এ যেন এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম!
চেন্নাইয়ের বন্যা ঠেলে মুম্বই। সেখান থেকে ভোর চারটেয় উঠে ম্যাচের দিন সকালে কলকাতা আগমন সনি নর্ডিদের। তার পর এই নাটকীয় জয়।
যা দেখে ম্যাচ শেষে হতাশ মুখেই বাড়ির পথে পা বাড়ালেন দেব, পরমব্রতরা। ফুটবল নিয়ে পরমব্রতর আবেগ দেবের চেয়ে বেশি। বলছিলেন, ‘‘শেষ বেলায় যত গণ্ডগোল হয়ে গেল। তবে সেমিফাইনাল ম্যাচ তো রয়েছে। ওই দিন জিতে ফিরব।’’
দেব আবার ম্যাচ দেখার সঙ্গে বড়দিনে মুক্তি পেতে চলা ছবি ‘আরশিনগর’-এর প্রোমোশনও সারতে এসেছিলেন। বিরতিতে মাঠে নেমে গাইলেন সেই ছবির গান ‘জান কবুল’। বিরতিতে স্টেডিয়াম পরিক্রমা নায়কের। তার পর হসপিটালিটি বক্সে যখন এসে বসলেন তখন দরদর করে ঘামছেন। আটলেটিকোর অন্যতম মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা নায়কের হাতটা ধরে বললেন, ‘‘এত ঠান্ডা কেন?’’ জবাব এল, ‘‘হাফটাইমের মুখে হিউম গোলটা শোধ করার আগে খুব টেনশন হচ্ছিল। ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছিলাম। জানি না শেষ পর্যন্ত জিতে ফিরতে পারব কি না।’’ বাড়ি যাওয়ার সময় অবশ্য বলে গেলেন, ‘‘কলকাতা হৃদয়ে। আর বেড়ে ওঠা মুম্বইয়ে। হৃদয় আর মগজের লড়াইতে শেষ পর্যন্ত হৃদয়টা হেরে গেল।’’
আটলেটিকো সমর্থকরা ধরেই নিয়েছিলেন মুম্বইকে তুড়ি মেরে হারিয়ে দেবেন। কিন্তু সেই ম্যাচে হেরে তারাও মাঠ ছাড়ছিলেন বিমর্ষ মুখে। ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মুম্বই কোচ নিকোলাস আনেলকা ফাঁস করলেন রহস্যটা। ‘‘দু’দিন চেন্নাইয়ে যে পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম সেটা আজ মাঠে নামার সময় ড্রেসিংরুমে ছেলেদের মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিলাম এক অথবা তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে হবে। শূন্য হাতে ফিরলে পরিশ্রমের মূল্য থাকবে না।’’
জোড়া গোল করে এ দিনের ম্যাচের নায়ক সনি নর্ডিও বলছিলেন, ‘‘আনেলকার সঙ্গে ফরাসি ভাষায় মাঠে নামার আগে ম্যাচটা জেতার জন্য গত দু’দিনের কথা মনে করিয়ে প্রচুর প্রেরণা দিয়েছেন।’’ সঙ্গে বেরিয়ে এল আফশোসও। ‘‘পুণে, কেরল, দিল্লি—এই তিন ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হেরেছি। যদি এই তিন ম্যাচ থেকে ছ’পয়েন্টও আসত, তা হলে আজ টিমের পয়েন্ট দাঁড়াত ২২। আমরাও শেষ চারে।’’
আর হাবাস? স্প্যানিশ কোচ এ দিনের হার প্রসঙ্গ উঠতেই দেখাচ্ছেন আত্মতুষ্টিকে। বললেন, ‘‘সেমিফাইনালে চলে যাওয়ার মাঠের বাইরের কিছু বিষয় নিয়ে আমার ছেলেরা বেশি ভাবিত ছিল। ওরা সেই সুবিধা নিয়ে গিয়েছে। চাপটা ওদের নয়। আমাদের ছিল। আর আমরা সেটা সামলাতেই পারলাম না।’’
এ দিনের ম্যাচের নায়ক সনি নর্ডি আবার টিমকে প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ের স্বাদ পাইয়েই ছুটলেন বাগান কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সারতে। যাওয়ার আগে বলে গেলেন, ‘‘মুম্বই ফিরে দেশে যাব। ক্রিসমাস কাটিয়ে ২৭ ডিসেম্বর থেকে বাগান প্র্যাকটিসে নামছি।’’ এ দিন সনি সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত আনেলকাও। বলছিলেন, ‘‘ছেলেটা খুব দ্রুত গতির ফুটবলে অভ্যস্ত। বল পায়ে খুব ধূর্ত। রক্ষণাত্মক দক্ষতা বাড়লে আরও ভয়ঙ্কর হবে।’’
সনি যে প্রখর সুযোগসন্ধানী তা মানছেন তাঁর প্রতিপক্ষ হিউমও। আটলেটিকোর গোলমেশিন এ দিনও পেনাল্টি থেকে দলকে বিরতির আগে সমতায় ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ বেলায় তীরে এসে তরী ডোবায় চোয়াল শক্ত করে মিক্সডজোনে বলছিলেন, ‘‘সনি বেশ সুযোগসন্ধানী। আমাদের ভুলগুলোর পুরো ফায়দা নিয়ে গেল।’’ একটু থামলেন। তার পর ফের বললেন, ‘‘তবে এই ভুল রোজ রোজ হবে না। সেমিফাইনালে আমরা ফিরবই।’’
ছবি: উৎপল সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy