হাল্কের পর সেলেকাও জার্সির সবচেয়ে নিন্দিত চরিত্র এত দিন ছিলেন তিনি। কিন্তু ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে গোল পাওয়ার পর ফ্রেডের পৃথিবী কিছুটা বদলেছে। চিলির বিরুদ্ধে প্রি-কোয়ার্টার যুদ্ধের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ফ্রেড ব্রাজিলীয় সংবাদপত্রকে এক সাক্ষাৎকারে যা বললেন...
প্রশ্ন: আর চব্বিশ ঘণ্টা বাদে এস্তাদিও মিনেইরোর মাঠে চিলির বিরুদ্ধে নামবেন আপনি। মিনেইরো মাঠে তো আপনি বরাবর ভাল খেলেন।
ফ্রেড: হ্যাঁ, মিনেইরোতে আমি বেশ কয়েকটা ভাল ম্যাচ খেলেছি। বেশ কিছু গোলও আছে আমার। ব্রাজিলে অন্যান্য মাঠের ফ্রেড, আর মিনেইরো মাঠের ফ্রেডের মধ্যে বরাবরই একটা তফাত থাকে। এই মাঠে নামলেই আমার আত্মবিশ্বাস প্রচণ্ড বেড়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা, মিনেইরো মাঠের শর্টকাটগুলো আমি জানি। জানি কী ভাবে দ্রুত গোলের কাছে পৌঁছে যেতে হবে।
প্র: ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে গোল পাওয়াটা আপনাকে কতটা আত্মবিশ্বাস দিয়েছে?
ফ্রেড: বলতে পারেন, চার্জড হয়ে গিয়েছি। আমি প্রত্যেক ম্যাচেই গোল করার বিভিন্ন রাস্তা খুঁজছিলাম। নিজে নিজের সমালোচনাও করছিলাম যথেষ্ট। তবে এটা কনফেডারেশনস কাপেও হয়েছিল আমার সঙ্গে। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে, সব ঠিক হয়ে যাবে।
প্র: স্কোলারি বলেছেন যে, বাকি তিরিশটা দেশকে তিনি খেলতে রাজি আছেন। কিন্তু চিলিকে নয়। ঘটনাচক্রে সেই চিলির বিরুদ্ধেই আপনাদের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে নামতে হচ্ছে শনিবার। টেনশনটা কেন?
ফ্রেড: দেখুন, ওদের টিমে সুপারস্টার বিশেষ কেউ নেই। কিন্তু টিম হিসেবে ওরা যখন মাঠে নামে, তখন আর সেটা বোঝা যায় না। এতটাই ভাল ওরা। আর চিলির সবচেয়ে বড় গুণ হল, ট্যাকটিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন। ম্যাচ কী ভাবে বার করতে হয়, ওরা জানে। চিলির কয়েকটা ম্যাচ আমরা দেখেছি। কানাডায় যখন আমরা ওদের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম, সেই ম্যাচের ভিডিও দেখেছি। আমার ধারণা, ওরা তেড়ে আক্রমণ করবে ব্রাজিলকে।
প্র: চিলির তিন ডিফেন্ডারকে নিয়ে খুব কথা হচ্ছে। আপনি কাকে টার্গেট করবেন?
ফ্রেড: আমি বাঁ দিকেরটাকে নেব। নেইমার আর হাল্ক অন্য দিক থেকে ড্রিবল করবে। আমি চেষ্টা করব যতটা সম্ভব ওদের জায়গা করে দিতে।
প্র: ব্রাজিলের জার্সিতে আপনি নেইমারের পাশে খেলছেন। দেখছেন। আবার মেসির খেলাও নিশ্চয়ই খেয়াল রাখছেন। কী বলবেন দু’জনের পারফরম্যান্স নিয়ে?
ফ্রেড: দু’জনেই জিনিয়াস। কোপা আমেরিকার সময় থেকে নেইমারকে খুব কাছ থেকে দেখছি। বড় প্লেয়ার শুধু নয়, খেলায় কী ভাবে প্রভাব ফেলতে হয় নেইমারের খুব ভাল জানা আছে। চলুন, ওকে সবাই মিলে সমর্থনটা ঠিকঠাক করি। যাতে ও কাপটা আমাদের দিতে পারে।
প্র: আর ফার্নান্দিনহো? ব্রাজিল তো বলছে, ও পওলিনহোর চেয়ে অনেক ভাল।
ফ্রেড: আমাদের টিমে সবাই ভাল। পওলিনহো অনেকটা জায়গা নিয়ে খেলে। জায়গা তৈরিও করতে পারে বল ছাড়া। ফার্নান্দিনহো আবার প্রচুর লোড নেয়। প্রচুর খাটতে পারে। আমার কাছে দু’জনেই এক রকম।
প্র: আর লুই ফিলিপ স্কোলারি আপনার কাছে কেমন?
ফ্রেড: উনি সবার কাছ থেকে উগ্র মনোভাবটা বার করে আনতে পারেন। সবার মধ্যে লড়াইয়ের তীব্র ইচ্ছেটা ঢুকিয়ে দেন। আমার কাছে ওঁর জায়গাটা বরাবরের আলাদা। কারণ যখনই আমার সমালোচনা হয়েছে, সেটা গত কনফেডারেশনস কাপে হোক বা এ বারের বিশ্বকাপে, স্কোলারি আমার সঙ্গে থেকেছেন। কম সমালোচনা তো সহ্য করতে হয়নি আমাকে। কিন্তু আমি জানি যে, শেষে গিয়ে দেখা যাবে আমি ঠিকই গোল পেয়েছি। সব আমার ঠিকই গিয়েছে। গোল যত দিন পাচ্ছিলাম না, সবার কাছে গিয়ে সাহায্য চেয়েছিলাম। টিম তখন আমাকে একজোট হয়ে সাহায্য করেছে। আমাকে মার্ক করা হচ্ছে দেখা সত্ত্বেও আমাকে বল পাস করা হয়েছে বোঝাতে যে, টিম আমাকে কতটা গুরুত্ব দেয়।
প্র: এত সমালোচনা কখনও অসহ্য মনে হয়নি?
ফ্রেড: সমালোচনা হজম করার মতো পরিণতিবোধ আমার আছে। তিন জনকে ড্রিবল করে আমি বেরোলে টিমের তাতে কোনও লাভ নেই। বরং নিজের জায়গাটায় থাকা ভাল তার চেয়ে। আমি দেখেছি আমাকে নিয়ে কী কী লেখা হয়েছে। বলা হয়েছে আরে, ফ্রেড তো বলই ধরতে পারে না! তাতে আমি নিজেকে আরও ডুবিয়ে দিয়েছিলাম প্র্যাকটিসে। টাইট টিমের বিরুদ্ধে গোলের সুযোগ বেশি পাব না, জানা কথা। কিন্তু তাই বলে যদি লুই গুস্তাভোর জায়গায় নেমে এসে খেলতে থাকি, তাতে টিমের কোনও লাভ হবে না। যুদ্ধটা অনেকটাই মানসিক ছিল। স্কোলারি, টিম সবাই আমার সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল। তার পর গোলটা পেলাম...কুল!
প্র: আর গোঁফ? ওটা রাখতেই তো ভাগ্য পাল্টাল।
ফ্রেড: তা হলে এ বার থেকে গোল করেই গোঁফে তা দেব, কথা দিলাম!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy