রিভাল্ডো। ছবি: এএফপি।
গত কাল ব্রাজিলের খেলা দেখতে দেখতে আমার ২০০২ বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। সেই ম্যাচটাও বেলজিয়ামের সঙ্গেই খেলেছিলাম। সেটাও খুব কঠিন একটা ম্যাচ ছিল। অবশ্য আমরাই জিতেছিলাম। সেই বেলজিয়ামেও দারুণ দারুণ সব ফুটবলার ছিল। কিন্তু নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়ররা কাজানে শুক্রবার জিততে পারল না। তাই দিনটা আমার মতো সব ব্রাজিলীয়র কাছেই খুব খারাপ।
এ বারের বেলজিয়ামে ব্যক্তিগত দক্ষতা খুব ভাল। সঙ্গে আলাদা করে প্রশংসা করতে হয় ওদের রণনীতির। জাতীয় দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই জানে এই ধরনের দলের বিরুদ্ধে খেলা কত কঠিন। আমি জানি তিতের কোচিং দলের সবাই বেলজিয়ামের ম্যাচের পরে সাংঘাতিক হতাশ। হতাশ হওয়ারই কথা। আমি ওদের সঙ্গে সমব্যথী। দেখা হলে ওদের বলব, সবার আগে এই ম্যাচটার স্মৃতি মন থেকে মুছে ফেলতে হবে। শান্তিতে বাড়ি ফিরে এসে তোমরা পরের বিশ্বকাপের কথা ভাবতে শুরু করো।
শুক্রবার কাজানের ম্যাচের রাতটা আমাদের সবার জন্য খুব কঠিন ছিল। কিন্তু ব্রাজিল জাতীয় দলের এক প্রাক্তন সদস্য হিসেবে আমি কাউকে দোষারোপের রাস্তায় হাঁটতে চাই না। কোচ বদলানোরও কোনও দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। তিতেই থাকুন। উনি যথেষ্ট ভাল কাজ করেছেন। ওঁকে সামনে রেখেই আমাদের আগামী দিনের পরিকল্পনাগুলো করতে হবে। তিতে যত না ভুল করেছেন তার চেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক বেশি। তা ছাড়া ওঁর যা যোগ্যতা, তার সমান মানের কাউকে আশেপাশে দেখাও যাচ্ছে না। আশা করি বিশ্বকাপে আমাদের অল্প দিনের অভিযান থেকে এই কোচ অনেক কিছু শিখেছেনও। আগামী দিনে এই অভিজ্ঞতাটারও আমাদের দরকার। আমার তো মনে হয়, এ বারের দলটাই পরের বিশ্বকাপে তাদের সেরা পারফরম্যান্সটা দেখাতে পারবে। তবে এখন থেকে আমাদের পরিকল্পনা নেওয়া শুরু করতে হবে।
এখন বিশ্বকাপটা দাঁড়াল ইউরোপের দলগুলোর। আগের বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্টই ছিটকে গিয়েছে। বিশ্বের সেরা তিন ফুটবলারকে আর দেখা যাবে না। আমাদের পক্ষে ব্রাজিলকে ছাড়া ফুটবলের কথা ভাবা অসম্ভব। কিন্তু এটাই বাস্তব। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে, এ বার কাপটা নিয়ে যাবে ফ্রান্সই। এখন পর্যন্ত ওরা যা খেলেছে, সেটা দেখেই এমন মনে হচ্ছে। অবশ্য যে কোনও দলই কোনও দিনে বড় ভুল কিকরলে ছবিটাই পাল্টে যেতে পারে।
ফুটবলের ঐতিহ্যর কথা ভাবলে ব্রাজিলের ছিটকে যাওয়াটা অবশ্যই স্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। একই সঙ্গে এটাও বলতে হবে, বেলজিয়ামও অসাধারণ খেলেছে। আমার বিচারে ওরা এ বারের অন্যতম সেরা দল। সব চেয়ে বড় কথা, ওদের রণনীতি থেকে ছক সব কিছুই প্রশংসার দাবি রাখে। কী ভাবে খেলতে হবে মাথায় রেখেই ওরা নেমেছিল। অসাধারণ ওদের দলগত দক্ষতা। শুরুতেই গোল করার সুবিধেটাও পেয়েছিল। তাও এমন একটা সময় যখন ব্রাজিল আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এটা মানতেই হবে যে এই ম্যাচটায় ফের্নান্দিনহো খুব খারাপ খেলেছে। যদিও প্রথম গোল ওর দোষে হয়নি। দুর্ঘটনাবশত বলটা ওর গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। কিন্তু গোলের পরে মাঝমাঠে অনেকটা জায়গা ওরা বেলজিয়ামকে ফাঁকা ছেড়ে দিয়েছিল। ফের্নান্দিনহোকে একা পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছিল কারণ পাওলিনহো জ্বলে উঠতে পারেনি। তা ছাড়া যে ছকে দলকে তিতে খেলিয়েছেন, তা বেলিজায়মের উপর দারুণ কিছু চাপ তৈরি করেনি। ব্রাজিলের আর একটা ব্যর্থতা, বেলজিয়ামের প্রতি-আক্রমণের সময় কৌশলগত ফাউল আদায় করতে না পারা। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য আমরা বেশি আক্রমণ করেছি। কিন্তু আমাদের প্রথম গোলটা এল খেলা শেষ হওয়ার মিনিট পনেরো আগে। তবে এ কথা বলবই যে ভাল খেলেই বেলজিয়াম জিতেছে। এমন নয়, আমরা ব্যর্থ হয়েছি বলেই বেলজিয়াম সেমিফাইনালে উঠে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy