠে দেল বস্কি আর লুই ফান গল দু’দলের দুই ধুরন্ধর ম্যানেজারের মস্তিষ্কেই ঘুরপাক খাচ্ছে নতুন ছক।

স্পেন যদি তাদের পরিচিত ‘ফলস নাইন’ ছেড়ে এক জন আদ্যন্ত স্ট্রাইকার (খুব সম্ভবত দিয়েগো কোস্তা) নিয়ে ব্রাজিলে তাদের বিশ্বকাপ অটুট রাখার অভিযানে নামে, তা হলে পেলের দেশে কমলা জার্সিধারীদের দেখা যাবে পাঁচ ডিফেন্ডারে। ডাচদের সেই চিরাচরিত উইং দিয়ে ঝড় তোলা ফুটবলের বদলে মাঝমাঠে কপাট ফেলার খেলা এ বার!

ওয়াশিংটন আর কুরিতিবাস্পেনের দুই বিশ্বকাপ বেসক্যাম্পেই গত ক’দিন প্র্যাকটিসে নানা বৈচিত্রের মধ্যে একটা ব্যাপারে কিন্তু মিল পাওয়া গিয়েছে। প্রতিটা ট্রেনিং সেশনে ইউরো এবং বিশ্বকাপজয়ী কোচ দেল বস্কি তাঁর দুই ফরোয়ার্ড দিয়েগো কোস্তা আর ফেরনান্দো তোরেসকে আলাদা করে রেখে দিয়েছিলেন। যে ফরোয়ার্ড ব্যাপারটা প্রথম একাদশে না রেখেই তিনি দু’টো বিশাল ট্রফিই জিতেছিলেন ২০১০ আর ২০১২-এ। ইউরো কাপের মতোই উপর্যুপরি দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্যে দেল বস্কি এ বার ব্রাজিলে দশটা আলাদা-আলাদা প্রথম একাদশ বেছে রেখেছেন। যার প্রতিটাতেই একটা ব্যাপার অবশ্য কমন কোস্তা বা তোরেসের মধ্যে যে কেউ এক জন স্ট্রাইকার রয়েছেন একাদশে। সে জন্যই স্প্যানিশ কোচ এমনকী তালিবান প্রসঙ্গ টেনে বলে দিয়েছেন, “স্পেন কেবল একটা তিকিতাকা ছকে খেলেই ‘ফুটবলের তালিবান’-এর মতো গোঁড়ামি দেখাতে চায় না। যে ম্যাচে যেমন প্রয়োজন পড়বে সে রকম ফর্মেশন, স্টাইলে খেলব আমরা।”

নেদারল্যান্ডসের তারকা উইঙ্গার আর্জেন রবেন আবার পাল্টা স্বীকার করছেন, তাঁরা তিকিতাকা খেলার জায়গায় নেই। বরং শুক্রবার ২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালের রিপ্লে-তে প্রয়োজনে তিকিতাকার বিরুদ্ধে নিজেদের ডাইরেক্ট ফুটবলকে বিসর্জন দিয়ে আলট্রা ডিফেন্সিভ স্টাইলে খেলতেও পারে। “ফুটবলে যদিও সবচেয়ে দেখতে সুন্দর লাগে তিকিতাকা স্টাইলে খেলা, কিন্তু আমাদের নেদারল্যান্ডস দল তিকিতাকা খেলার জায়গায় নেই। স্পেন ম্যাচটায় আমাদের কাছে সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ হল রেজাল্টটা। গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ আর সেটাও প্রথম ম্যাচই হওয়ায় আমরা শুক্রবার কোনও ভাবেই হারতে চাই না। তাই এমনকী আমাদের ম্যানেজার লুই (ফান গল) ডাচ সমর্থকদের প্রিয় ডাইরেক্ট ফুটবল ছেড়ে আমাদের দিয়ে কাউন্টার-অ্যাটাক নির্ভর খেলাতেও চান। তার জন্য স্পেনের পাল্টা পাঁচ ডিফেন্ডারের ছকে আমরাও এই ম্যাচে খেললে অবাকের কিছু নেই। তবে কাউন্টার অ্যাটাকও ফুটবলে একটা ভয়ঙ্কর অস্ত্র। যা আমরা এ বারের বিশ্বকাপে প্রয়োগ করলে হয়তো খারাপ হবে না,” বলেছেন রবেন।

হাইভোল্টেজ ম্যাচটার উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে দু’দলেই এক ঝাঁক করে সুপারস্টার ফুটবলারের উপস্থিতি। স্পেন দলে যদি কাসিয়াস, পিকে, সের্জিও র্যামস, জাভি, ইনিয়েস্তারা আলো করে থাকেন, তা হলে নেদারল্যান্ডস টিমও হেভিওয়েট, রবেন-স্নাইডার-ফান পার্সি-দে জংয়ের মতো সব মহা-নামের সৌজন্যে। তার মধ্যেই স্পেন কোচ তাঁর দলকে তাতাতে এক জন বিশেষ মহাতারকাকে বেছে নিয়েছেন। “কাসিয়াস এ বার আমাদের দলের কাছে ওর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা দেখাবে। ওর এটা চতুর্থ বিশ্বকাপ। ভাগ্য ওর পাশে রয়েছে। দু’টো ইউরো কাপ আর একটা বিশ্বকাপ জিতেছে। এ মরসুমেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেরা রিয়াল মাদ্রিদকে নেতৃত্ব দিয়েছে। ওর নেতৃত্ব-ক্ষমতা ব্রাজিলেও স্পেনের মুখে হাসি ফোটাবে,” বলেছেন দেল বস্কি। স্পেনের রিজার্ভ বেঞ্চও দারুণ শক্তিশালী। কোকে, যাঁকে ‘নতুন জাভি’ বলা হচ্ছে এবং জাভি মার্টিনেজের মতো ফুটবলাররা অন্তত শুক্রবারের ম্যাচে প্রথম দলে জায়গা পাচ্ছেন না। তবে দুই তরুণ স্প্যানিশ শক্তিই মনে করছেন, ব্রাজিল থেকেও কাপ নিয়ে ফেরার ক্ষমতা আছে লা রোখা-দের। কোকে তো বলেছেন, “স্পেন এ বার দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের থেকেও বেশি খিদে নিয়ে ব্রাজিল এসেছে।”

তাতে অবশ্য নেদারল্যান্ডসের যে ফুটবলারটি ঘাবড়াতে নারাজ, তিনি শুক্রবার স্পেনের বিরুদ্ধেই কমলা রঙের জার্সিতে নিজের ‘সেঞ্চুরি’ ম্যাচ খেলতে চলেছেন। তিনি ওয়েসলি স্নাইডার বলেছেন, “চার বছর আগের হারের ক্ষত এখনও আমার শুকোয়নি। ব্রাজিলে চার বছর আগের ফাইনালের হারের জ্বালা জুড়োতে চাই। তাতে যেমন পরের রাউন্ডে আমাদের ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে, তেমনই প্রতিশোধটাও নেওয়া হয়ে যাবে। একেবারে সুদে-আসলে!”

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy