ক্ষুব্ধ: দল পরিচালন সমিতিকে আক্রমণ যুবরাজের। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালির উপর চাপ কমানোর দরকার পড়লে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হিসেবে রোহিত শর্মার নাম ভাবা যেতে পারে পারে বলে মনে করছেন যুবরাজ সিংহ। একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘আগে দু’ধরনের ক্রিকেটই শুধু খেলা হত। টেস্ট এবং ওয়ান ডে। এখন তার সঙ্গে প্রচুর টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলতে হচ্ছে। যদি বিরাটের উপর অতিরিক্ত বোঝা তৈরি হয়ে যাচ্ছে মনে হয়, তা হলে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের জন্য অন্য কারও নাম ভাবা যেতে পারে।’’
সেই অন্য জন কে, তা-ও পরিষ্কার করে দিয়েছেন যুবরাজ। ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক যুবরাজ বলছেন, ‘‘রোহিত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে খুবই সফল। তবে টিম ম্যানেজমেন্টই ঠিক করে বলতে পারবে বিরাটের উপরে অতিরিক্ত বোঝা আদৌ তৈরি হচ্ছে কি না।’’ প্রসঙ্গত, যুবরাজ এখন আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে খেলেন। সেই দলের অধিনায়ক রোহিতই।
ভারতের বর্তমান দল পরিচালন সমিতির দিকে যুবির তোপ দাগা অবশ্য অব্যাহত। তাঁর দাবি, যথেষ্ট সমর্থন না পেয়েই জাতীয় দল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। ইয়ো ইয়ো টেস্টের অছিলায় তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগও তুলেছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট পাশে দাঁড়ালে আরও একটা বিশ্বকাপ খেলতে পারতেন বলেও মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, ‘‘আর একটা বিশ্বকাপ খেলতে না-পারার আক্ষেপ আছে। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষে কোনও সমর্থন পাইনি। তবে যতটুকু ক্রিকেট খেলেছি, তাতেই খুশি। নিজের যোগ্যতায় খেলেছি। আমার কোনও গডফাদার ছিল না।’’ বাদ পড়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘টিম ম্যানেজমেন্ট পরিষ্কার করে আমাকে কিছু জানায়নি, কী পরিকল্পনা ওদের। আমার মতো সহবাগ বা জাহিরের সঙ্গেও ওরা খোলাখুলি কথা বলেনি।’’ সহবাগ এবং জাহির বাদ পড়েন ধোনি অধিনায়ক থাকার সময়। সেই সময় কোচ ছিলেন ডানকান ফ্লেচার। ২০১৫ বিশ্বকাপে অবশ্য কোচ ফ্লেচারের সঙ্গে ডিরেক্টর হিসেবে রবি শাস্ত্রীও ছিলেন। ২০১৭-তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যুবরাজ খেলেন কোহালির নেতৃত্বে। চার ইনিংসে মোট রান করেন ১০৫। গড় ছিল ৩৫, স্ট্রাইক রেট ৯৯.০৫। একটিই হাফ সেঞ্চুরি। তাঁর এবং হার্দিক পাণ্ড্যর সর্বমোট রান সমান ছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে খেললে যুবরাজকে ৩৮ বছর বয়সি হিসেবে খেলতে হত। তাতেও বয়সের দিক থেকে তিনি হতেন দলের দ্বিতীয়। প্রথম থাকতেন ধোনি। তাঁর চেয়ে ছ’মাসের ছোট যুবরাজ।
বিশ্বকাপের ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বর জায়গা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য দল পরিচালন সমিতিকে এক হাত নিচ্ছেন ক্যানসারকে হারিয়ে মাঠে ফিরে আসা জনপ্রিয় তারকা। বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপে চার নম্বর ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৪৮। অধিনায়ক, কোচ, নির্বাচকদের জানা উচিত ছিল, কে তাদের যোগ্যতম চার নম্বর। ওই জায়গাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে, যেখানে বল নড়াচড়া করে। ওই জায়গায় যে ব্যাট করবে, তাকে টেকনিক্যালি শক্তিশালী হতে হবে।’’ আরও বলেন, ‘‘বিজয় শঙ্করের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। ঋষভ পন্থের অভিজ্ঞতা ছিল না। দীনেশ কার্তিকের ছিল কিন্তু ওকে বসিয়েই রাখা হয়েছিল। হঠাৎ ওকে সেমিফাইনালে নামিয়ে দেওয়া হল নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে।’’
যুবরাজের মতে, যে কোনও ক্রিকেটার দল থেকে এক প্রকার সুরক্ষা চায়। ঋষভ পন্থের অতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ভঙ্গি হালফিলে শিরোনামে উঠে এসেছে। হেড কোচ রবি শাস্ত্রী এবং সদ্য ব্যাটিং কোচ হয়ে আসা বিক্রম রাঠৌর মুখ খুলে বলেছেন, ঋষভকে সতর্ক থাকতে হবে। যুবরাজের মন্তব্য, ‘‘আমি জানি না বর্তমান টিম ম্যানেজমেন্ট কী করছে। যদি কারও কাছ থেকে সেরাটা বার করে আনতে হয়, তা হলে সবার প্রথমে তাকে বোঝাতে হবে, তুমি দলে সুরক্ষিত।’’ ঋষভকে নিয়ে চলা বিতর্কের প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘অবশ্যই ও সেরা শট খেলেনি। কিন্তু তার জন্য ওর উপরে চাপ তৈরি করলে হিতে বিপরীত হবে। কাউকে একটা ঋষভের ঘাড়ে হাত রেখে বোঝাতে হবে। আমাকে নিয়েও কথা হয়েছিল। কিন্তু অধিনায়ক সৌরভ সব সময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল।’’
নতুন ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌর মন্তব্য করেছেন, ভয়ডরহীন এবং সতর্ক থাকার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে পন্থকে। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি যুবি। বলেছেন, ‘‘ফিয়ারলেস অ্যান্ড কেয়ারলেস জাতীয় মন্তব্য উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করবে।’’ যদিও এমন মন্তব্যের মধ্যেই ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ঋষভের উপর তাঁরা কেউ আস্থা হারাননি। শুধুই ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলে দলকে সমস্যায় ফেলার প্রবণতা নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy